Advertisement
E-Paper

জেলে অবাধে ঢুকছে টাকা মাদক মোবাইল

জলপাইগুড়ির কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে অবাধে মোবাইল ফোন ও গাঁজার পুরিয়া ঢুকছে বলে অভিযোগ। একশ্রেণির জেল কর্মীর মদতেই এই কারবার রমরমিয়ে চলছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। একইভাবে বন্দিদের কাছে অবাধে পৌঁছে যাচ্ছে টাকা। ফরমায়েসমাফিক জিনিসও এনে দেওয়া হচ্ছে বন্দিদের ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৫ ০১:৩৭

জলপাইগুড়ির কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে অবাধে মোবাইল ফোন ও গাঁজার পুরিয়া ঢুকছে বলে অভিযোগ। একশ্রেণির জেল কর্মীর মদতেই এই কারবার রমরমিয়ে চলছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। একইভাবে বন্দিদের কাছে অবাধে পৌঁছে যাচ্ছে টাকা। ফরমায়েসমাফিক জিনিসও এনে দেওয়া হচ্ছে বন্দিদের । যদিও কারা দফতরের অতিরিক্ত ইন্সপেক্টর জেনারেল কল্যাণ কুমার প্রামাণিক বলেন, “সংশোধনাগারের মধ্যে যাতে বেআইনি জিনিসপত্র ঢুকতে না পারে তার জন্য চেষ্টা করছি।” কিন্তু একজন সুপার, একজন জেলার, একজন ডিসিপ্লিনারি অফিসার এবং দুজন ডেপুটি জেলার নিয়ে সেই চেষ্টা কতদূর সম্ভব তা নিয়ে তিনি নিজেই সন্দিহান।

জেল সূত্রের খবর, মোবাইল ফোন তো দূরের কথা, কোনও জিনিস, এমনকি কোন জেলকর্মী নিজের ব্যক্তিগত টাকা পয়সা নিয়েও সংশোধনাগারে ঢুকতে পারবেন না। এটাই নিয়ম। জেলের চাকরি পাওয়ার পর তিহার জেলে ট্রেনিং নিতে গিয়েছিলেন একজন আধিকারিক। তিনি জানান সেখানে সবসময় জেলের গেটে একটা নির্দিষ্ট বাক্সে সমস্ত ব্যাক্তিগত জিনিস জমা দিয়ে ঢুকতে হয়। তারপর মেটাল ডিটেক্টর দিয়ে পরীক্ষার পর সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ঢুকতে দেওয়ার নিয়ম। সমস্ত কর্মীদের একই প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।

জেল সূত্রের খবর, জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে মেটাল ডিটেক্টর, স্ক্যানার মেশিন গত একবছর হল খারাপ হয়ে আছে। কবে ঠিক হবে কেউ জানেনা। আর তার সুযোগ নেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। বঙ্গীয় কারারক্ষী সমিতির রাজ্য সম্পাদক লিপন কর বলেন, “শুধু কর্মীরা কেন, আধিকারিকেরাও অবাধে নিজেদের জিনিসপত্র নিয়ে ঢোকেন। বেআইনি জিনিসপত্র নিয়ে জেলে ঢোকা আটকাতে বিমানবন্দরের মত ব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন। সেখানে যন্ত্র দিয়ে সবকিছু হয়। এখানেও সেই ব্যবস্থা চালু করা দরকার।”

জেল সুত্রে জানা যায়, গত ১২ জুন রাত ১২টার সময় জলপাইগুড়ি কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের সেলে হাসান লস্কর নামে একজন বন্দি তার সেলের মধ্যে থেকে মোবাইল ফোনে কথা বলছিল। জেলের ডিসিপ্লিনারি অফিদার অনিমেশ সিংহ সেখানে আচমকা হাজির হন। তৎক্ষণাৎ তিনি জেলার রাজীব রঞ্জনকে ডেকে আনেন। তন্নতন্ন করে খুঁজেও মোবাইল ফোনটি পাওয়া যায়নি। কারণ হাসান লস্কর শৌচাগারের প্যানে মোবাইল ফোনটি ফেলে দিয়ে তাতে দুই বালতি জল ঢেলে দেয়। সংশোধনাগারে সেদিন আটটি সেলের জন্য দুজন কর্মী পাহারায় ছিল।

জেল সুত্রে জানা যায়, গতবছর আধিকারিকেরা জেলের মধ্যে থেকে ১২টি মোবাইল সেট বাজেয়াপ্ত করেন। এবছর উদ্ধার হয়েছে দু’টি মোবাইল। এই মোবাইল ফোনগুলি জেলে কি করে ঢুকলো তার কোনও সদুত্তর মেলেনি।

অনেক বন্দি নিয়মিত গাঁজা খান বলেও অভিযোগ। অভিযোগ, জেলের মধ্যে ২০ টাকার গাঁজার পুরিয়ার দাম ১৫০ টাকা। ছোট পুরিয়া সহজেই জেলে পাচার হয়। কখনও কখনও বড় প্যাকেট পাঁচিলের ওপার থেকে ফেলে দেওয়া হয়। বন্দিকে বলা থাকে সে কুড়িয়ে নেয়। এইভাবে আরও অনেক বেআইনি জিনিসপত্র সংশোধনাগারে ঢোকে। দাম দেওয়ার জন্য টাকাও ঢোকে। জেলের মধ্যে ১০০ টাকার মূল্য ৮০ টাকা। ১০০ টাকা চাইলে ৮০ টাকা দেওয়া হয়। পরে বন্দির বাড়ির লোকজনের কাছ থেকে ১০০ টাকা নেওয়া হয়।

Jail Drug mobile money Jalpaiguri prisoner
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy