Advertisement
E-Paper

সিঁদুরে মাতলেন সবাই

উৎসবে পেশার কাজ ছেড়ে জলপাইগুড়ির যৌনকর্মীরা সবাই আসতে পারেননি। দু’জন এসেছিলেন প্রতিনিধি হয়ে। ওঁদের নিয়েই শুক্রবার, দশমীর দিন সিঁদুর খেলায় মাতলেন নয়াবস্তি এবং আশ্রমপাড়ার গৃহবধূরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:২৫
উদ্যোগ: সিঁদুর খেলছেন ওসি উপাসনা গুরুং। নিজস্ব চিত্র

উদ্যোগ: সিঁদুর খেলছেন ওসি উপাসনা গুরুং। নিজস্ব চিত্র

উৎসবে পেশার কাজ ছেড়ে জলপাইগুড়ির যৌনকর্মীরা সবাই আসতে পারেননি। দু’জন এসেছিলেন প্রতিনিধি হয়ে। ওঁদের নিয়েই শুক্রবার, দশমীর দিন সিঁদুর খেলায় মাতলেন নয়াবস্তি এবং আশ্রমপাড়ার গৃহবধূরা। উদ্যোক্তা প্রগতি ব্যায়ামাগার এবং উল্লাস নামের একটি সংগঠন। এ দিন ওঁদের সঙ্গে উর্দি ছেড়ে শাড়ি পরে সিঁদুর খেলায় মেতেছিলেন জলপাইগুড়ির মহিলা থানার ওসি উপাসনা গুরুংও।

এ দিন উল্লাস এবং প্রগতি ব্যায়ামাগারের যুগ্ম ব্যবস্থাপনায় জলপাইগুড়ি শহরের আশ্রমপাড়া এবং নয়াবস্তি এলাকার মহিলারা ব্যায়ামাগারের পুজো প্রাঙ্গণে এই দু’জন যৌনকর্মীর সঙ্গে সিঁদুর খেলায় মেতে ওঠেন। তার আগে তাঁরা সবাই মিলে শহরের সমাজপাড়া এলাকা থেকে মিছিল করে আশ্রমপাড়ায় ব্যায়ামাগার প্রাঙ্গণে আসেন। এই ভাবে শহরের গৃহবধূরা স্বীকৃতি দেবেন তা একেবারেই ভাবতে পারেননি যৌনকর্মী মনা হাজরা এবং মালা রায় (নাম পরিবর্তিত)। তাঁরা জানালেন, এই প্রথম তাঁরা সমাজের বুকের ওপর দাঁড়িয়ে সকলের সঙ্গে মিশতে পারলেন। আগে কখনও এই রকম ভাবে সকলের সঙ্গে খোলামেলা ভাবে মেশার কথা আমরা ভাবতে পারেননি। এজন্য সবাইকে ধন্যবাদ দন তাঁরা।

এঁদের সঙ্গে এবার সিঁদুর খেলে একটা নতুন অভিজ্ঞতা হয়েছে আশ্রমপাড়ার গৃহবধূদের। এলাকার গৃহবধূ মহুয়া রায়চৌধুরী মনে করেন, অন্যরকম একটা অভিজ্ঞতা হল তাঁদের। তাঁর মতে, এরকম কাজ অনেকদিন আগেই করা উচিত ছিল। তিনি বলেন, “সমস্ত প্রতিমাকে বরণ ওদের দিয়ে করানো উচিত। কারণ ওঁদের বাড়ির দরজার পাশের মাটি দিয়েই প্রতিমার কাজ শুরু করা হয়।”

আর একজন গৃহবধূ শর্মিষ্ঠা মুখোপাধ্যায় আজকের দিনটার জন্য গর্ব অনুভব করছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুজোর সময় এত আনন্দের দিনে ওঁরা কখনওই ব্রাত্য হয়ে থাকতে পারেন না। আমরা সহজ ভাবে ওদের সঙ্গে মিশতে চাই। ওঁরাও পুজোর সময় আসবেন। এটাই আমরা চাই। আজকের দিনটার জন্য আমার গর্ব হচ্ছে।” প্রগতি ব্যায়ামাগারের মহিলা শাখার সদস্য প্রবীণ গৃহবধূ মাধুরী, গৌরী বলেন, “ভবিষ্যতে ওঁদের নিয়ে আরও বড় করে এই রকম অনুষ্ঠান করার ইচ্ছে আছে।”

জলপাইগুড়ি শহরে উল্লাস নামের সংগঠনটি শিশু, যৌনকর্মী এবং তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে কাজ করেন। সংগঠনের মুখপাত্র তমালিকা দত্ত এবং পিঙ্কি চৌধুরী জানালেন, যৌনকর্মীদের নিয়ে এসে সমাজের মূল স্রোতের বাসিন্দাদের সঙ্গে মেলানোর একটা প্রচেষ্টা ছিল তাঁদের। আজ তা বাস্তবায়িত হল।

পুলিশের উর্দি ছেড়ে শাড়ি পরে এঁদের সকলের সঙ্গে সিঁদুর খেলায় এ দিন মেতেছিলেন জলপাইগুড়ির মহিলা থানার ওসি উপাসনা গুরুং। তিনি বলেন, “এ ধরনের অনুষ্ঠান গত বছর কলকাতায় হয়েছিল। এখানে এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। ব্যক্তিগত ভাবে আমি এখানে এসেছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের অনুষ্ঠান হলে আমি অবশ্যই তাতে অংশ নেব।”

Police Integration Sex Workers Transgender
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy