বড় ট্রাক দু’হাজার, ট্রাক্টর পিছু ৫০০ টাকা। ছাপানো রসিদ নিয়ে বালি ও পাথর বোঝাই ট্রাক আটকে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে তোলাবাজির অভিযোগকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল মালদহের চাঁচলে। রবিবার সকালে শহরের ভিতরে এনবিএসটিসি ডিপোর সামনে ৮১ নম্বর জাতীয় সড়কে ঘটনাটি ঘটে। পুলিশের একাংশের প্রশ্রয় ছাড়া এ ভাবে শহরের ভিতরে ট্রাক আটকে তোলাবাজি সম্ভব কি না, সেই প্রশ্নে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। পরে এসডিপিও-র নির্দেশে দুই যুবককে গ্রেফতার করা হলেও মূল অভিযুক্ত অবশ্য এখনও অধরা। যদিও ঘটনার সঙ্গে তাঁদের কোনও যোগ নেই বলে পুলিশ সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ওরা কেন পুলিশের কথা বলছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাসিন্দাদের ক্ষোভের মুখে পড়ে ছাড়া পেতে তারা পুলিশের নাম করে থাকতে পারে। গোটা ঘটনাটি খতিয়ে দেখে প্রয়োজন মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এস কে মোটর্স-এর নামে রসিদ ছাপিয়ে বেশ কিছু দিন ধরেই চাঁচল, মালতীপুর, আশাপুর এলাকায় বালি ও পাথর বোঝাই ট্রাক ও ট্রাক্টর আটকে তোলাবাজি চলছে। সিন্ডিকেট গড়ে কর্মী রেখে ইমামপুরের খাদেমুল ইসলাম ও আলাদিপুরের এক যুবক ওই কাজ চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ। খাদেমুলকে নিয়মিত চাঁচল থানায় দেখা যায় বলেও অভিযোগ। এ দিন স্থানীয় তৃণমূল নেতা আদিত্য দাসের পরিচিতের বালির গাড়ি আটকে তোলা আদায় করতেই বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু হওয়ার পর তা প্রকাশ্যে এসে পড়ে।
চাঁচল-২ ব্লক তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি আদিত্য বলেন, ‘‘ওরা পুলিশের নাম করে সিন্ডিকেট তৈরি করে তোলা আদায় করছে। সঠিক কি, তা পুলিশই খুঁজে বের করুক। এ সব আমাদের দল বরদাস্ত করে না।’’
ব্যবসায়ীদের সূত্রে জানা যায়, মুরারই থেকে প্রতি দিন গড়ে ১৫টি বালির ট্রাক চাঁচলে আসে। জাতীয় সড়ক, রাজ্য সড়কে ট্রাক আটকে পুলিশের নাম করে টাকা আদায় চলছে। ফলে প্রতি সিএফটি বালির দাম দ্বিগুণ বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ী-বাসিন্দা সবাইকেই বিপাকে পড়তে হচ্ছে। তোলা দেওয়ার জন্যই বালির দাম চড়চড় করে বাড়তে শুরু করেছে।
খাদেমুল ইসলামের দাবি, ‘‘শুধু পুলিশ নয়, আরও উপরতলার নির্দেশে টাকা আদায় করা হচ্ছে।’’ কিন্তু তারা কারা? সেই প্রশ্ন শুনেই মোবাইল ফোন কেটে দেন খাদেমুল।