উন্মাদনা: বিশ্বকাপ দেখতে গিয়ে ভাতের স্বাদ পেয়ে আহ্লাদিত এই বঙ্গসন্তানরা। নিজস্ব চিত্র
শুকনো মাংস, স্যালাড, আনাজ সেদ্ধ আর বিয়ারের ছড়াছড়ি চারদিকে। দশ দিন পর ভাত খাওয়ার ইচ্ছে হয়েছিল তিন জনের। রেস্তরাঁয় গিয়ে সাদা ভাত চাইতেই পাল্টা প্রশ্নের মুখোমুখি তাঁরা। “কত কেজি চাই?” ভাত কেজি মেপে! এমনও হয় নাকি! তিন জনে ঘাবড়ে গেলেও রাশিয়ার এটাই দস্তুর। জলপাইগুড়ি থেকে বিশ্বকাপের প্রথম পর্যায়ের খেলা দেখতে রাশিয়া গিয়েছিলেন জলপাইগুড়ির চার বাসিন্দা। ফিরে আসার পরে তাঁরাই শহরকে শোনাচ্ছেন ভাত মেপে খাওয়ার গল্প। সঙ্গে শোনাচ্ছেন, রাত আটটাতেও রাশিয়ায় কড়া রোদ থাকার গল্প। আর দশটার পরে রোদ পড়ে আসে টলস্টয়-গর্বাচভদের দেশে।
রাজু চক্রবর্তী, মনোজ মাহাত, আনন্দ ঘোষ এবং মানস বিশ্বাস চারজন যখন বিশ্বকাপ দেখতে যাবেন বলে ঠিক করেছেন, ততদিনে টিকিট বুকিং প্রায় শেষের পথে। শেষের দিকের ম্যাচের টিকিট পাননি। তাতেও মন খারাপ না করে উদ্বোধন সহ পরের ম্যাচগুলি দেখতে রাশিয়া উড়ে গিয়েছিলেন চার জন। জাপান-কলোম্বিয়া ম্যাচ দেখতে ২৬ ঘণ্টা ট্রেন চেপে গিয়েছিলেন। ম্যাচের পর সেখান থেকে সারানস শহরে গিয়ে একটি হোটেলে ভারতীয় খাবারের নাম দেখে ঢুকেছিলেন। ভাত পাওয়া যাবে শুনে চমকে উঠেছিলেন সকলে। ভাত আলুর তরকারি এবং মুরগির ঝোল খেতে চাওয়ার পরে যা হল তাতে আরও বিস্মিত হতে হয়।
যে প্লেটে খাবার দেওয়া হবে সেটি আগে ওজন করানো হয়। বেসরকারি প্যাথোলজি ল্যাবের অন্যতম কর্ণধার রাজুবাবু বলেন, “চিনামাটির প্লেট প্রথমে ওজন করে আমাদের দেখানো হয়। তখনও বুঝিনি কী হতে চলেছে। তারপর বলল কত পরিমাণ ভাত খাব। বুঝুন তো, ভাত আবার মেপে খাওয়া যায় নাকি।” সকলে একটি করে লেগপিস পেয়েছিলেন। মনোজবাবুর কথায়, “আমরা বাড়িতে যেমন খাই, আলু, পেঁয়াজের ঝোল দিয়ে মুরগির মাংস তেমন নয় বটে. তবে খেতে মন্দ হয়নি।”
রাশিয়ায় ভারতের পতাকাও সঙ্গে করে নিয়ে গিয়েছিলেন জলপাইগুড়ির এই ফুটবলপ্রেমীরা। রাশিয়া, জাপাম, কলোম্বিয়া, ইরান, মরোক্কোর খেলা দেখেছেন। বারো দিন ছিলেন রাশিয়ায়। বিদেশ বিভুঁইয়ে কি খাবার পাওয়া যাবে সে আশঙ্কায় বিস্কুট, চানাচুর শুকনো খাবার নিয়ে গিয়ে গিয়েছিলেন। “নিজের শহর থেকে প্রায় ছয় হাজার কিলোমিটার দূরে যে মাংস ভাত খেতে পারব তা আন্দাজ করতে পারিনি,“ বললেন রাজুবাবু।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy