Advertisement
০৫ মে ২০২৪

কড়ি ফেলুন, ঘরেই আসবে শব্দবাজি

ডালখোলা, ইসলামপুর, পাঞ্জিপাড়ার বাজারগুলিতে তো বটেই, তা ছাড়াও বহু রাস্তায় সার দিয়ে বাজির পাইকারি ও খুচরো দোকান বসেছে।

 উদ্ধার: করণদিঘিতে। নিজস্ব চিত্র

উদ্ধার: করণদিঘিতে। নিজস্ব চিত্র

মেহেদি হেদায়েতুল্লা
ডালখোলা শেষ আপডেট: ২৬ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:৩৭
Share: Save:

তখনও বাজার পুরোপুরি জমেনি। দোকানের সামনে সার দিয়ে আতসবাজি সাজাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। দোকান উপচে রাস্তাতেও পৌঁছে গিয়েছে ফুলঝুরি, তুবড়ি, রংমশাল। তবে শব্দবাজির দেখা নেই। সত্যিই কী নেই? দু’এক জন ব্যবসায়ী ‘না’ বললেও আর এক জন দিব্যি দোকানের ভিতরে নিয়ে গিয়ে হাতে তুলে দিলেন কালীপটকা, দোদমা। প্রশাসন যতই শব্দবাজি বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করুত, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মতো দিব্যি বিকোচ্ছে সে সব বাজি।

ডালখোলা, ইসলামপুর, পাঞ্জিপাড়ার বাজারগুলিতে তো বটেই, তা ছাড়াও বহু রাস্তায় সার দিয়ে বাজির পাইকারি ও খুচরো দোকান বসেছে। সাজানো রয়েছে ফুলঝুরি, চড়কি, রংমশাল, তুবড়ির মাঝে শব্দবাজির গন্ধ পর্যন্ত নেই। ঘুরিয়ে ফিরিয়ে শব্দবাজির কথা জিজ্ঞেস করলেও কিছু জানা যাচ্ছে না। তখন বলতেই হল, ‘‘দাদা, কালীপুজোর বিসর্জনে শব্দ না হলে মানায়?’’ তারপর একটু গলা নামিয়ে, ‘‘চকলেট, দোদমা কিছু নেই?’’

মাঝবয়সী ওই দোকানি মুচকি হেসে বললেন, ‘‘সবই আছে। একটু লুকিয়ে রাখতে হয়।” কিন্তু পুলিশ? পাশের একটি দোকানের ভিতর দু’তিন জন যুবক বসেছিলেন। তাঁরা বললেন, ‘‘পুলিশ ডালে ডালে গেলে আমাদেরও পাতায় পাতায় যেতে হয়। থলির নীচের দিকে বাজি থাকে, আর উপরের কালীপুজোর উপকরণ। জানেনই তো পুলিশ কালী-ভক্ত। ওই ব্যাগ আর তল্লাশি করবে না।’’ তার পরেই বলেন, ‘‘হোম ডেলিভারিও আছে। মোটরবাইকে করে শহর তো বটেই, পাঠানো হচ্ছে আশপাশের গ্রামেও।’’

কেন ‘হোম ডেলিভারি’? দোকানিদের কেউ কেউ বলেন, ‘‘দোকান থেকে বাজি কিনে বাড়ি ফেরার সময়ে পুলিশের চোখে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে। তার চেয়ে একটা ফোন করে বলে দিলে আমরা বাড়িতেই শব্দবাজি পৌঁছে দেব। হ্যাপা থাকবে না কিছু।’’ তিনি জানান, ‘‘দু’হাটার টাকার বাজি কিনলে শহরের বাইরেও হোম ডেলিভারি দিই। এমনকি ক্যাশ অন ডেলিভারি ব্যবস্থাও আছে। বাজি পৌঁছে দেওয়ার জন্য যাতায়াতের খরচ ধরে বিল করি আমরা।’’

দাম কত? একটি অল্প বয়সী ছেলে এগিয়ে এসে বলল, ‘‘৩০, ৫০, ৭৫ টাকার মধ্যে চকলেট বোমার কোন প্যাকেটটা নেবেন? দোদমা রয়েছে ৬০ ও ৮০ টাকার। দাম যত বাড়বে, আওয়াজও তত বাড়বে।’’

পুলিশ অবশ্য বাজি ধরতে ময়দানে এখনও সে ভাবে নামেনি। যদিও জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কার্তিকচন্দ্র মণ্ডল জানিয়েছেন, কালীপুজোর মুখে অভিযান আরও কড়া হবে। কিন্তু সেই হুঁশিয়ারিতে বিক্রেতারা খুব যে ভয় পেয়ে গিয়েছেন, তা তাঁদের কথাবার্তায় কোনও সময়ই মনে হচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Kali Puja 2019 Fire Crackers Sound Pollution
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE