Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
TMC

Rabindranath Ghosh: তোলাবাজ জেলা সভাপতি চাই না! কোচবিহারের ভরা সভায় বললেন তৃণমূলের ব্লক সভাপতি

যদিও এই সব অভিযোগ আর আক্রমণকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়।

কোচবিহারের প্রাক্তন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

কোচবিহারের প্রাক্তন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২২ ০৭:৫৮
Share: Save:

কোচবিহারে একুশে জুলাইয়ের প্রস্তুতি মঞ্চে আবার প্রকাশ্যে শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। ভরা সভায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়কে ‘তোলাবাজ’ আখ্যা দিলেন দলেরই এক ব্লক সভাপতি। কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কোচবিহারের প্রাক্তন জেলা সভাপতি রবীন্দ্রনাথ ঘোষও। বর্তমান জেলা সভাপতিকে শীঘ্রই তাঁর পদ থেকে সরানো হতে পারে, এমন ইঙ্গিত দিয়ে তিনি জানালেন, রোগীর মৃত্যুর পর যেমন চার ঘণ্টা পর শংসাপত্র দেওয়া হয়, সে ভাবেই জেলা সভাপতির পদ যাওয়া এখন শুধুই সময়ের অপেক্ষা। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে শাসকদলের অন্দরে শোরগোল শুরু হতেই কটাক্ষ করতে শুরু করেছে বিজেপি। যদিও এই সব অভিযোগ আর আক্রমণকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে নারাজ পার্থপ্রতিম। ঘরের কথা প্রকাশ্যে এনে দলকে এ ভাবে বিড়ম্বনায় ফেলার চেষ্টাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেছেন তিনি।

তৃণমূলের শহিদ দিবস উপলক্ষে সোমবার বিকেলের তুফানগঞ্জের কমিউনিটি হলে একটি প্রস্তুতি সভার আয়োজন করা হয়। ওই সভা থেকে পার্থপ্রতিমকে আক্রমণ করে তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের তৃণমূল সভাপতি ধনেশ্বর বর্মণ বলেন, ‘‘জেলা সভাপতি অনেককেই বলেন, আমি তোমাদের ব্লক সভাপতি, অঞ্চল সভাপতি করব। তোমরা আমাকে তোলা দাও। এই তোলা দিয়ে আমি দল চালাব। এই রকম তোলাবাজ সভাপতি আমরা চাই না। আমাদের লড়াই যেমন বিজেপির বিরুদ্ধে, তেমনই দলের তোলাবাজদের বিরুদ্ধে।’’

ব্লক সভাপতির তোপ-প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন পার্থপ্রতিমও। তিনি বলেন, ‘‘ব্লক সভাপতি কী বলেছেন, আমার জানা নেই। কাউকে দোষারোপ করতে হলে তার জন্য বড় ধরনের প্রমাণ দরকার। এই ধরনের মন্তব্য করে ব্লক সভাপতি দলকে বিড়ম্বনায় ফেলার চেষ্টা করছেন। এটা দুর্ভাগ্যজনক। দলের ভিতরের কথা দলের ভিতরেই বলা উচিত।’’

শাসকদলের এই গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে আসার পরেই খোঁচা দিতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবির। বিজেপির জেলা সম্পাদক উজ্জ্বলকান্তি বসাক বলেন, ‘‘তৃণমূল দলটাই তোলাবাজের দল। তৃণমূল দলে তোলাবাজ ছাড়া আর কেউ নেই। কাটমানি খাওয়া, তোলাবাজি করা তৃণমূলের একমাত্র কাজ। এদের তোলাবাজির কারণে সমস্যায় পড়ছেন সাধারণ মানুষ।’’

কোচবিহারে তৃণমূলের শহিদস্মরণ কর্মসূচির প্রস্তুতি সভায় মুখ্য বক্তা ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ও জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান গিরীন্দ্রনাথ বর্মণ। গিরীন্দ্রনাথ বলেন, ‘‘আমি দলের চেয়ারম্যান হওয়া সত্ত্বেও জেলা সভাপতি আমায় আমার প্রাপ্য মর্যাদা দিচ্ছেন না। আজ পর্যন্ত জেলা সভাপতির সঙ্গে কোনও মঞ্চেই উঠিনি। দলের কর্মীরাই এখন সভাপতিকে তোলাবাজ বলছেন। জেলা সভাপতির সঙ্গে যে দু’জন নেতা ছিলেন, তাঁরাও এখন সরে গিয়েছেন। এখন একাই দৌড়ে বেড়াচ্ছেন জেলা সভাপতি।’’

আর রবীন্দ্রনাথ বলছেন, ‘‘রোগীর মৃত্যুর পর যেমন চার ঘণ্টা পর ডেথ সার্টিফিকেট দেওয়া হয়, তেমনি জেলা সভাপতির পদ যাওয়া শুধুই সময়ের অপেক্ষা। এখন শুধু ডেথ সার্টিফিকেটে সই হওয়া বাকি। যিনি ক্লাস ওয়ান পাশ করতে পারেন না, তাঁকে স্নাতকের ক্লাসে ভর্তি করানো হয়েছে। ফলে দলের যা হওয়ার, তাই হচ্ছে।’’ যদিও এই আক্রমণের কোনও জবাব দিতে চাননি পার্থপ্রতিম। তিনি শুধু বলেন, ‘‘দলের জেলা সভাপতি ঠিক করেন স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই কে কোথায় কী বলল, তা নিয়ে আমি মাথা ঘামাই না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

TMC Cooch Behar Rabindranath Ghosh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE