মাঠেই পড়ে ধান। দর না পাওয়ায় কাটছেন না কৃষক। নিজস্ব চিত্র।
কোথাও চারশো টাকা মণ। তো কোথাও আবার তিনশো টাকা মণ দর দিয়ে চলে যায় ফড়ে। গত বছরও ধান মণ প্রতি ছ’শো টাকার উপরে পেয়েছে কৃষকরা।
এক ঘণ্টা, দেড় ঘণ্টা একটু ইতিউতি ঘুরে শেষ পর্যন্ত সেই দামেই ধান বাজারে বিক্রি করে ঘরে ফিরতে হচ্ছে কৃষকদের। পাঁচশো, হাজারের নোট বাতিলের জেরে কোচবিহারে ধানের দাম মাটিতে পড়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন কৃষকদের। তাঁদের দাবি, বাজারে যদি যথেষ্ট টাকা থাকত তা হলে এই অবস্থা হত না। অনেকে আবার দাম একটু চড়িয়ে দিলেও কারবার করতে চায় পুরনো টাকায়। সেই টাকা চাষিরা নিতে নারাজ। এই অবস্থায় সরকার কেন ধান কিনতে নামছে না, সে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
অবস্থা বুঝে বৃহস্পতিবার জেলাশাসক পি উল্গানাথন কৃষি বিপনন দফতর, কৃষি দফতর সহ বিভিন্ন বিভাগের কর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন। সেখানে ব্যাঙ্ক আধিকারিকদেরও ডাকা হয়। জেলাশাসক বলেন, “সারা বছর ধরেই ধান কেনা হয়। এবারে নোট সমস্যার জেরে একটু অসুবিধে হয়েছে। তবে ধান কেনা দ্রুত শুরু হবে বলে আশা করছি। লিড ব্যাঙ্ক ম্যানেজার আরবিআইয়ের সঙ্গে কথা বলবেন।”
কৃষি দফতর সূত্রের খবর, কোচবিহারে প্রায় দু’লক্ষ দশ হাজার হেক্টর জমিতে ধান চাষ হয়। প্রতি হেক্টরে আড়াই টন ধান উৎপন্ন হয়। কয়েক লক্ষ কৃষক ধান চাষের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের অনেকের অভিযোগ, যত দিন যাচ্ছে বাজারে ধানের আমদানি বেশি হচ্ছে, দামও কমে যাচ্ছে। কদমতলার কৃষক মানিক মহন্ত জানান, তিনি এ বারে চার বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছিলেন। প্রতি বিঘাতে গড়ে দশ মণ করে ধান হয়েছে। সেই ধানের বেশ কিছুটা চারশো টাকা মণ হিসেবে বিক্রি করতে হয়েছে তাঁকে। তিনি বলেন, “ধান চাষে যা খরচ হয়েছে সেটাই ঠিক মতো উঠছে না।” কৃষকদের কয়েকজন জানান, আমন ধান বাজারে বিক্রি করে সেই টাকা দিয়ে তাঁরা রবি ফসল চাষের কাজ করেন। সেখানে যদি কিছু লাভ না হয় তাহলে চলবে কী করে। পশ্চিম ঘুঘুমারির কৃষক নন্দ বর্মন বলেন, “এক বিঘা জমিতে ধান চাষ করতে সবমিলিয়ে চার হাজার টাকা খরচ হয়ে যায়। সেখানে দাম এত কম থাকলে লাভের মুখ দেখব কি করে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy