শহরের প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে শিলিগুড়ি কলেজের ঐতিহ্যবাহী মাঠ। সবুজ গালিচায় সকালে প্রাতর্ভ্রমণে আসেন প্রবীন থেকে নবীন৷ আবার কলেজ শুরুর আগেই মাঠ ছেড়ে যান সকলে। কিন্তু এখন নিজেদের কলেজের মাঠেই ঢুকতে গিয়ে বাধার মুখে পড়ছেন পড়ুয়ারা। কারণ, কলেজ মাঠে ক্রিকেট প্রশিক্ষণকেন্দ্র খুলেছে একটি ক্লাব। আগে মাঠের একটি নির্দিষ্ট অংশে নেটেই প্রশিক্ষণ সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এখন সেই প্রশিক্ষণ চলছে গোটা মাঠে। তৈরি হয়েছে একাধিক কংক্রিটের নেট প্র্যাক্টিসের জায়গা৷ কারা অনুমতি দিলেন? কলেজের মাঠ কি লিজ়ে দেওয়া হয়েছে? প্রশ্নের সঠিক জবাব নেই কারও কাছে। মাঠ দখলের অভিযোগে সরব হচ্ছেন পড়ুয়ারা।
শিলিগুড়ি কলেজের পড়ুয়াদের অভিযোগ, দিন কয়েক আগে মাঠে বল লেগে আহত হয়েছিলেন এক ছাত্রী। মাঠ দখলের অভিযোগ করে তাঁরা অধ্যক্ষের কাছে পিটিশন জমা দেন৷ কলেজ চলাকালীন কেন কোনও ক্লাব প্রশিক্ষণ শিবির চালাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে পরিচালন সমিতি জরুরি বৈঠক ডাকে। কিন্তু তার ফল অজানা।
কলেজ সূত্রে খবর, পড়ুয়ারা যে পিটিশন জমা দিয়েছিলেন, তার একটি প্রতিলিপি গিয়েছে সংশ্লিষ্ট ক্লাবেও। কিন্তু মাঠ ব্যবহারে অনুমতি দিয়েছিলেন কি না, তার স্পষ্ট জবাব নেই অধ্যক্ষের কাছে। সদুত্তর নেই ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে। তা ছাড়া তাঁদের কাছে অনুমতিপত্র বা মউ চুক্তির কাগজও নেই। এই প্রেক্ষিতে শিলিগুড়ির মেয়র গৌতম দেব বলেন, ‘‘কলেজ এবং ক্লাব দুই পক্ষকেই আলোচন করে বিষয়টি নিষ্পত্তি করতে হবে৷’’ শিলিগুড়ি কলেজের পরিচালন সমিতির সভাপতি জিনিয়া মিত্র বলেন, ‘‘এই বিষয়টি নিয়ে আমাদের জরুরি বৈঠক ছিল। প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে ছুটে আসা বল লেগে এক ছাত্রী আহত হয়েছেন। পড়ুয়ারা স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। এখন মাঠ থেকে লোহার খাঁচা সরানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অধ্যক্ষ যাতে ক্লাব কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেন, সেটাও বলা হয়েছে। তা ছাড়া যে ক্রিকেট পিচ তৈরি করা হয়েছে, সেটাও তুলে দিতে বলা হয়েছে।’’
শিলিগুড়ি কলেজের অধ্যক্ষ সুজিত বসু জানাচ্ছেন, ওই ক্লাব দীর্ঘ দিন ধরে প্রশিক্ষণ শিবির করছে। সে জন্য অনুমতি নেয়নি তারা। কলেজ মাঠের ভাড়া বাবদ কোনও অর্থ পায় না। তার পরেও কী ভাবে কলেজের মাঠ দখল করে প্রশিক্ষণ শিবির চলছে? অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘আমরা পরিচালন সমিতির সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেব।’’