পুলিশের অনুমতি ছাড়া মিছিল করায় পাহাড়ের চার পার্টির ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের দশ জন নেতানেত্রীর নামে মামলা করেছিল পুলিশ। সম্প্রতি সমন পাঠিয়ে ওই নেতানেত্রীদের আদালতে আত্মসমর্পণ করতে পুলিশ নির্দেশ দিয়েছে। সেই নির্দেশ ঘিরে ফ্রন্টের নেতাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়েছে। রবিবার আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পুলিশের নির্দেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলার করারও হুমকি দিলেন ফ্রন্টের নেতারা। গত মাসে মদন তামাঙ্গ হত্যা মামলায় সিবিআই-র চার্জশিটে নাম থাকা অভিযুক্তদের ধরার দাবিতে অনশনে বসেন গোর্খা লিগ সভানেত্রী ভারতী তামাঙ্গ। অনশন শুরু হওয়ার আগে ফ্রন্টের তরফে একটি শৈলশহরে একটি মিছিল হয়। তাকে ঘিরেই পুলিশ মামলা করে।
গত ২০১০ সালের ২১ মে দার্জিলিঙের ক্লাব সাইড রোডে মদন তামাঙ্গ খুন হন। রাজ্য পুলিশ, সিআইডির পর আদালতের নির্দেশে তদন্তভার যায়, সিবিআই-র হাতে। সম্প্রতি সিবিআই মামলার চার্জশিটে মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গ-সহ ২৩ জনের নাম উল্লেখ করেছে। তাঁদের গ্রেফতারের দাবিতে গত ১৪ জুন ভারতীদেবী ম্যাল চৌরাস্তার অনশন শুরু করেন। তার আগেই ওই মিছিল করেছিল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট।
ফ্রন্টের মুখপাত্র শঙ্কর হাং সুব্বা জানান, তাঁদের বিরুদ্ধে করা মামলার ভিত্তিতে ১০ জনকে ওই সমন পাঠানো হয়েছে। আগামী ২৮ জুলাই আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করার কথা বলা হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘সেখানে বলা হয়েছে, আমরা ১৪ জন না কি হাইওয়েতে অবরোধও করেছিলাম। আমরা ঠিক করেছি, পুলিশের এই আচরণের বিরুদ্ধে এই সপ্তাহে ফ্রন্ট হাইকোর্টের দ্বারস্থ হবে। আমরা পাহাড়ে যা করছি, সবই গণতান্ত্রিক রক্ষার জন্য করছি। কোথাও কারও কোনও সমস্যা করা হয়নি। আমরা প্রকাশ্য সভার অনুমতিও চেয়েছিলাম। তা দেওয়া হয়নি। তাই আমরা হলের ভিতরে সভা করি। পরে পুলিশের আচরণের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে একটি মিছিল হয়।’’ ফ্রন্ট সূত্রের খবর, সিপিআরএম নেতা আরবি রাই, গোবিন্দ ছেত্রী, গোর্খা লিগের ভারতী তামাঙ্গ, লক্ষণ প্রধান এবং প্রতাপ খাতি, জিএনএলএফের মন ঘিসিঙ্গ, প্রবীণ জিম্বা, মণি কামাল ছেত্রী, ব্রিন লামা ছাড়াও সিকিম-দার্জিলিং একীকরণ মঞ্চের শঙ্কর হাং সুব্বার নামে মামলা করে সমন পাঠানো হয়েছে। ফ্রন্টের মুখপাত্র জানান, ‘‘আমরা হাইকোর্টে যে মামলা করব তাতে ভারতীদেবীর অনশন মঞ্চে গিয়ে পুলিশের আচরণ, জোর করে অনশন তোলার চেষ্টার বিষয়গুলিও থাকবে।’’
ভারতীদেবী এদিন জানান, ‘‘আমি স্বামীর খুনের বিচার চেয়ে অনশন করেছিলাম। পুলিশ এসে বাড়িতে গিয়ে অনশন করার কথা বলেছিল। আমরা সব সময় সমস্ত কর্মসূচির অনুমতি চেয়ে আবেদনও করি। সেই সময়ও করা হয়েছিল। পুলিশ পর্যটন মরসুমের কথা বলে তা দিতে অস্বীকার করেছিল।’’
এরই মধ্যে পুলিশের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্ত্বের অভিযোগ তুলেছেন গোর্খা লিগের প্রতাপ খাতি। তিনি বলেন, ‘‘আমরা অনশন করলে, মিছিল করে মামলা হয়। সমন পাঠানো হয়। অথচ তৃণমূল সম্প্রতি শ্রম দফতরের সামনে অনশন করল। বিক্ষোভ দেখাল, সেখানে কোনও মামলা হল না। পাহাড়ের পুলিশ অফিসারদের একাংশ পক্ষপাতিত্ব করছেন।’’
পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, কোথাও কোনও পক্ষপাতিত্বের বিষয় নেই। আর অনশন মঞ্চে গিয়ে বাজে ব্যবহারের কোনও বিষয় নেই। ভারতীদেবীর শরীরের কথা ভেবে তাঁকে অনশন তুলে নিতে বলা হয়েছিল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy