Advertisement
E-Paper

ভুভুজেলা থেকে রং-মশাল, উৎসব শহরে

গায়ের অর্ধেকটা অংশ লাল, অর্ধেকটা হলুদ রং মেখে গলা ফাটাচ্ছেন প্রিয় দলের হয়ে। কেউ কেউ রকমারি টুপি পরেছেন লাল হলুদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০২:৪৭
ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা  ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

ইস্টবেঙ্গল সমর্থকেরা ছবি: বিশ্বরূপ বসাক

গায়ের অর্ধেকটা অংশ লাল, অর্ধেকটা হলুদ রং মেখে গলা ফাটাচ্ছেন প্রিয় দলের হয়ে। কেউ কেউ রকমারি টুপি পরেছেন লাল হলুদের।

অন্তত ১০/১২ জনের এক একটি দল স্টেডিয়ামের বাইরে সকাল থেকেই হইচই করছে। কলকাতা থেকে এসেছে অনেকে। অনেকে জলপাইগুড়ি, কোচবিহার-সহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে।

তাঁদের মতোই আরেক দল সমর্থকের বিশেষত্ব সবুজ মেরুন। মাথায় পালতোলা নৌকর মুকুট। শহরের একেকটি হোটেলের উপর থেকে ঝুলছে ঢাউস রঙের লাল-হলুদ বা সবুজ মেরুন পতাকা। স্টেডিয়াম লাগোয়া রাস্তা, মোড়গুলিতে ফেরি হচ্ছে ইস্টবেঙ্গল, মোহনবাগানের জার্সি, ভুভুজেলা বাঁশি। গালে মুখে রং দিয়ে প্রিয় দলের পতাকা এঁকে দিচ্ছেন অনেকে। ডার্বি দেখতে আসা অতিথি সমর্থকদের জন্য হোটেলগুলিতে বিভিন্ন রকম রেসিপি।

গত কয়েকদিন ধরেই কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামের কাছে বিধানমার্কেটে বিভিন্ন দোকানে কেনাকাটা বেড়েছে খেলা দেখতে আসা ওই সমর্থকদের জন্য। রবিবার ভিড় ছিল সবচেয়ে বেশি। সকাল থেকেই মার্কেটে একটি চায়ের দোকানে ভিড় লেগে রয়েছে। প্রিয় দলের জার্সি পরে একসঙ্গে মোবাইলে সেলফি তুলছেন অনেকে। রবিবার কি না রাস্তায় ভিড় দেখে বোঝার উপায় নেই। স্টেডিয়ামের কাউন্টারে সকাল থেকেই ভিড় করে টিকিট কিনেছেন অনেকে।

সাড়ে চারটায় ডার্বি শুরুর আগে ভিড়টা আছড়ে পড়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা স্টেডিয়ামে। ভিভিআইপি গ্যালারির ৪৮০টি চেয়ার তো ভর্তিই হয়েছেই, সেখানে দাঁড়িয়েও আছেন অনেকেই। কী করে ঢুকল বাড়তি লোক? কেউ জানেন না। তার দক্ষিণ পাশের গ্যালারি মোহনবাগান সমর্থকদের জন্য নির্দিষ্ট করা। সেখানে সবুজ-মেরুণ আবির উড়ছে। রং-মশাল জ্বলছে। তাও সবুজ-মেরুণের মিশেলে। বাকি সমস্ত গ্যালারিই লাল-হলুদের দখলে। সেখানে লাল-হলুদ রঙের আবির ভাসছে, রং মশাল জ্বলছে খেলার আগে থেকেই। মোহন সমর্থকেরা ঢাউস পতাকা ছড়িয়ে দিচ্ছিলেন গ্যালারিতে তাদের সমর্থকদের মাথার উপর দিয়ে। সঙ্গে হুল্লোড়। প্রত্যুত্তর দিল মাঠএর উল্টোদিকে লালহলুদের গ্যালারি। হুল্লোড় করে-ই। হাতে হাতে ধরা লাল হলুদ ছোট ছোট পতাকা। প্রায় সকলের। কখনও ‘ই’ ‘বি’ লেখা অতিকায় পতাকা খুলে সমর্থকরা মাথায়র উপর দিয়ে সরিয়ে দিচ্ছিলেন গ্যালারির মাঝখান থেকে দুই প্রান্তের দিকে। বিপরীতক্রমে দুই প্রান্ত থেকে মাঝখানে কাছাকাছি আনা হচ্ছিল মাথার উপর দিয়ে। ২৭ হাজার টিকিট ছাপিয়েছিল সংগঠন ইস্টবেঙ্গল। গ্যালারি সেই মতো ভরে উঠেছে। ম্যাচ দেখতে মাঠে থাকা ভারতীয় ফুটবল কোচ স্টিফেন কনস্টেনটাইন, ভারতীয় ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ভাইচুং ভুটিয়া দর্শকদের উৎসাহের প্রশংসা করেছেন।

খেলা শুরু হতেই হুল্লোড় বাড়ে। প্রথমার্ধে সনি নর্ডি, কাতসুমিরা ঘনঘন আক্রমণে উঠতেই সবুজ মেরুন গ্যালারি ফেটে পড়ছিল চিৎকারে। বেশ কিছু গোলের সুযোগও এসেছিল। তা সমর্থকদের উৎসাহ জোগচ্ছিল। ভুভুজেলা বাজছিল। উল্টো দিকে ওয়েডসন, উইলিস প্লাজাদের পায়ে বল পড়লেই ঢাক, ঢোল, কাসর ঘন্টা বাজছিল লাল-হলুদের গ্যালারিতে। গোলশূন্য হয়ে ম্যাচ অমীমাংসিত না হলে হয়তো প্রিয় দলের হয়ে গলা ফাটানো আরও বাড়ত। বেহালার অরিন্দম চক্রবর্তী, হালিশহর থেকে আসা পার্থ সাহাদের মতো মোহন ফ্যানসদের কথায়, ‘‘ডার্বির আনন্দটাই আলাদা। ম্যাচ জিতলে আরও ভাল লাগত। তবে এক পয়েন্ট মিলেছে। সেটাও বড় ব্যাপার। প্রথমার্ধে সনি, কাতসুমিরাইতো খেলে গেলেন। একটুর জন্য কয়েকটা গোলের সুয়োগও নষ্ট হয়েছে।’’

সৌমেন চাকি, সুমন সরকার, অনীক সাহাদের মতো লাল হলুদ সমর্থকেরা উচ্ছ্বসিত। তাদের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এদিন ডার্বি ম্যাচ জিততে না পারলেও আমরা এখনও শীর্ষে। প্রথমার্ধে কিছুটা পিছিয়ে পড়লেও দ্বিতীয়ার্ধে ওয়েডসন, প্লাজারা ভাল খেলেছে। দলের ফুটবলারদের নিয়ে আমরা খুশি।’’ মোহনবাগান গ্যালারি থেকে ফানুসও উড়েছে।

খেলার জন্য এদিন বেলা দেড়টার পর স্টেডিয়ামের আশেপাশের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয় পুলিশ। পুলিশ সুপার চেলিং সেমিং লেপচা জানান, কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি বলে তিনি জানিয়েছেন।

Derby Match Football Lovers
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy