Advertisement
১৮ মে ২০২৪

খাবার পায়ে ঠেললেও সেরে উঠছে হস্তি শাবক

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডিএফডি কল্যাণ রাই জানান, জখম হস্তিশাবকটি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছে। হস্তিশাবকটিকে প্রয়োজনীয়  ওষুধ দেওয়া হয়েছে।

চঞ্চল: ছোটাছুটি করছে হস্তিশাবকটি। ছবি: নারায়ণ দে

চঞ্চল: ছোটাছুটি করছে হস্তিশাবকটি। ছবি: নারায়ণ দে

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৩৯
Share: Save:

কখনও আখ কখনও কলা, গুড় এগিয়ে দিচ্ছেন বনকর্মীরা। টালমাটাল পায়ে উঠে দাঁড়িয়ে তাঁদের দিকে ধেয়ে আসছে হস্তিশাবক। বৃহস্পতিবার দিনভর হাতিকে এ ভাবেই খাওয়ানোর চেষ্টা করলেন বনকর্মীরা। তবে বনকর্মীদের খাবার কখনও পা দিয়ে মাড়াল, কখনও আবার শুঁড় গুটিয়ে বনকর্মীদেরই ধাওয়া করল হস্তিশাবকটি।

বুধবার সন্ধ্যায় জলপাইগুড়ি থেকে আলিপুরদুয়ারগামী একটি বাসের সঙ্গে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে ধাক্কা লাগে হস্তিশাবকটির। বছর পাঁচ-ছয়েকের শাবকটি জখম অবস্থায় রাতভর পোর আট নম্বর কম্পার্টমেন্টের জঙ্গলে জখম অবস্থায় পরে ছিল। রাত থেকেই চিকিৎসা শুরু করেন বক্সা বন বিভাগের বন্যপ্রাণী চিকিৎসক। পরিবেশ প্রেমীদের দাবি, এই এলাকায় আগেও গাড়ির ধাক্কায় চিতাবাঘের মৃত্যু হয়েছে।

বক্সা ব্যাঘ্র প্রকল্পের ডিএফডি কল্যাণ রাই জানান, জখম হস্তিশাবকটি চিকিৎসায় সাড়া দিচ্ছে। হস্তিশাবকটিকে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়েছে। কোন গাড়ি হস্তিশাবকটিকে ধাক্কা মেরেছিল তার খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। চিকিৎসক দীপক শর্মা জানান, হস্তিশাবকটির ডান দিকের সামনের ও পিছনের পায়ে চোট রয়েছে। মাথাতেও আঘাত পেয়েছে বলে মনে হচ্ছে। তবে শাবকটি প্রথম দিকে সে ভাবে সাড়া না দিলেও পরে উঠে দাঁড়িয়ে ছোটাছুটি করে নিজের দলকে খুঁজছে।

এক বনাধিকারিক জানান, বুধবার সন্ধ্যায় গরম নদীর কাছে ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে দু’টি বাস একে অপরকে ওভারটেক করতে গিয়ে হস্তিশাবকটিকে ধাক্কা মারে বলে জানা গিয়েছে। তাঁরা জানতে পেরেছেন, একটি হাতির পাল ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক পার করে লোকালয়ের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছিল। সেই সময় দুর্ঘটনাটি ঘটে। বৃহস্পতিবার সকালে হস্তিশাবকটিকে আখ, কলা ও গুড় দেওয়া হয়। বনকর্মীরা হস্তিশাবকটিকে খাবার দিতে গেলে সে উঠে দাঁড়িয়ে বার বার বনকর্মীদের তাড়া করে। দুপুরের দিকে হস্তিশাবকটি জঙ্গলের একটু ভিতরে চলে যায়। বনকর্মী ও চিকিৎসকরা হস্তিশাবকটির উপর নজর রাখছেন।

পরিবেশপ্রেমীরা জানান, এর আগেও একাধিক বার ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে গাড়ির ধাক্কায় বন্যপ্রাণীর মৃত্যু ঘটেছে। বাইসন, বাঁদর থেকে চিতাবাঘের মৃত্যু হয়েছে গাড়ির ধাক্কায়। সন্ধের পর এই এলাকায় বন্যপ্রাণী রাস্তা পারাপার করে। সেই সময় অনিয়ন্ত্রিত ভাবে চলে গাড়িগুলো। দেখার কেউ নেই। আলিপুরদুয়ার নেচার ক্লাবের চেয়ারম্যান অমল দত্ত জানান, নিমতি চা বাগানের বাঁক থেকে গরম বিট এলাকা পর্যন্ত ৩১ নম্বর জাতীয় সড়কে রাত হলেই হাতি বাইসনের যাতায়াত বাড়ে। বনদফতরের বিষয়টির দিকে নজর রাখা উচিত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Elephant Forest worker বনকর্মী
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE