Advertisement
E-Paper

ভাঙনের গ্রামে আসছেন দেবী

বীরনগর সরকারটোলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সভাপতি প্রলয় সরকার বা সম্পাদক ভীম মণ্ডল সহ সমস্ত সদস্যরা সকলেই ভাঙনে উদ্বিগ্ন। তাঁরা জানান, সরকারটোলার বেশিরভাগ মানুষই গরিব। বিড়ি বেঁধেই সংসার চলে। চাঁদাও কম ওঠে। তবুও আগে ৭০ হাজার টাকার মধ্যেই বাজেট থাকত।

জয়ন্ত সেন

শেষ আপডেট: ২৭ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০২:১৫
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

এক বছর আগে গঙ্গা গিলেছে বসতভিটে। কেউ পুনর্বাসন নিয়ে চলে গিয়েছেন প্রায় দশ কিলোমিটার দূরের গ্রামে। সেই থেকে এখনও কেউ রয়েছেন স্কুলের ভবনে। সকাল হলে দু’মুঠো অন্নের যোগান কী ভাবে হবে, তা ভেবেই তাঁরা কূল পান না। তবুও পুজো হচ্ছে বৈষ্ণবনগরের সেই ভাঙন কবলিত সরকারটোলায়। ১৯০৫ সাল থেকে শুরু হওয়া পুজোয় ছেদ পড়তে দিতে চান না ভাঙনপীড়িতরা। মায়ের কাছে একটাই আর্তি, গঙ্গার সর্বগ্রাসী থাবা ফের যেন গ্রামে না পড়ে।

কালিয়াচক ৩ ব্লক বীরনগর ১ পঞ্চায়েতের সরকারটোলা গ্রামের পাশ দিয়েই বয়ে গিয়েছে গঙ্গা নদী। এলাকায় মার্জিনাল বাঁধ থাকায় গ্রামের বাসিন্দারা কস্মিনকালেও ভাবেননি যে সেই বাঁধ ভেঙে গঙ্গা ধেয়ে এসে গোটা গ্রামকে প্রায় নিশ্চিহ্ন করে দেবে। কিন্তু গত বছর জুলাই মাসে সেই বাঁধের প্রায় ৫০০ মিটার অংশ ভেঙে গঙ্গা ঢুকে পড়েছিল সরকারটোলা গ্রামে। তাতে প্রায় দু’শো বাড়ি গঙ্গাগর্ভে তলিয়ে যায়। শতাধিক পরিবার আতঙ্কে নিজেরাই বাড়ি ভেঙে নিয়েছেন।

এক বছরে প্রায় ৮০টি পরিবারকে চরিঅনন্তপুরে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে, তাঁরা চলেও গিয়েছেন। বাকি প্রায় ৭০টি পরিবার সর্বস্ব হারিয়ে এখনও বীরনগর হাই স্কুলের ভবনে ঠাঁই নিয়ে রয়েছেন। এমন পরিস্থিতিতে গত বছর নমো নমো করে পুজো হয়েছিল, এ বারও সে ভাবেই পুজো হচ্ছে। যেখানে ছোটখাটো পুজোর বাজেটও প্রায় ২ লক্ষ টাকা সেখানে এ বার এই পুজোর বাজেট মাত্র ২০ হাজার টাকা।

বীরনগর সরকারটোলা সর্বজনীন দুর্গোৎসব কমিটির সভাপতি প্রলয় সরকার বা সম্পাদক ভীম মণ্ডল সহ সমস্ত সদস্যরা সকলেই ভাঙনে উদ্বিগ্ন। তাঁরা জানান, সরকারটোলার বেশিরভাগ মানুষই গরিব। বিড়ি বেঁধেই সংসার চলে। চাঁদাও কম ওঠে। তবুও আগে ৭০ হাজার টাকার মধ্যেই বাজেট থাকত।

কিন্তু গতবার গঙ্গা ভাঙনে এমন পরিস্থিতি তৈরি হল যে পুজো করা যাবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছিল। তাঁরা বলেন, ‘‘তবে পুজো বন্ধ করিনি। এ বারও পুজো হচ্ছে। বাজেট টেনেটুনে ২০ হাজার করা হয়েছে।’’ কিন্তু সেই টাকা উঠবে কি না সন্দেহ। কারণ, যাঁরা চাঁদা দেবেন তারা অনেকেই অন্যত্র চলে গিয়েছেন, অনেকে স্কুলে আশ্রয় নিয়ে রয়েছেন।

পুজো কমিটির সদস্য রাজকুমার মণ্ডল, ইন্দ্রজিৎ মণ্ডল, রতন রায়, বিশ্বজিৎ সরকাররা বলেন, ‘‘মায়ের কাছে আমাদের একটিই আর্তি, যে মা জগজ্জননী যেন গঙ্গার গ্রাস থেকে আমাদের গ্রামকে রক্ষা করেন।’’

Durga Puja 2017 Durga Puja দুর্গোৎসব ২০১৭ puja
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy