Advertisement
E-Paper

ভাঙন-ভয়ে বাড়ি ভেঙে ভিটে ছাড়া

পাড় ভাঙতে ভাঙতে এ দিন নদী পার অনুপনগর প্রাইমারি স্কুলের দোরগোড়ায় চলে এসেছে। যে কোনও মুহূর্তে স্কুলের দোতলা ভবনটিকে নদী গ্রাস করতে পারে আশঙ্কায় এ দিন স্কুলে পঠন-পাঠন বন্ধ করে শিক্ষকরাই স্কুলের যাবতীয় আসবাবপত্র সরানোর কাজে সকাল থেকেই নেমে পড়েন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৭ ০২:১১

মালদহের পারদেওনাপুর-শোভাপুর পঞ্চায়েতের পার অনুপনগরে গঙ্গার ভাঙন আরও ভয়াবহ আকার নিল। জল বাড়ায় বৃহস্পতিবার রাত থেকে ভাঙনের তীব্রতা বাড়তে শুরু করে এবং দুপুর পর্যন্ত আবাদি জমির পাশাপাশি আরও ৬টি পরিবারের ভিটেমাটি গ্রাস করে গঙ্গা। আতঙ্কে অন্তত আরও ২০টি পরিবার নিজেরাই তাঁদের ঘরবাড়ি ভেঙে নিতে শুরু করেছেন।

পাড় ভাঙতে ভাঙতে এ দিন নদী পার অনুপনগর প্রাইমারি স্কুলের দোরগোড়ায় চলে এসেছে। যে কোনও মুহূর্তে স্কুলের দোতলা ভবনটিকে নদী গ্রাস করতে পারে আশঙ্কায় এ দিন স্কুলে পঠন-পাঠন বন্ধ করে শিক্ষকরাই স্কুলের যাবতীয় আসবাবপত্র সরানোর কাজে সকাল থেকেই নেমে পড়েন। এ দিকে পার অনুপনগর এলাকায় সকালে সেচ দফতর ভাঙন রোধ করতে গেলে বাসিন্দারা বাধা দেন। পরে অবশ্য আলোচনা করে দুপুরের দিকে ফের কাজ শুরু হয়েছে।

বুধবার ভোর থেকে কালিয়াচক ৩ ব্লকের পারদেওনাপুর-শোভাপুর পঞ্চায়েতের গোলাপ মণ্ডলপাড়া, পরানপাড়া, পার অনুপনগর ও পারলালপুর এই চারটি গ্রামের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা জুড়ে যে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে, তা এ দিন আরও জোরালো হয়েছে। এ দিন গঙ্গার জলস্তরও বেড়ে হয়েছে ২৩.৬৪ মিটার। ইতিমধ্যে পার অনুপনগর গ্রামের প্রায় ১২টি পরিবারের ভিটেমাটি গঙ্গা গ্রাস করেছে। এ দিন সকাল থেকে ওই গ্রামের ফেকন চৌধুরী, আদিত্য বিশ্বাস সহ ৬টি পরিবারের ভিটেমাটি গঙ্গায় বিলীন হয়। এ ছাড়া ভাঙনের আতঙ্কে গোপাল বিশ্বাস, জিতেন বিশ্বাস, নিরঞ্জন সন্ন্যাসী, অগ্নীশ্বর বিশ্বাস সহ প্রায় ২৫টি পরিবার সকাল থেকে তাঁদের পাকা ঘরবাড়ি নিজেরাই ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিতে শুরু করেন। গোপালবাবু বলেন, ‘‘অনেক কষ্ট করে ঘরবাড়ি করেছিলাম। কিন্তু গঙ্গা ভাঙনের আতঙ্কে সব ভেঙে নিতে হল। না হলে তো সবটাই চলে যাবে।’’

স্কুলের সহকারী শিক্ষক মতিউর রহমান বলেন, ‘‘নদীর সঙ্গে ব্যবধান মাত্র ১০ হাত। তাই এ দিন আমরা সকাল থেকে স্কুলের যাবতীয় আসবাবপত্র সরিয়ে পরারলালপুর প্রাইমারি স্কুলে স্থানান্তরিত করার কাজ শুরু করেছি।’’ জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদের চেয়ারম্যান আশিস কুণ্ডু বলেন, স্কুলটিকে রক্ষা করার ব্যাপারে জেলাশাসককে জানিয়েছি।

সেচ দফতর জানিয়েছে, স্কুলটিকে ভাঙনের হাত থেকে বাঁচাতে প্রায় ১৬০ মিটার এলাকায় অস্থায়ীভাবে ভাঙন রোধের কাজ হচ্ছে। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, গত দু’বছর ধরে এলাকায় ভাঙন চলছে অথচ শুখা মরসুমে কোনও কাজ না করে এখন প্রবল ভাঙনের মুখে কাজ শুরু করা হয়েছে। অবশ্য এলাকার প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী রাধেশ্যাম সরকার হস্তক্ষেপ করে পরিস্থিতি সামাল দেন বলে জানা গিয়েছে। পরে কাজও শুরু হয়েছে। জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, সেচ দফতরকে বলা হয়েছে ভাঙন রোধের কাজ দ্রুত করে স্কুল সহ ঘরবাড়ি রক্ষা করতে। সেচ দফতরের মালদহ ডিভিশনের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রণব সামন্ত বলেন, ‘‘আমরা চেষ্টা করছি। কতটা সফল হব জানা নেই।’’

Ganges Flood Malda
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy