Advertisement
E-Paper

বাচ্চা চুরি নিয়ে ‘নাটক’ এনজেপি স্টেশনে

স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে এক বছরের বাচ্চাকে নিয়ে আত্মীয়-বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল বাবা। স্টেশনে বাচ্চাটি কান্নাকাটি করায় বাবাকেই শিশু পাচারকারী সন্দেহে আটক করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৮ ০৩:৫২

স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্যের জেরে এক বছরের বাচ্চাকে নিয়ে আত্মীয়-বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিল বাবা। স্টেশনে বাচ্চাটি কান্নাকাটি করায় বাবাকেই শিশু পাচারকারী সন্দেহে আটক করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তার জেরে দিনভর চলল নাটক। যার জেরে বাচ্চার বাবা-মাকে আটকও করে এনজেপি থানার পুলিশ। পরে অবশ্য তাঁদের জেরা করে ছেড়ে দেওয়া হয়।

পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিল্লির বাসিন্দা কিষাণ ভট্ট তাঁর স্ত্রী মঞ্জুকে নিয়ে শিলিগুড়ির গুরুং বস্তিতে বোনের বাড়ি এসেছিলেন। স্থানীয় একটি পুজোয় ঢাক বাজানোর কাজও করেছিলেন পেশায় শ্রমিক কিষাণ। রবিবার তাঁদের দিল্লি ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। শনিবার রাতে স্ত্রীর সঙ্গে ঝগড়া করে বাচ্চাকে কোলে নিয়ে সকালেই এনজেপি স্টেশনে চলে আসেন কিষাণ। স্টেশন চত্বরে বসে মদ খান তিনি। ইতিমধ্যে বাচ্চাটি মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য কান্নাকাটি জুড়ে দেয়। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, কিষাণ নেশার ঘোরে আশেপাশের লোকজনকে বাচ্চা বিক্রি করে দেওয়ার কথা বলে। তা শুনেই তাঁকে শিশু পাচারকারী সন্দেহে আশপাশের লোকজন ঘিরে ধরে। স্থানীয় অটোচালকেরাও তাঁকে ঘিরে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করতে থাকে। অটোচালক সঞ্জিত দাস বলেন, ‘‘বাচ্চাটা খুবই কাঁদছিল, লোকটার কাছে থাকতে চাইছিল না। দেখেশুনে আমাদের মনে হয়, লোকটা বাচ্চা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে হয় তো!’’

আগুনে ঘি পড়ে একটু পরেই। কিষাণের খোঁজ করতে সেখানে দু’বছরের আরও একটি বাচ্চা নিয়ে হাজির হন কিষাণের স্ত্রী মঞ্জু এবং ভগ্নীপতি রাজু। বাচ্চা নিয়ে চলে আসার জন্য কিষাণের উপর রাগারাগি শুরু করেন রাজু। স্থানীয়দের দাবি, রাজু কিষাণের দিকে চিৎকার করে বলছিল, ‘‘বাচ্চার জন্ম দেওয়ার পর বাচ্চা বিক্রি করতে এসেছিস? তুই আগেও তাই করেছিস।’’ তারপর তাঁদের মধ্যে বাচ্চাটিকে নিয়ে টানাটানি শুরু হয়। টানাহ্যাঁচড়া করতে গিয়ে পড়ে গিয়ে মাথায় খানিকটা চোটও পায় বাচ্চাটি। এদিকে, ওই নাটককে কেন্দ্র করে লোকজনের ভিড়ও বেড়ে যায়। সন্দেহ আরও বেড়ে যায় সকলের। তারপরেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পুলিশে খবর যেতেই শিশুচোর ধরা পড়েছে বলে চারদিকে জল্পনা রটে যায়।

দার্জিলিং জেলা আইনি সহায়তা কেন্দ্রের আহ্বায়ক অমিত সরকার বলেন, ‘‘কিষাণ আগে সত্যিই বাচ্চা বিক্রি করেছে কিনা তা পুলিশকে ভাল করে তদন্ত করে দেখতে হবে। প্রয়োজনে আমরা তা নিয়ে পুলিশকর্তাদের সঙ্গে কথা বলব।’’ এনজেপি থানা থেকে ওই দম্পতিকে তুলে নিয়ে গিয়ে দীর্ঘক্ষণ জেরা করা হয়। ওই দম্পতির দাবি, তাঁদের আগে একটি ছেলে মারা গিয়েছে। এখন তাদের তিনটি ছেলে। একটিকে দিল্লিতে মঞ্জুর বাপের বাড়ি রেখে দুই ছেলেকে নিয়ে শিলিগুড়ি এসেছিলেন তাঁরা। জিজ্ঞাসাবাদের পর বাচ্চা দু’টির অভিভাবক সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে তাঁদের ছেড়ে দেয় পুলিশ।

NJP station Drama Child Kidnapping
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy