বিএসএফের খোঁড়া নালায় মাটি চাপা পড়ে চার নাবালকের মৃত্যুর ঘটনায় পরিবারের সঙ্গে দেখা করে আর্থিক সহযোগিতার আশ্বাস দেন রাজ্যপাল। রাজ্যপাল তাঁর প্রতিশ্রুতি রাখেননি বলে দাবি করে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে কাল, মঙ্গলবার কলকাতার রওনা হবে চোপড়ার চেতনাগছের চার পরিবার।
ওই পরিবারগুলির দাবি, এখনও পর্যন্ত রাজভবনে রাজ্যপালের সঙ্গে যোগাযোগ করার ব্যবস্থা হয়নি। তাই তাঁরা রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে সেখানেই যাচ্ছেন। কেন রাজ্যপাল প্রতিশ্রুতি দিয়েও কথা রাখেনি তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে পরিবারগুলি। এই বিষয়টি নিয়ে উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। ওয়টস্যাপ-বার্তারও উত্তর মেলেনি। মহকুমাশাসক অঙ্কিতা আগরওয়াল এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘ওঁরা আমাদের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
২০২৪ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি চোপড়ার চেতনাগছে বিএসএফের কাটা নালায় নেমে মাটি চাপা পড়ে মৃত্যু হয় চার নাবালকের। ঘটনার পরেই বিএসএফের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তুলে আন্দোলনে নামে তৃণমূল। টানা ধর্না বিক্ষোভ চলে সেখানে। ঘটনার ন’দিন পরে ঘটনাস্থলে যান রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। মৃত চার নাবালকের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। রাজ্যপালের তহবিল থেকে মৃতদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ ও আহত নাবালককে পড়াশোনার জন্য প্রতি মাসে আর্থিক সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অথচ এ যাবৎ কোনও টাকাই মেলেনি বলে দাবি পরিবারগুলির। মৃত নাবালকের বাবা সমিরুল ইসলাম বলেন, ‘‘আমার এক ছেলে মারা গিয়েছে। এক জন আহত হয়। রাজ্যপাল প্রত্যেকে এক লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণের আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তা মেলেনি।’’ তিনি বলেন, ‘‘ওঁর প্রতিশ্রুতি পেয়ে এক ছেলেকে ভাল স্কুলে ভর্তি করেছি। সেই কারণেই কলকাতায় যাচ্ছি। যত দিন না দেখা হয় সেখানেই থাকব।’’ তৃণমূল জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘রাজ্য সরকার পরিবারগুলির পাশে দাঁড়িয়েছে। তৃণমূলের তরফে আর্থিক সহায়তা করা হয়েছে। তবে রাজ্যপাল তাঁর কথা রাখেননি। তাই ওঁদের সেখানে গিয়ে জানতে চাওয়ার অধিকার রয়েছে।’’ বিজেপির রায়গঞ্জ লোকসভা কেন্দ্রের সাংসদ কার্তিক পাল বলেন, ‘‘রাজ্যপাল কথা দিয়ে থাকলে তা তাঁরা পাবেন। রাজ্যপালের সঙ্গে যোগাযোগ করে ওঁরা যাতে ক্ষতিপূরণ পান, তার ব্যবস্থা করব।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)