দলে এক বৃদ্ধা। এক তরুণী। তিনজন মাঝবয়সী পুরুষ। তরুণীর পিঠে রুকস্যাক ব্যাগ। জামা কাপড় বোঝাই বড় বড় ব্যাগ প্রত্যেকের হাতে।
পাঁচজনের দলটিকে দেখে তাই পর্যটক বলেই মনে করেছিলেন সহযাত্রীরা। মেঘালয় থেকে বাসে শিলিগুড়ি এসে দার্জিলিং বা কলকাতা ঘোরার পরিকল্পনার কথাও বাসে কয়েকজনকে জানিয়েছিলেন। তাই শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বাস যাত্রীদের সন্দেহের কিছুই ছিল না। কিন্তু শিলিগুড়ি আসতেই বাসটিকে ঘিরে ফেলেন কেন্দ্রীয় রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরের (ডিআরআই) অফিসাররা। আর মিনিট পনেরোর কথোপকথনে সহযাত্রীরা বুঝে যান, সহযাত্রী পাঁচজন পর্যটক নন, সোনা পাচারকারী।
ডিআরও সূত্রের খবর, ধৃতদের হেফাজত থেকে প্রায় সাড়ে ২১ কেজি ওজনের ৭৯টি সোনার বিস্কুট মিলেছে। যার বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে ছয় কোটি টাকা। সন্দেহভাজন ওই পাঁচজনকে কলেজপাড়ার দফতরে নিয়ে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদের পর ওই সোনা উদ্ধার হয়। বিকাল ৫টা নাগাদ ধৃতদের শিলিগুড়ি এসিজেএম আদালতে তোলা হয়। বিচারক অভিযুক্তদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
কেন্দ্রীয় সংস্থার আইনজীবী অজয় চৌধুরী বলেন, ‘‘মায়ানমার সীমান্ত দিয়ে ওই সোনা এ দেশে ঢুকেছে বলে মনে হচ্ছে। ধৃতদের মাধ্যমে তা কলকাতার কোথাও পাচারের চেষ্টা করা হচ্ছিল। তদন্তে চক্রের লিঙ্কম্যান ও চাঁইদের চিহ্নিত করা হচ্ছে।’’ আদালত সূত্রের খবর, ধৃত দুই মহিলার নাম ডার্টলিঙ্গি, সয়িয়াঙ্গি। বাকিরা সাংলুনা, লালিয়ানচুঙ্গা, কুংলিয়ানা। সকলেই মিজোরামের আইজলের বাসিন্দা।
ডিআরআই সূত্রের খবর, এই নিয়ে গত তিনমাসে প্রায় ১১ কোটি টাকার সোনা উদ্ধার হল। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি সেবক থেকে দু’জনকে ৩ কোটি টাকার সোনা-সহ ধরা হয়। ১৫ মার্চ জংশন থেকে ১১ কেজি সোনা-সহ চারজনকে ধরা হয়েছিল। শেষবার, ২৬ মার্চ সাড়ে ৫ কেজি সোনা-সহ ৩ জন গ্রেফতার হয়। ধৃতদের অধিকাংশের বাড়িই উত্তর পূর্বাঞ্চলে। চোরাপথে সোনা সীমান্ত পেরিয়ে এনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পাঠানোর কয়েকটি চক্র উত্তর পূর্বাঞ্চলে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে গোয়েন্দারা জানান।