Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

পরিবেশ বান্ধব প্রতিমায় বাসন্তী পুজো রায়গঞ্জে

এমন একটি প্রতিমা যা বিসর্জন দেওয়ার পর নদীর দূষণ হবে না। সেই সঙ্গে নদীতে ভেসে যাওয়া সেই প্রতিমার নানা উপকরণ মাছ ও পাখিদের খাবার হিসেবেও কাজে লাগবে। শুধু তাই নয়, সেই সব উপকরণের থেকে নদী পাড়ে গাছ জন্মে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করবে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
রায়গঞ্জ শেষ আপডেট: ৩০ মার্চ ২০১৫ ০২:০৫
Share: Save:

এমন একটি প্রতিমা যা বিসর্জন দেওয়ার পর নদীর দূষণ হবে না। সেই সঙ্গে নদীতে ভেসে যাওয়া সেই প্রতিমার নানা উপকরণ মাছ ও পাখিদের খাবার হিসেবেও কাজে লাগবে। শুধু তাই নয়, সেই সব উপকরণের থেকে নদী পাড়ে গাছ জন্মে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করবে।

ঠিক এমনই একটি দুর্গা প্রতিমা তৈরি করে গত শনিবার থেকে রায়গঞ্জের বীরনগর এলাকায় বাসন্তী পুজোয় মেতেছেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন শ্রীপুর মহিলা ও খাদি উন্নয়ন সমিতির সম্পাদিকা জবা ভট্টাচার্য ও সদস্যা রীনা নট্ট বর্মন। সংগঠনের সদস্য না হলেও তাঁদের সঙ্গে সামিল হয়েছেন উকিলপাড়া এলাকার বাসিন্দা শহরের একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কর্ণধার জয়িতা দত্ত নামে এক তরুণীও। জবাদেবীর বাড়ির ওই বাসন্তী পুজো চলবে সোমবার পর্যন্ত। এই প্রথম তাঁরা এমনই একটি দূষণমুক্ত প্রতিমা নিজে হাতে তৈরি করে বাসন্তীপুজো করছেন।

জবাদেবীর দাবি, পুজোর সঙ্গে তাঁদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কোনও যোগ নেই। তিনি জানান, প্রতি বছর দেশ জুড়ে দুর্গা, বাসন্তী, কালী সহ বিভিন্ন দেবদেবীর লক্ষাধিক প্রতিমা বিভিন্ন নদীতে বিসর্জন দেওয়া হয়। ফলে প্রতিমার বিভিন্ন রাসায়নিক ও অপচনশীল কঠিন বর্জ্য নদীর দূষণ করে। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই মাছ ও জলজ প্রাণীদের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়। তাই তাঁরা পরিবেশ বান্ধব একটি প্রতিমা তৈরি করেছেন।

কী পদ্ধতিতে তৈরি হয়েছে সেই প্রতিমা? জবাদেবীরা জানালেন, প্রায় দু’সপ্তাহ আগে রায়গঞ্জের কুমোরটুলি থেকে তাঁরা একচালার উপরে রঙ ও সাজজজ্জাবিহীন ৩ ফুট উঁচু ও ৪ ফুট চওড়া একটি মাটির প্রতিমা কিনে আনেন। এরপর হলুদ, চালের গুঁড়ো, ছাতু ও খড়িমাটি গুলিয়ে সামঞ্জস্য রেখে দুর্গা, অসুর, মহিষ, লক্ষ্মী, সরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, সিংহ, ময়ূর, ইঁদুর, হাঁস ও প্যঁাচার মূর্তি রঙ করেন তাঁরা। বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তির গায়ে নিখুঁতভাবে পাটের সুতো জড়িয়ে পোশাকের রূপ দেওয়া হয়। এরপর রং অনুযায়ী রাজমা, ছোলা, মসুরডাল, মাসকলাই ডাল, ঘাস, কুমড়ো, লাউ, লাল শাক, পালং শাক ও ঢ্যাঁড়সের বীজ সহ সুপারি, হরিতকির দানা ভেষজ আঠার সাহায্যে সমস্ত দেবদেবীর গায়ে বসিয়ে শিল্পকলার মাধ্যমে সাজসজ্জা, চুল ও অলঙ্কার তৈরি করা হয়।

জয়িতাদেবী ও রিনাদেবী জানান, তাঁরা চান ভবিষ্যতে গোটা দেশে নদী দূষণ রুখতে ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার স্বার্থে এই পদ্ধতিতেই বিভিন্ন পুজোর উদ্যোক্তারা প্রতিমা তৈরি করুক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE