মাথা গোঁজার ঠাঁইটা একটু পাকাপোক্ত করতে চেয়েছিলেন বাবা-মা। তাই বেসরকারি একটি ব্যাঙ্ক থেকে কিছু টাকা ঋণ করতে হয়েছিল তাঁদের। সেই টাকায় ঘরের সবটা পাকাপোক্ত হয়নি ঠিকই, কিন্তু চারদিকটা কংক্রিটের আধা দেওয়ালে মুড়ে ফেলা গিয়েছিল। তার মাঝে থেকেই অনেক আশা নিয়ে বুক বাঁধছিলেন দম্পতি। সংসার টানতে বড় ছেলেকে কাজে নামতে হলেও, হাইস্কুলে পড়া ছোট ছেলেকে নিয়ে দু’জনেরই ছিল একরাশ স্বপ্ন।
কিন্তু করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে সেই স্বপ্নও চুরমার হওয়ার জোগাড়।
বাড়ির ছোট ছেলে মুকেশ খাড়িয়া মাদারিহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়া। গত বছর লকডাউনে স্কুলের অনলাইনে ক্লাসে পড়াশোনা শুরু হয়েছিল। টানাটানির সংসারেও ছেলেকে স্মার্ট ফোন কিনে দিয়েছিলেন বাবা-মা। সেই ফোনটি আজও মুকেশের কাছে থাকে। শিক্ষকদের ‘ডাকে’ মাঝেমধ্যেই বেজে ওঠে সেটি। কিন্তু সেই ফোন ধরার সুযোগ কমে গিয়েছে মুকেশের। কারণ, সে এখন বাড়ির কাছে বাগানে নতুন চা গাছ রোপনে ব্যস্ত। মুকেশের কথায়, “বাবা এখনও রোজ কাজে বের হন। দাদাও কাজ করতে যায়। তার পরেও করোনা আবহে সবটাই যেন এলোমেলো হয়ে গিয়েছে। আগের মতো আয় নেই। ব্যাঙ্ক ঋণ মেটানোও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই আমাকেও চা বাগানে কাজ নিতে হয়েছে।’’ তবে মুকেশ এখনও পড়াশোনা ছাড়েনি। তার কথায়, ‘‘শুধু অনলাইন ক্লাসে সমস্যা হয়। তখন তো বাগানের কাজ থাকে।”