আজ, শুক্রবার রাতে উত্তরবঙ্গের ঐতিহ্যবাহী বোল্লাকালী পুজো। প্রায় ১৫ কেজি ওজনের সোনার গয়নায় সাজিয়ে তোলা হবে বোল্লা কালীকে। তাই আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেছে প্রশাসন। প্রতিবার বোল্লা মেলায় যোগ দিতে সকাল থেকে দলে দলে মানুষের ভিড় করেন মেলা প্রাঙ্গনে। তাই বালুরঘাট ও গঙ্গারামপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে দর্শনার্থীদের বোল্লা গ্রামে পৌঁছে দিতে সারারাত সরকারি ও বেসরকারি বাস, মিনিবাস, ট্রেকার, অটো চলবে বলে বাসমালিকদের সংগঠন জানিয়েছে।
দক্ষিণ দিনাজপুরে জেলা সদর বালুরঘাট থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দক্ষিণে বোল্লা গ্রামের মন্দিরে শুক্রবার গভীর রাতে সাড়ে ৭ হাত দীর্ঘ রক্ষাকালী মূর্তির পুজো দিয়ে শুরু হচ্ছে তিন দিনের মেলা। দর্শনার্থীদের চাহিদা মেনে রেল কর্তৃপক্ষও বালুরঘাট স্টেশন থেকে বোল্লা গ্রামের কাছে বিকোচ এলাকায় ট্রেনের স্টপেজ চালু করেছেন। মন্দির কমিটি জানাচ্ছেন, পুজোর রাতেই বোল্লা কালী পুজো দেখতে এক লক্ষেরও বেশি মানুষ সমবেত হন। চিনির বড় কদমা ও খাজা-বাতাসার মানতের ঢল নামে মন্দিরে। মূল কালীমূর্তির সঙ্গে মন্দির লাগোয়া আটচালায় আরও শতাধিক ছোট কালী মূর্তিকে পুজো করেন ভক্তরা। সোনা রুপোর অলঙ্কার নিয়ে মানতের পুজো দিতেও লম্বা লাইন হয়।
প্রতিবারের মত এবারেও প্রথা মেনে বোল্লা কালীকে কয়েক হাজার পাঁঠা ও একটি মোষ উৎসর্গ করা হবে বলে জানিয়ে মন্দির কমিটি সেই আয়োজন শুরু করেছে। কথিত আছে, ওই এলাকায় ডাকাতের অত্যাচার থেকে বাসিন্দাদের রক্ষা করতে বোল্লাকালী রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছিলেন। তাই মানুষের রক্ষাকালী হিসেবেই পূজিত হন তিনি।
মেলার তিন দিন এলাকা জুড়ে ব্যাপক পুলিশি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মেলার তিনদিন ৫০ জন অফিসার সমেত মোট ৫০০ জন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রায় ৪০০ জন সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ করা হয়েছে । মন্দির চত্বরে রয়েছে দু’টি মেটাল ডিটেক্টর। সিসিটিভি ক্যামেরা রয়েছে ছ’টি। বালুরঘাট-গঙ্গারামপুর দু’দিকের মূল রাজ্য সড়ক থেকে দক্ষিণে বোল্লা গ্রামের মোড়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মন্দির কমিটি ও স্থানীয় পঞ্চায়েতের তরফে দর্শনার্থীদের পানীয় জল ও শৌচাগারের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে।