Advertisement
E-Paper

এ কেমন পরীক্ষা!

দেখলে মনে হবে যেন আড্ডা চলছে। আসলে চলছে পরীক্ষা। শুক্রবার স্নাতকস্তরের বাংলা বিষয়ের প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় এমনই ছবি ধরা পড়ল মালদহ কলেজে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৭ ০২:০২
ঠাসাঠাসি: বারান্দায় বসে এ ভাবেই পরীক্ষা দিতে হল সকলকে। শুক্রবার মালদহ কলেজে। —নিজস্ব চিত্র।

ঠাসাঠাসি: বারান্দায় বসে এ ভাবেই পরীক্ষা দিতে হল সকলকে। শুক্রবার মালদহ কলেজে। —নিজস্ব চিত্র।

দেখলে মনে হবে যেন আড্ডা চলছে। আসলে চলছে পরীক্ষা। শুক্রবার স্নাতকস্তরের বাংলা বিষয়ের প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় এমনই ছবি ধরা পড়ল মালদহ কলেজে।

কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বন্দ্বের জেরে নাজেহাল হতে হল পরীক্ষার্থীদেরকে। তাঁদের অভিযোগ, গরমের মধ্যে বারান্দা, ঘরের মেঝেতে বসে ঠেলাঠেলি করে পরীক্ষা দিতে হল। ভিড়ের ঠেলায় খাতাতে ঠিক মতো লেখতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে।

কলেজের বারান্দার মেঝেতে বসেই পরীক্ষা দিয়েছেন তাঁরা। এমনকি, শ্রেণি কক্ষে এক বেঞ্চে পাঁচ জন করে পরীক্ষার্থী বসানো হয়েছে। ফলে এ দিনের পরীক্ষা ব্যবস্থা নিয়েই উঠতে শুরু করল প্রশ্ন। অভিযোগ, পরীক্ষায় গণ টোকাটুকি রুখতে সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে নজরদারি চালানো হচ্ছে। অথচ হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীদের এক সঙ্গে বসিয়ে পরীক্ষা নেওয়া হলে কী ভাবে সুষ্ঠু ভাবে তা সম্পন্ন হবে? এমন পদ্ধতিতে পরীক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের মধ্যে। দু’পক্ষই একে অপরের প্রতি অভিযোগের আঙুল তুলেছেন।

মালদহের জেলা শাসক তথা মালদহ কলেজের প্রশাসক তন্ময় কুমার চক্রবতী বলেন, ‘‘বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষ মিলে পরীক্ষার্থীদের কোথায় গিয়ে পরীক্ষা দিতে হবে, সে সব খতিয়ে দেখেছিলেন। তারপরেও কেন এমন হল তা খোঁজ নিয়ে দেখব। এ ছাড়া কলেজের পরিকাঠামোর উন্নয়নের বিষয়টিও গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।’’

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য গোপাল মিশ্র বলেন, ‘‘কলেজ কর্তৃপক্ষের একগুঁয়ে মনোভাবের জন্য এ দিন এমন ভাবে পরীক্ষা ব্যবস্থা চলেছে। আমি শিক্ষামন্ত্রীকে পুরো ঘটনাটি জানিয়েছি। কারণ এদিনের ঘটনা কখনও মেনে নেওয়া যায় না।’’

গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে তিন জেলার ২২টি কলেজে এ দিন থেকে শুরু হয়েছে প্রথম বর্ষের স্নাতক স্তরের বাংলা বিষয়ের পরীক্ষা। সব কলেজে সুষ্ঠুভাবে পরীক্ষা শুরু হলেও বির্তক তৈরি হয়েছে মালদহ কলেজকে নিয়ে। এ দিন কলেজে দেখা গিয়েছে প্রতিটি বেঞ্চে পাঁচ জন করে পরীক্ষার্থীকে বসানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, কলেজের সাইকেল স্ট্যান্ড, বারান্দায় বসানো হয়েছে পরীক্ষার্থীকে।

এমনকী, বারান্দার মেঝেতে বসিয়েই পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, মালদহ কলেজে মোট ৩০টি ঘর রয়েছে। অর্থাৎ ১৪০০ পরীক্ষার্থীকে পরীক্ষা নেওয়ার পরিকাঠামো রয়েছে। তবে কলেজে সিট পড়েছে কালিয়াচক ও পাকুয়াহাট ডিগ্রি কলেজের প্রায় চার হাজার জন ছাত্র-ছাত্রীর। এই নিয়ে সপ্তাহ দেড়েক ধরে চলছে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ কর্তৃপক্ষের দ্বন্দ্ব। এমনকী, ইস্তফা দেওয়ারও ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন মালদহ কলেজের অধ্যক্ষ উত্তমকুমার সরকার। যদিও সেই সময় জেলা শাসকের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছিল।

উত্তমবাবু এ দিন বলেন, ‘‘আমাদের পরিকাঠামোর বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে আমরা লিখিত ভাবে জানিয়েছি। তবুও তাঁরা কোনও কর্ণপাত করেননি। যার জন্য আমাদের বাধ্য হয়েই বারান্দায়, সাইকেল স্ট্যান্ডে পরীক্ষা নিতে হয়।’’

যদিও এখানে কলেজ কর্তৃপক্ষের মানসিকতাকেই দায়ী করেছেন গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা সমূহের নিয়ামক সনাতন দাস। তিনি বলেন, ‘‘পরিকাঠামো খতিয়ে দেখার জন্য প্রতিনিধি দলকে পাঠানো হয়েছিল। তারপরই আমরা বাড়তি বেঞ্চ পাঠিয়েছি। কোথাও কোনও সমস্যা না হলেও শুধুমাত্র মালদহ কলেজেই সমস্যা হল। এ ব্যাপারে তদন্ত করা হবে।’’

College University Students Exam
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy