Advertisement
E-Paper

সংস্কৃতি যেখানে যেমন

‘‘আমরা দু’জন—মধুমিতা শাঁওলি/মেনে নিলে খুশি হব এই খামখেয়ালি’’। ‘খামখেয়ালি’পনা থেকে ১ বৈশাখ মধুমিতা-শাঁওলি পাঠকদের উপহার দিলেন তাঁদের সম্পাদিত হাতে লেখা ছড়ার সংকলন, ‘ম তে মন খুলে, হ তে হাসব’। সুশান্ত কুমার সেনের হস্তাক্ষর এবং সৌগত বিশ্বাসের চিত্রায়নের সঙ্গে সংকলনের পাতায় পাতায় ‘পাজির পাঝাড়া ভুলো কুকুরের/ছিল সে দিন জন্মদিন/সকাল থেকে ব্যস্ত তাই/রুপাই সোনাই বাবিন।’’

শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:১৫

‘হ’তে হাসব

‘‘আমরা দু’জন—মধুমিতা শাঁওলি/মেনে নিলে খুশি হব এই খামখেয়ালি’’। ‘খামখেয়ালি’পনা থেকে ১ বৈশাখ মধুমিতা-শাঁওলি পাঠকদের উপহার দিলেন তাঁদের সম্পাদিত হাতে লেখা ছড়ার সংকলন, ‘ম তে মন খুলে, হ তে হাসব’। সুশান্ত কুমার সেনের হস্তাক্ষর এবং সৌগত বিশ্বাসের চিত্রায়নের সঙ্গে সংকলনের পাতায় পাতায় ‘পাজির পাঝাড়া ভুলো কুকুরের/ছিল সে দিন জন্মদিন/সকাল থেকে ব্যস্ত তাই/রুপাই সোনাই বাবিন।’’ অথবা ‘‘হাসিখুশি কাকার মনে চিন্তা শুধুই একটি/আর কোনও দিন চকচকে টাকে চুল গজাবে কি?’’ বা ‘‘আজব দেশের, আজব ধারা/গুণিরা খায় বেগুন পোড়া’’—এমনই সব মজাদার ছড়া। ছোটদের তো বটেই, মধুমিতা-শাঁওলির ঝকঝকে সম্পাদনা মুগ্ধ করতে পারে বড়দেরও। কোচবিহার-হলদিবাড়ির ‘শান্তিনগর ইউনিক ক্লাবের’ বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে সংকলনটির প্রকাশ করলেন বাসুদেব বিশ্বাস, মৃণালকান্তি সরকার এবং সন্তোষ কর্মকার।

সংস্কৃতির আলোচনাসভা

জলপাইগুড়ির পানবাড়ি সৌদামিনী শিশু নিকেতন ও সেন্টার ফর ফোকলোর স্টাডিজ অ্যান্ড রিসার্চ, কৃষ্ণপুর ও কলকাতার যৌথ উদ্যোগে একদিনের জাতীয় আলোচনাচক্র অনুষ্ঠিত হল। শিরোনাম ‘ জলপাইগুড়ি জেলার অভিকরণ শিল্পের ইতিহাস ও বর্তমান পরিপ্রেক্ষিত’। মুখ্য বক্তা ড. কাকলী ধারা মণ্ডল লোকসংস্কৃতির সঙ্গে মানব সমাজের সম্পর্ক, তার প্রয়োজনীয়তা, অভিকরণ শিল্পের বৈশিষ্ট্য, উত্তরবঙ্গে এই শিল্পের অবস্থা প্রভৃতি বিষয় তুলে ধরেন। লুপ্তপ্রায় লোকগীতি ‘চোর-চুন্নি’ বিষয়ে আলোচনা করেন লোকসংস্কৃতি গবেষক দিনেশ রায়। ভাওয়াইয়া গানের উপর বক্তব্য রাখেন প্রখ্যাত ভাওয়াইয়া শিল্পী দীপ্তি রায়। প্রীতিলতা রায়ের বক্তব্যের বিষয় ছিল লোকক্রীড়া। বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় অংশ নেন প্রজ্ঞা সেনগুপ্ত, পবিত্র রায়, ড. বিকাশ রায়, সঞ্চয়িতা রায়, রতন চন্দ্র রায় প্রমুখ। অভিকরণ শিল্প বা পারফর্মিং আর্টস-এর পরিবেশনা ছিল আলোচনার অন্যতম আকর্ষণ। প্রখ্যাত সারিঙ্গা বাদক মঙ্গলা রায় সারিঙ্গাতে হরবোলা ও ভাওয়াইয়া সঙ্গীতের সুর বাজিয়ে শোনান। উত্তরের নিজস্ব সম্পদ মেচেমী নৃত্যের সুন্দর উপস্থাপনা করেন তুলোবালা রায় ও সম্প্রদায়। দীপ্তি রায় ও সম্প্রদায়ের লোকনৃত্য দোতনা গঙ্গা ও পালাটিয়া ছিল স্বকীয় বৈশিষ্ট্যে উজ্জ্বল। কণ্ঠে ভাওয়াইয়ার সুর ছড়িয়ে দেন সন্তোষ কুমার বর্মন। সঙ্গীত পরিবেশন করেন মৌসুমী সরকার ও গৌরী পণ্ডিত। আলোচনা আসরে উপস্থিত দর্শক, শ্রোতা চাক্ষুষ করলেন লক্ষ্মণ রায় ও সম্প্রদায়ের নিবেদিত লুপ্তপ্রায় লোকগীতি (যাতে রয়েছে লোকনাট্যের আভাস)‘ চোর-চুন্নি’। উপস্থিত ছিলেন জিতেশ চন্দ্র রায়, চৈতন্য সেন, নরেশ চন্দ্র রায় প্রমুখ বিশিষ্ট জন।

হারিয়ে যাওয়া লোকক্রীড়ার খোঁজ

লোকক্রীড়া লোকসংস্কৃতির একটি অধ্যায়। তবে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে লোকক্রীড়া ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছে। তাঁর ‘প্রসঙ্গ লোকক্রীড়া’ গ্রন্থে বিকাশ পাল তুলে এনেছেন এ রকমই হারিয়ে যাওয়া ২০১টি লোকক্রীড়া। ‘লোকক্রীড়ার সংজ্ঞা ও পরিধি’, ‘শ্রেণিবিভক্তিকরণ’, ‘পদ্ধতি ও পরিভাষা’, ‘ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ’ এবং ‘সাহিত্যে লোকক্রীড়া’-সহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোকপাত করেছেন লেখক। রয়েছে লোকক্রীড়ার বিভিন্ন ছবি এবং ছক, খেলার বিবরণ আর ছড়া। প্রচলিত ছড়াগুলির আ়ঞ্চলিক রূপেরও হদিস মিলবে এই গ্রন্থে। শব্দপ্রয়োগ এবং বাক্যবিন্যাস কখনও পাঠ-প্রতিকূলতা সৃষ্টি করে না। লোকক্রীড়ার সন্ধান দেবার পাশাপাশি লেখক উপহার দেন নস্টালজিয়াও। সেই নস্টালজিয়া শোনায়— ‘‘উপেনটি বায়োস্কোপ/নাইন-টেন টাইস্কোপ’’, ‘‘ঘুঘু সই/খোকা কই’’, অথবা ‘‘ইকির মিকির চাম চিকির/চাম কাটে মজুমদার’’— এমন সব ঝাপসা ছড়া। তথ্য এবং উপস্থাপনা গ্রন্থটিকে ব্যক্তিগত সংগ্রহে রাখার দাবি জানায়। লেখা ও ছবি : সুদীপ দত্ত।

শম্ভু মিত্র স্মরণ মালদহের কলেজে

শম্ভু মিত্রের জন্ম শতবর্ষ উপলক্ষ্যে মালদহ উইমেনস কলেজের বাংলা বিভাগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল এক আলোচনা সভা। বিষয় ‘জন্ম শতবর্ষ : স্মরণে ও মননে শম্ভু মিত্র’’। মুখ্য বক্তা ছিলেন অধ্যাপক ও নাট্য সমালোচক দর্শন চৌধুরী। তাঁর বক্তব্যে প্রসেনিয়াম থিয়েটারের ক্ষেত্রে শম্ভু মিত্র ও তাঁর নাটকের দল বহুরূপীর অবদানের কথা তুলে ধরেন তিনি। তিনি বলেন, ‘‘রবীন্দ্রনাথের নাটককে কী ভাবে মঞ্চ সফল করা যায় তা দেখিয়ে ছিলেন শম্ভু মিত্র।’’ তাঁর কথায় উঠে আসে অভিনেতা পরিচালক শম্ভু মিত্রের ব্যক্তিগত জীবন, তাঁর শৃঙ্খলাপরায়ণতার হরেক তথ্যও। অধ্যাপক বিকাশ রায়ের কাছ থেকে শোনা যায় ‘রক্তকরবী’, ‘চার অধ্যায়’, ‘ডাকঘর’ প্রযোজনার নানা কথা। কী ভাবে কাঁর কাছে নাটক শিখেছেন শম্ভু মিত্র, কী ভাবেই বা নিজেকে নিয়ে গিয়েছেন সেই উচ্চতায়, সেই সলতে পাকানোর কথা তুলে ধরেছেন মনোজ কুমার ভোজ। কলেজের অধ্যক্ষা চৈতালি চট্টরাজ বলেন, ‘‘দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই এই কিংবদন্তী নাট্য ব্যক্তিত্বের জন্ম শতবর্ষ পালনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।’’ বক্তারা মনে করিয়ে দেন, এখনও বাংলা নাটকের ক্ষেত্রে শম্ভু মিত্র দিশারীর ভূমিকা পালন করেন।

জীববৈচিত্র নিয়ে শিবির

সম্প্রতি বালুরঘাটে দিশারী সংকল্প-এর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হল জীব বৈচিত্র পর্যবেক্ষণ শিবির। শিবিরটির আয়োজক পশ্চিমবঙ্গ জীব বৈচিত্র পর্ষদ। পর্যবেক্ষণ শিবিরটির উদ্বোধন করেন রাজ্য জীব বৈচিত্র পর্ষদের চেয়ারম্যান অশোক কুমার সান্যাল। কখনও সেমিনার হলের ভিতরে, কখনও বাইরে এসে বেরিয়ে বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় শিক্ষার্থীরা পাখি, প্রজাপতি, মাছ, সরীসৃপ এবং স্তন্যপায়ী প্রাণী পর্যবেক্ষণে অংশ নেন । দোগাছি বনা়ঞ্চলে এবং রঘুনাথপুর ফরেস্টে সতর্ক দৃষ্টিতে ধরা পড়ল নীলপাখি, দুধরাজ, কুবোর মতো পাখি। কখনওবা তারা চিনতে শিখল মর্মন বা প্লেন টাইগার নামক প্রজাপতি, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী এই শিবিরে অংশ নেন। প্রকৃতির মাঝে যাঁরা হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দিলেন এবং পাঠ-দান করলেন তাঁরা হলেন বিশ্বজিৎ গোস্বামী, সুমন ঘোষ, সর্পবিদ মিন্টু চৌধুরী, রুদ্রপ্রসাদ দাস, ডঃ সুজিত অধিকারী ও রীনা অধিকারী। উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে তুহিনশুভ্র মণ্ডল জানান, উত্তরবঙ্গের জন্য জীব বৈচিত্র নথি তৈরি করার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে। দু’দিনের এই পর্যবেক্ষণ শিবিরে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল বালুরঘাট কলেজের ইকো ক্লাব। লেখা ও ছবি : অনিতা দত্ত

Different cultural programmes north bengal cultural programmes balurghat dishari malda womens college north bengal laughing club north bengal little mags
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy