Advertisement
E-Paper

গরু পাচারের অভিযোগে উত্তাল ধূপগুড়ি

গরু পাচারের অভিযোগে জনতার ক্ষোভে উত্তাল হল ধূপগুড়ি। গরু পাচার হচ্ছে সন্দেহে একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা। ভাঙচুর করা হয় একটি বেসরকারি বাসও। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটে ধূপগুড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ঝুমুর এলাকার ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তিও হয়েছে। দফায় দফায় পথ অবরোধও হয়েছে এলাকায়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৫ ০১:৫৪
জাতীয় সড়কে পুড়ছে গাড়ি। ছবি: রাজকুমার মোদক।

জাতীয় সড়কে পুড়ছে গাড়ি। ছবি: রাজকুমার মোদক।

গরু পাচারের অভিযোগে জনতার ক্ষোভে উত্তাল হল ধূপগুড়ি। গরু পাচার হচ্ছে সন্দেহে একটি গাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয় জনতা। ভাঙচুর করা হয় একটি বেসরকারি বাসও। বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটে ধূপগুড়ি থেকে তিন কিলোমিটার দূরে ঝুমুর এলাকার ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের ধস্তাধস্তিও হয়েছে। দফায় দফায় পথ অবরোধও হয়েছে এলাকায়।

বুধবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ ধূপগুড়ির ঝুমুরের কাছে একটি পেট্টোল পাম্পে তেল নিতে ঢোকে একটি পিকআপ ভ্যান। ভ্যানে আটটি গরু ছিল বলে অভিযোগ। তার মধ্যে দু’টি গরুকে মৃত অবস্থায় দেখে পাম্পের কর্মীরা পিকআপ ভ্যান চালকদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। বেগতিক দেখে পালিয়ে যায় ভ্যানের চালক এবং খালাসি। চোরাই গরু সহ গাড়ি ধরা পড়েছে এই খবর রটে যেতেই ভিড় জমায় মানুষ। পুলিশকেও খবর দেওয়া হয়। প্রায় দেড় ঘন্টা পরেও পুলিশ না আসায় পাম্প থেকে গাড়িটিকে জাতীয় সড়কে নিয়ে আসেন বাসিন্দারা। গরুগুলিকে নামিয়ে শুরু হয় ভাঙচুর। গাড়ি উল্টে দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। পাম্পের ম্যানেজার গৌতম ঘোষ বলেন, “আমি সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ পুলিশকে খবর দিই। সময় মত পুলিশ এলে গাড়িটাকে হয়তো বাঁচানো যেত।”

প্রায় দু’ঘন্টা পরে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। ততক্ষণে গাড়িটির বেশির ভাগ অংশ পুড়ে গিয়েছে। আগুন নেভার পর পুলিশ অপরাধীর খোঁজ শুরু করে। ঘটনাস্থল থেকে দু’শো মিটার দূরে ঝুমুর বাস স্ট্যান্ডে বিভিন্ন দোকানে ঢুকে পুলিশ জোর করে দোকান বন্ধ দিতে থাকে বলে অভিযোগ। এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকার বাসিন্দারা ক্ষুব্ধ হয়ে পুলিশের উপর পাথর ছুড়তে শুরু করে বলে অভিযোগ। কয়েক’শো মানুষকে সামলাতে না পেরে ঢাল-তলোয়ারহীন পুলিশরা দৌড়ে পালাতে থাকে। পাথর ছোড়া বন্ধ না হওয়ায় মরিয়া হয়ে পুলিশও জনতার দিকে ঢিল ছুড়তে থাকে। প্রায় আধ ঘন্টা ধরে এই অবস্থা চলে। উন্মত্ত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ শূন্যে গুলি ছুড়তে শুরু করে। গুলির ভয়ে জনতা পিছু হঠতে বাধ্য হয়। জনতার ছোড়া ঢিলে এক এএসআইয়ের মাথা ফেটে যায়। তাছাড়াও আর তিন পুলিশকর্মী অল্প বিস্তর জখম হন।

ধূপগুড়ির দক্ষিণ আলতাগ্রামের ঝুমুর এলাকার ইলিয়াস হোসেন , রাজু দাস ও তকিবর রহমানের অভিযোগ, “গত একবছর ধরে এলাকার ৩৫ টির মত গরু চুরি হয়েছে। পুলিশকে বলেও কোনও লাভ হয়নি। ধূপগুড়ির স্টেশন এলাকার তারা পাসোয়ানের বাড়ি থেকে সাত দিন আগেই একটি গর্ভবতী গাই চুরি হয় । শুধু তারাদেবী নয় ঝুমুর এলাকার সুশীল সেন বলেন , “এক মাসও হয়নি আমার বাড়ি থেকে দু’টি গরু চুরি হয়েছে। পুলিশকে বলেও গরুর কোনও হদিস পাইনি ।”

এলাকার বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, বছরের পর বছর ছোট ট্রাকে যেখানে তিনটির বেশি গরু নেওয়ার জায়গা নেই সেখানে আটটি গরু এবং বড় ট্রাকে যেখানে ছ’সাতটি বেশি গরু নেওয়ার জায়গা নেই, সেখানে বিশটি করে গরু নিয়মিত নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।’’ তাঁরা জানান, প্রাণী সম্পদ বিকাশ ও মোটর ভেহিক্যাল বলে দু’টি সরকারি দফতর রয়েছে কিন্তু এইভাবে গরু নিয়ে যাওয়া হলেও ওই দফতর গুলির কোন কর্মীকে আজ পর্যন্ত গরুর গাড়ি আটক করে কোনও ব্যবস্থা নিতে দেখা যায়নি।

জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার আকাশ মেঘারিয়া বলেন, “উত্তেজিত জনতাকে ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ শূন্যে দু’রাউন্ড গুলি ও দু’রাউন্ড কাঁদানে গ্যাস ফাটিয়েছে। কেনই বা জনতা পুলিশের বিরুদ্ধে এতটা ক্ষুব্ধ তা দেখছি।”

dhupguri dhupguri unrest dhupguri violence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy