Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

কোন্দলে এ বার তৃণমূল-ত্যাগ চার নেতানেত্রীর

প্রার্থী তালিকা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরের গোলমালে এ বার দল ছাড়লেন প্রাক্তন এক কাউন্সিলর-সহ ৪ জন নেতানেত্রী। বুধবার তাঁদের একাংশ দল ছাড়ার পাশাপাশি অন্য দলে যোগদানের কথাও ঘোষণা করেন। দলেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রার্থী তালিকা ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে আরও কয়েকজন। শেষ পর্যন্ত দেখে তারা দল ছাড়ার জন্য এক পা এগিয়ে রয়েছেন। দলের জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “সবাইকে প্রার্থী করা যাবে না। কে কী করছেন তা নিয়ে কিছু বলতে চাই না।”

তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করছেন প্রাক্তন কাউন্সিলর প্রকাশ দাস। —নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগদান করছেন প্রাক্তন কাউন্সিলর প্রকাশ দাস। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৫ ০৩:২১
Share: Save:

প্রার্থী তালিকা নিয়ে তৃণমূলের অন্দরের গোলমালে এ বার দল ছাড়লেন প্রাক্তন এক কাউন্সিলর-সহ ৪ জন নেতানেত্রী। বুধবার তাঁদের একাংশ দল ছাড়ার পাশাপাশি অন্য দলে যোগদানের কথাও ঘোষণা করেন। দলেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রার্থী তালিকা ঘোষণার অপেক্ষায় রয়েছে আরও কয়েকজন। শেষ পর্যন্ত দেখে তারা দল ছাড়ার জন্য এক পা এগিয়ে রয়েছেন। দলের জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, “সবাইকে প্রার্থী করা যাবে না। কে কী করছেন তা নিয়ে কিছু বলতে চাই না।”

দলের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তৃণমূল ছেড়ে এ দিন কংগ্রেসে যোগ দেন প্রাক্তন কাউন্সিলর প্রকাশ দাস। গত পুর নির্বাচনে তিনি ৩২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে জিতেছিলেন। তাঁর অভিযোগ, এ বার প্রার্থী চূড়ান্ত করতে ওয়ার্ডে কোনও আলোচনাই করা হয়নি। দল জয়দীপ নন্দীকে দায়িত্ব দিয়েছিল। তিনি ৩৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ছিলেন। এ বার তিনি নিজের ওই ওয়ার্ডে লোকজন নিয়ে মিটিং করে ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন বলে অভিযোগ। প্রকাশবাবু বলেন, “দলের জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেবকে জানিয়েছিলাম। তিনি এলাকায় যাবেন বলেছিলেন। কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে ঠিক করবেন বলেছিলেন। কিন্তু আর এলাকায় আসেননি। এ সব দুর্নীতি মেনে নিতে না পেরেই এ দিন দল থেকে ইস্তফা দিয়েছি। এর আগে বহু বছর এই ওয়ার্ডে বিরোধী দলের বহিরাগত প্রার্থীরাই জিতে এসেছে। বহিরাগত নয় এটা প্রচার করেই আমি জিতেছিলাম। অথচ এ বার সেই বহিরাগতকেই তৃণমূল প্রার্থী করছে।” দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, “দলে দুর্নীতি হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিকল্প না থাকলেও তাঁর ডান দিকে বাঁ দিকে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা ঠিক নন। এমন ভাবে চললে আগামী কয়েক বছরে দল সাইনবোর্ডে পরিণত হবে।”

এ দিন তৃণমূল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী ভারতী পাত্র। তিনি এ দিন কংগ্রেসেও যোগ দেন। বিকেলে ওয়ার্ডে সভা ডেকে তাঁর অনুগামীদেরও কংগ্রেসে যোগদান করান। ভারতী দেবী বলেন, “দীর্ঘদিন ধরেই তৃণমূলের মধ্যে অরাজকতা দেখছি। সেখানে সম্মান পাইনি। দলের মধ্যই টিকিট নিয়ে গোলমাল করা হচ্ছে। ভিতরে ভিতরে নানা দুর্নীতি চলছে। তাই আর থাকব না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” ওই ওয়ার্ডে তৃণমূলের তরফে শ্রাবণী দত্তকে প্রার্থী করার কথা ভাবা হচ্ছে। অথচ প্রার্থী ঠিক করার ক্ষেত্রে দলীয় নেতৃত্ব ওয়ার্ডে এসে কারও সঙ্গে কথা বলেননি বলে অভিযোগ। এ সব মেনে নিতে পারেননি ভারতী দেবী। তিনি এক সময় কংগ্রেস করতেন। সেই মতো তিনি কংগ্রেসেই যোগ দেন।

একই সঙ্গে এ দিন সাংবাদিক বৈঠক ডেকে দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেন জেলা তৃণমূলের প্রাক্তন কোষাধ্যক্ষ অমরেশ গোয়েল। তাঁর স্ত্রীকে ১১ নম্বর ওয়ার্ড থেকে দলের প্রার্থী করার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে তিনি জানান, প্রার্থী না হওয়া বা সেই কারমে দল ছাড়েননি। দলে তাঁর কথার গুরুত্ব দেওয়া হয় না। সম্মান না দেওয়ায় তিনি দল ছেড়েছেন। অন্য দিকে মঙ্গলবারই দল ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন ৩১ নম্বর ওয়ার্ডের তৃমমূল নেত্রী জনা বাগচী। এ দিন তিনি বিজেপি’তে যোগ দেন।

৩, ৩৭, ২৯ নম্বরের মতো ওয়ার্ডে প্রার্থী নিয়ে তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠী কোন্দল চলছেই। গোপাল সাহাকে প্রার্থী করার দাবিতে তাঁর অনুগামীরা ৩ নম্বর ওয়ার্ডে ধর্না মঞ্চ করে এ দিনও অবস্থান করেন। তাঁদের দাবি, বহিরাগত কাউকে এই ওয়ার্ডে প্রার্থী করা যাবে না। দল সূত্রেই খবর, ওই ওয়ার্ডে ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তথা প্রাক্তন কাউন্সিলর সঞ্জয় পাঠককে প্রার্থী করতে চায় দল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE