Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সব গোষ্ঠীর নেতা নিয়ে জেলা কমিটি শুভেন্দুর

মালদহের একাধিক কর্মিসভায় তৃণমূলের সমস্ত গোষ্ঠীর নেতাকে এক সঙ্গে চলার বার্তা দিয়েছেন দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারি। এ বার সমস্ত গোষ্ঠীর থেকে নেতাদের নিয়ে জেলা কমিটি গঠন করলেন তিনি। আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়াতে সমন্বয় রেখে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০১৫ ০২:২৩
Share: Save:

মালদহের একাধিক কর্মিসভায় তৃণমূলের সমস্ত গোষ্ঠীর নেতাকে এক সঙ্গে চলার বার্তা দিয়েছেন দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারি। এ বার সমস্ত গোষ্ঠীর থেকে নেতাদের নিয়ে জেলা কমিটি গঠন করলেন তিনি। আগামী বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়াতে সমন্বয় রেখে কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে মত রাজনৈতিক মহলে। আর কমিটিতে এক ঝাঁক সহ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং সম্পাদক রাখা হয়েছে। শনিবার রাতে ফরাক্কার গঙ্গা ভবনে জেলার সমস্ত নেতা নেত্রীদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন দলের জেলা পর্যবেক্ষক শুভেন্দু অধিকারী।

পর্যবেক্ষকরা ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী, জেলা সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন সহ সমস্ত জেলা ও ব্লক নেতৃত্বেরা। দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রাত নটা থেকে রাত্রি ১১টা পর্যন্ত প্রায় দুই ঘন্টা ধরে বৈঠক চলে। কমিটিতে সমস্ত গোষ্ঠীর নেতারাই নিজেদের ঘনিষ্ঠদের নাম রাখার আবেদন করেন। তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে হই হট্টোগোলও শুরু হয়ে যায়। পরে সমস্ত গোষ্ঠীর থেকে নেতাদের নিয়ে গঠিত হয় তৃণমূলের জেলা কমিটি। এই বিষয়ে দলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারি বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটকে মাথায় রেখে সকলকে নিয়েই কমিটি গঠন করা হয়েছে। এখানে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কোনও বিষয় নেই। জেলাতে দল শক্তিশালী হচ্ছে। পুরসভা ভোটের মতো এই ভাবে লড়াই করে বিধানসভাতেও জেলাতে ভালো ফল করবে দল।’’

জেলাতে যত তৃণমূল শক্তিশালী হয়ে উঠেছে তত গোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়ছে বলে অনুমান দলের একাংশের। বর্তমানে জেলাতে তৃণমূলের পাঁচটি গোষ্ঠী রয়েছে। প্রথমদিকে তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি দুলাল সরকার এবং মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্রের পৃথক গোষ্ঠী ছিল। মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর আরও একটি গোষ্ঠী তৈরি হয়। পরে জেলা সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ার পর মোয়াজ্জেম হোসেনের একটি গোষ্ঠী। সম্প্রতি কোতুয়ালি পরিবারের সদস্য তথা বিধায়ক আবু নাসের খান চৌধুরী কংগ্রেস থেকে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার জেলাতে আরও একটি গোষ্ঠীর সংখ্যা বেড়েছে বলে মত দলের একাংশের।

জেলা নেতৃত্বেরা পৃথক গোষ্ঠী হওয়ায় এর প্রভাব পড়েছে ব্লক নেতৃত্বের উপরেও। ব্লকে একাধিক গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে তৃণমূলে। যার প্রভাব বিভিন্ন নির্বাচনে পড়েছে। দলের গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন রাজ্য নেতৃত্বও। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মালদহ সফরে এসে সকল গোষ্ঠীর নেতাদের নাম ধরে ধরে এক সঙ্গে কাজ করার বার্তা দিয়েছিলেন। তাতেও কাজ না হওয়ায় গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব সামাল দিতে জেলা পর্যবেক্ষক করা হয়েছিল সাংসদ শুভেন্দু অধিকারিকে। তিনি মালদহে একাধিক কর্মীসভায় সকলকে একসঙ্গে চলার বার্তা দিয়েছেন বহুবার। বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি জেলা কমিটিতেও সমস্ত গোষ্ঠীরই নেতা নেত্রীদের রাখা হয়েছে। এবার জেলা কমিটিতে রাখা হয়েছে ৫৮ জন নেতা নেত্রীকে। দলীয় সূ্ত্রে জানা গিয়েছে, সাধারণ সম্পাদক নয় জন, সম্পাদক ১০ জন এবং সহ সভাপতি রয়েছে ১১ জন। এ ছাড়া এক্সিকিউটিভ বোর্ডের অফিস সদস্য রয়েছে রাজ্যের দুই মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী এবং সাবিত্রী মিত্র সহ চারজন। আর দলের সমস্ত শাখা সংগঠন ছাত্র, যুব, মহিলা, শিক্ষা সেল, লিগাল সেল এবং কিষান সেলের নেতা নেত্রীদের এক্সিকিউটিভ বোর্ডের সদস্য করা হয়েছে। দলীয় সূত্রে এ-ও জানা গিয়েছে, এদিনের বৈঠকে সমস্ত গোষ্ঠীর নেতা নেত্রীরাই কমিটিতে নিজেদের ঘনিষ্ঠদের রাখতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন। পর্যবেক্ষকের সামনে বচসাও শুরু হয়ে গিয়েছিল। বচসার জেরে জেলা কমিটি গঠন করতে সময় লেগে যায়। যার জন্য বিধানসভা ভিত্তিক পর্যবেক্ষক করা হয়নি। এই বিষয়ে শুভেন্দুবাবু বলেন, ‘‘খুব শ্রীঘই বিধানসভা ভিত্তিক পর্যবেক্ষক করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE