Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
River Erosion

Ganges Erosion: ক্লাসঘরে সাত-আটটি পরিবার

ভিটে-মাটি হারিয়ে স্কুলে আসার পর সোমবার দুপুর পর্যন্ত সেখানে ত্রাণ মেলেনি।

দিশাহারা: এই ভাবেই ভেঙে নদীগর্ভে মিলিয়ে যাচ্ছে জমি, পথঘাট। কী ভাবে আশ্রয় মিলবে, চলেছে তারই সন্ধান। বৈষ্ণবনগরে। ছবি: স্বরূপ সাহা

দিশাহারা: এই ভাবেই ভেঙে নদীগর্ভে মিলিয়ে যাচ্ছে জমি, পথঘাট। কী ভাবে আশ্রয় মিলবে, চলেছে তারই সন্ধান। বৈষ্ণবনগরে। ছবি: স্বরূপ সাহা

জয়ন্ত সেন 
বীরনগর  শেষ আপডেট: ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ ০৮:১৬
Share: Save:

বীরনগরের মুকুন্দটোলায় ইটের গাঁথনি দেওয়া পাঁচটি পাকা ঘর, একটি গোয়াল, রান্না ঘরও ছিল। রবিবার সকালে আচমকা গঙ্গা ভাঙনে সব ক’টি ঘরবাড়িই গঙ্গা গর্ভে তলিয়ে যায়। তিনটে গরু, একটা চৌকি আর বাসনপত্র ছাড়া কিছুই বের করতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত, নদীতে তলিয়ে যাওয়া সেই বাড়ি থেকে ১০০ মিটার দূরে বাড়িরই পুরোন ছেঁড়া একটি ত্রিপলের নিচে দুই ছেলের পরিবারকে নিয়ে আশ্রয় নেন রমেন ও অঙ্গরি ঘোষ। গোটা রাত সেখানেই কেটেছে তাঁদের। সোমবার দুপুর গড়িয়ে বিকেল হয়ে গেলেও প্রশাসনের তরফে কোনও ত্রাণ মেলেনি।

আবার, ঘরবাড়ি গঙ্গায় ভেঙে যাওয়ার পর প্রচুর পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন চামাগ্রাম হাইস্কুলে। দুর্গতদের দাবি, এক একটি ক্লাস রুমে তাঁরা অন্তত সাত থেকে আটটি করে পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। ভিটেমাটি হারিয়ে স্কুলে আসার পর সোমবার দুপুর পর্যন্ত প্রশাসনের তরফে কোনও ত্রাণ সেখানে মেলেনি। ত্রাণ না মেলা নিয়ে সোমবার এমন অভিযোগ কালিয়াচক ৩ ব্লকের বীরনগর ১ পঞ্চায়েতের গঙ্গা ভাঙনে সর্বস্বান্ত হওয়ার অন্তত ২০০টি পরিবারের। অভিযোগ উঠেছে, ব্লকে পর্যাপ্ত ত্রাণ মজুদ থাকা সত্ত্বেও দুর্গতদের মধ্যে তা বিলি করা হয়নি। এক্ষেত্রে ব্লক প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

ভাঙনে ভিটেমাটি হারানো মুকুন্দটোলার এক দুর্গত স্বপন ঘোষ বলেন, "রবিবার সকালে আমাদের ঘরবাড়ি গঙ্গায় তলিয়ে গিয়েছে। তারপর থেকে একটি আম বাগানে পরিবার নিয়ে খোলা আকাশের নিচে রয়েছি। রান্না করে খাওয়ার মতো সরঞ্জাম পর্যন্ত নদীতে চলে গিয়েছে। সোমবার দুপুর পর্যন্ত পঞ্চায়েত বা প্রশাসন, কারও তরফেই কোন ত্রাণ মিলল না। একটা গোটা দিন আমরা না খেয়েই কাটিয়ে দিলাম।" ত্রাণ না মেলায় এমনই ক্ষোভ মুকুন্দটোলার শরৎ ঘোষ, রমেন ঘোষ, দীপালি ঘোষ, শক্তি মণ্ডলদের। যদিও সন্ধ্যায় জেলাশাসক দাবি করেন, "এদিন বিকেল থেকে দুর্গতদের মধ্যে চিড়ে গুড় বিলি করা শুরু হয়েছে।"

এদিকে, এ দিন বিকেলে গঙ্গা ভাঙনে বিধ্বস্ত এই এলাকা পরিদর্শনে আসেন রাজ্যের সেচ ও উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র ও সেচ দফতরের আধিকারিকরা। পরে সাবিনা ফরাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজারের সঙ্গে দেখা করেন। সাবিনা বলেন, ‘‘গঙ্গা ভাঙনে বীরনগর রীতিমতো বিধ্বস্ত। ফরাক্কা ব্যারাজের জেনারেল ম্যানেজারের কাছে ভাঙনে ভিটেমাটি হারানো বাসিন্দাদের আর্থিক প্যাকেজ ও পুনর্বাসনের জন্য ব্যারাজের অব্যবহৃত জমি দেওয়ার দাবি করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

River Erosion ganga
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE