Advertisement
E-Paper

ফুলবাড়ি বাণিজ্য সীমান্তে বন্ধই আমদানি

কাঁটাতারের বেড়ার মাঝে থাকা বড় লোহার গেট পার হয়ে প্রতিদিন অন্তত দেড়শো থেকে দু’শো পণ্যবাহী ট্রাক ফুলবাড়ি থেকে বাংলাদেশে ঢোকে। বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পার হয়ে এ দেশে তথা ফুলবাড়িতে আসে শুধু ফাঁকা ট্রাকই।

অনির্বাণ রায়

শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৬ ০২:৩১

কাঁটাতারের বেড়ার মাঝে থাকা বড় লোহার গেট পার হয়ে প্রতিদিন অন্তত দেড়শো থেকে দু’শো পণ্যবাহী ট্রাক ফুলবাড়ি থেকে বাংলাদেশে ঢোকে। বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পার হয়ে এ দেশে তথা ফুলবাড়িতে আসে শুধু ফাঁকা ট্রাকই। দেড় বছর ধরে ফুলবাড়ি স্থল বন্দর দিয়ে আমদানি হচ্ছে না। বাংলাদেশ থেকে যে সব পণ্য এ দেশে আমদানি হয় তা ঢুকছে হয় চ্যাংরাবান্ধা নয়তো হিলি সীমান্ত দিয়ে। যার জেরে আমদানির খরচও অনেকটাই বেড়ে যাচ্ছে বলে দাবি শিলিগুড়ির ব্যবসায়ীদের। প্রশ্ন উঠেছে তবে ফুলবাড়িতে বন্দর তৈরি করে লাভ কী হল?

তিন বছর আগে ফুলবাড়ি বাণিজ্য পথে বাংলাদেশের সঙ্গে আমদানি-রফতানির অনুমতি মেলে। প্রথম দিকে ফলের রস, পানীয়, নামী ব্র্যান্ডের খাদ্যসামগ্রী, ব্যাটারি বাংলাদেশ থেকে ফুলবাড়ি হয়ে আমদানি হলেও, নানা সমস্যার কারণে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে দাবি। ২০১৪ সালের শেষের দিকে ব্যাটারি আমদানির পরে আর প্রায় কিছুই ফুলবাড়ি হয়ে ভারতে ঢোকেনি। ব্যবসায়ীদের একাংশের দাবি, ফুলবাড়ি বন্দরের পরিকাঠামো এবং বেশ কিছু সরকারি নিয়মই ফুলবাড়ি বাণিজ্য পথে আমদানির কাঁটা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বাংলাদেশ থেকে যে ট্রাক ভারতে ঢোকে তার দীর্ঘ তল্লাশি-পরীক্ষা হয়। প্রথমত সব নথিপত্র সঠিক রয়েছে কি না, তা যাচাই করা হয়। যে খাদ্য-পানীয় অথবা প্যাকেটজাত পণ্য রয়েছে তার নমুনা পরীক্ষা হয়। শুল্ক দফতরের তরফেই এই নমুনা পরীক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের গবেষণাগারে পাঠানো হয়। সেই রিপোর্ট দেখে ছাড়পত্র মিললেই পণ্য বোঝাই ট্রাক ঢুকতে দেওয়া হয়। এই প্রক্রিয়া সারতে তিন থেকে চার দিন লেগে যায়। এই সময়টায় বাংলাদেশ থেকে সীমান্ত পেরিয়ে আসা পণ্য রাখার যথাযথ গুদাম বা পরিকাঠামো ফুলবাড়িতে নেই বলে অভিযোগ। খাদ্য সামগ্রী অথবা পোশাক খোলা আকাশের নীচে ট্রাকে রেখে দেওয়া সম্ভব নয়। তাতে খরচও বেশি, ক্ষতির আশঙ্কাও রয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের দাবি। তাই দু’একবার ফলের রস, পোশাক, ব্যাটারি আসার পর বন্ধ হয়ে গিয়েছে আমদানি।

শুল্ক দফতরের আধিকারিকরাও এই সমস্যার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। শুল্ক দফতরের সহকারী কমিশনার উপেন্দ্র কুমার ধ্রুব বলেন, ‘‘দফতর একটি হিমঘর এবং গুদাম ফুলবাড়িতে তৈরি করছে। রাজ্য সরকার এবং বেসরকারি উদ্যোগেও কিছু গুদাম চালু হলে ভাল হয়।’’

সমস্যা রয়েছে আরও। শিলিগুড়ি তথা উত্তরবঙ্গের অন্যতম বৃহৎ বণিক সংগঠন ফোসিনের সম্পাদক বিশ্বজিত দাস জানিয়েছেন, ভারতে পণ্য পাঠাতে গেলে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের বর্তমানে শিলিগুড়িতে এসে টাকা জমা দিতে হচ্ছে। ভোগান্তির জন্যই ব্যবসায়ীদের অনেকে ফুলবাড়ি পথে আগ্রহী হচ্ছে না। ফুলবাড়ি সীমান্তপথ দিয়ে বাংলাদেশ সব পণ্য যাতায়াতের অনুমতি দেয়নি বলে দাবি বিশ্বজিতবাবুর। সমস্যার কথা শুনিয়েছেন ও পারের ব্যবসায়ীরাও। ফুলবাড়ি সীমান্ত পার হলেই বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলা। পঞ্চগড় আমদানি-রফতানি অর্গানাইজেশনের সভাপতি মহম্মদ মেহেদি হাসান খান বাবলা’র কথায়, ‘‘ফুলবাড়ি সীমান্ত শিলিগুড়ির এত কাছাকাছি হওয়ায় এই পথে আমরা পণ্য পাঠাতে পারলে আমাদের লাভ বেশি হতো। কিন্তু পরিকাঠামোগত ক্রুটি রয়েছে।’’

রাজ্যের পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব পরিকাঠামোগত সমস্যা খতিয়ে দেখরা আশ্বাস দিয়েছেন। তবে কবে সে পদক্ষেপ হবে, তা নিয়ে সংশয়ে ব্যবসায়ীরা।

তাঁদের দাবি, আমদানি শুরু হলে ফুলবাড়ির ব্যস্ততা এবং গুরুত্ব আরও বাড়ত। নানা অনুসারী শিল্প তৈরি হওয়ারও সুযোগ রয়েছে। বাংলাদেশ আবার ভারতে ইলিশ মাছ পাঠানোর অনুমতি দিলে, ফুলবাড়ি পথেও মাছের রাজার প্রবেশের সম্ভাবনাও রয়েছ শিলিগুড়িতেও।

Fulbari Border Import
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy