এবার ই-ক্লাসে বেলুড়ের সঙ্গে জুড়ছে কোচবিহার। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দুর্গাপুজোর পরেই কোচবিহার জেনকিন্স স্কুলের পড়ুয়ারা নিজেদের স্কুলে বসেই কয়েকশো কিমি দূরের বেলুড়ের রামকৃষ্ণ বিদ্যামন্দিরের ক্লাসে অংশ নিতে পারবে।
স্কুল সূত্রের খবর, ওই ব্যাপারে রামকৃষ্ণ বিদ্যামন্দির কর্তৃপক্ষের সঙ্গে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। তারপরেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেনকিন্সের পড়ুয়াদের সেখানকার ক্লাসে সামিল করানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। পরিকাঠামো তৈরির কাজও এগিয়েছে। রাজ্য শিক্ষা দফতরের সবুজ সঙ্কেত পেতে এ মাসেই কলকাতা যাচ্ছেন স্কুলকর্তারা।
কোচবিহার জেনকিন্স স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, “বেলুড়ের রামকৃষ্ণ বিদ্যামন্দিরের ক্লাসে ভিডিও কনফারেন্সে আমাদের পড়ুয়াদের সামিল করানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বেলুড়ের বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আগ্রহ দেখিয়েছেন। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অনুমতি দিলে দুর্গাপুজোর পরেই ই-ক্লাস শুরু করা যাবে বলে আমরা আশা করছি।”
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে কোচবিহার জেনকিন্স স্কুলের বরাবরই সুনাম রয়েছে। ছাত্রদের সাফল্যের ধারা বজায় রাখার পাশাপাশি আরও উন্নত পড়াশোনার সুযোগ তৈরি করতে ই-লার্নিং চালুর চিন্তাভাবনা শুরু হয়। তৈরি করা হয়েছে দুটি বড় ঘর। একটি অডিটোরিয়াম কক্ষ, অন্যটি কম্পিউটার কক্ষ। দুটিতে গড়ে দেড় শতাধিক ছাত্র একসঙ্গে বসতে পারবে। সেখানে কম্পিউটার, প্রজেক্টর, মাইক্রোফোন থেকে বড়পর্দাও লাগানো হয়। মঙ্গলবার স্কুলের অভিভাবক বৈঠকে ‘ডিজিটাল জেনকিন্স’ তৈরির পরিকল্পনার পাশাপাশি ই-লার্নিং ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়। অভিভাবকদের বড় অংশ বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে দারুণ রকম উৎসাহ দেখিয়েছেন।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ওয়েব ক্যামেরার মাধ্যমে বড়পর্দায় ভেসে উঠবে বেলুড়ের ওই বিদ্যামন্দিরের ক্লাসঘর। আরেক দিকের পর্দায় দেখা যাবে জেনকিন্সের পড়ুয়াদের। আগে থেকে তৈরি করা সূচি মেনে বাংলায় ক্লাস হবে। আপাতত নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ক্লাস চালুতে জোর দেওয়া হচ্ছে। ওই ব্যবস্থায় বেলুড়ের শিক্ষকের কাছে প্রশ্ন করতে পারবে পড়ুয়ারাও। বেলুড়ের ওই স্কুলকেই বেছে নেওয়া কেন? স্কুল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, ধারাবাহিক ভাল ফল, মেধাবী পড়ুয়া, উন্নত পড়াশোনা থেকে আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থা সবদিক থেকেই ওই স্কুলের খ্যাতি রয়েছে। সেখানকার পড়ুয়া ও শিক্ষকদের সঙ্গে খোলামেলা আলোচনার সুযোগ পেলে প্রত্যন্ত জেলায় থেকেও এখানকার ছাত্ররা অনেকটাই সমৃদ্ধ হতে পারবে। ভবিষ্যতে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গেও যোগাযোগ করা হবে।
স্কুল সূত্রের খবর, অনলাইনে ভর্তির ফর্ম পূরণ, ফি জমা, রেজাল্ট ও ম্যাগাজিন প্রকাশ, ছাত্রদের উপস্থিতি নিয়ে অভিভাবক ও প্রধানশিক্ষকের কাছে এসএমএস আলার্ট চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। একাধিক বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে ওই ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। তাতে সাকুল্যে দশ বছরের চুক্তি করা হলে পড়ুয়াদের মাথাপিছু বছরে ১৫ টাকা ফি দিতে হবে। কোচবিহারের জেলাশাসক তথা জেনকিন্স স্কুল পরিচালন সমিতির সভাপতি পি উল্গানাথন বলেন, “ভাল উদ্যোগ। ওই ব্যাপারে প্রয়োজনীয় সাহায্য করা হবে।” জেনকিন্স স্কুলের অভিভাবক সমিতির মুখপাত্র নেপাল মিত্র বলেন, “আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থায় ই লার্নিং প্রাসঙ্গিক ও গুরুত্বপূর্ণ। তবে শূন্যপদ পূরণের উদ্যোগও দরকার।”