বন্যায় ভেসেছে বনভূমি। মৃত্যু হয়েছে একের পর এক বন্যপ্রাণীর। প্রাণে বাঁচতে বহু বন্যপ্রাণী ঢুকে পড়েছে উত্তরবঙ্গের লোকালয়ে। যেমন, কোচবিহারের ঘোকসাডাঙা। সেখানে আবার বুনো শুয়োরের হানায় মৃত্যু হল এক ব্যক্তির। গত দু’দিনে এ নিয়ে দ্বিতীয় প্রাণহানির ঘটনা ঘটল সেখানে।
স্থানীয় সূত্রে খবর, বুনো শুয়োরের হামলায় মৃত্যু হয়েছে তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য স্বপন বর্মণের বাবার। নিহতের নাম কাশীকান্ত বর্মণ (৬৯)। মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিলেন কাশী। বুধবার সকালে তাঁর ক্ষতবিক্ষত দেহ মেলে নদীর ধারে। শরীরের ক্ষতচিহ্ন দেখে স্থানীয়দের অনুমান, বন্যজন্তুর হামলাতেই মৃত্যু হয়েছে কাশীর। এই ঘটনাটি ঘটেছে ঘোকসাডাঙা থানার ভেলাকোপা এলাকায়। এর আগে মাথাভাঙা-২ ব্লকের ঘোকসাডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের শিমুলগুড়ি তেতুলের ছড়ায় বুনো শুয়োরের হানায় প্রাণ গিয়েছিল এক জনের। ধীরেন বর্মণ নামে ওই ব্যক্তি নদীর তীরে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন। আর ফেরেননি।
মঙ্গলবারের ওই ঘটনার পর বন দফতরের কর্মীরা এলাকায় গিয়ে বুনো শুয়োরের সন্ধান চালান। কিন্তু দেখা মেলেনি ‘ঘাতকের।’ এলাকার মানুষকে সচেতন করার জন্য মাইকিং করা হয়। বলা হয়, নদীর জলে কোনও বন্যপ্রাণী ভেসে লোকালয়ে চলে আসতে পারে। তাই সতর্ক থাকতে হবে সকলকে। তার মধ্যেই ৬৯ বছর বয়সি ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বন দফতর খোঁজ চালাচ্ছে প্রাণীটির।
বুধবার রাজ্য তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক সভাপতি কমলেশ অধিকারী বলেন, ‘‘ধীরেন বর্মণ তোর্সা নদীর চরে ঘাস কাটতে গিয়েছিলেন। সেখানে বুনো শুয়োরের হামলায় তাঁর মৃত্যু হয়। আজ (বুধবার) সকালে আমরা খবর পাই, আমাদের স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের বাবার ক্ষতবিক্ষত দেহ নদীর ধারে পড়ে আছে। মঙ্গলবারই এক জন মারা গিয়েছেন। আবার একটি মৃত্যু হল।’’ তৃণমূলের মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় জানান, এ বারের বন্যায় বহু বন্যপ্রাণী চলে এসেছে মাথাভাঙা-২ ব্লকের বিভিন্ন এলাকায়। এ নিয়ে বন দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করছেন তাঁরা। বন দফতরের উদ্ধারকারী দল কুনকি হাতি, ড্রোন, ঘুমপাড়ানি বন্দুক-সহ বিশেষ প্রশিক্ষিত দল বন্যপ্রাণীগুলিকে উদ্ধারের চেষ্টা করছে।
আরও পড়ুন:
জানা গিয়েছে, বন দফতর মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ এবং এক জন সদস্যের চাকরির ব্যবস্থা করবে।