Advertisement
E-Paper

তিন হেভিওয়েটকে হারিয়ে জয়ী দেবশ্রী

গত পাঁচ বছরে কংগ্রেসের সংগঠন একেবারেই তলানিতে এসে পৌঁছয়। বাম হাওয়াও রাজ্যে নেই।

সৌমিত্র কুণ্ডু

শেষ আপডেট: ২৪ মে ২০১৯ ০৮:৩২
বাঁধভাঙা: জয় নিশ্চিত হতেই উৎসবে মাতলেন বিজেপির সমর্থকরা। রায়গঞ্জের রাস্তায়। ছবি: সন্দীপ পাল

বাঁধভাঙা: জয় নিশ্চিত হতেই উৎসবে মাতলেন বিজেপির সমর্থকরা। রায়গঞ্জের রাস্তায়। ছবি: সন্দীপ পাল

চতুর্মুখী হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে শেষ হাসি বিজেপিরই। রায়গঞ্জে ৬০ হাজারেরও বেশি ব্যবধানে জিতে গেলেন বিজেপি প্রার্থী দেবশ্রী চৌধুরী।

ইসলামপুরের বিধায়ক কানাইয়ালাল আগরওয়ালকে তুলে এনে এখানে প্রার্থী করেও ব্যর্থ হলেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেবশ্রী পেয়েছেন ৫০৯৪৫৪ ভোট। সেখানে কানাইয়ালাল পেয়েছেন ৪৪৯২৫১ ভোট। গত বছর এই কেন্দ্রে কংগ্রেস সাংসদ দীপা দাশমুন্সিকে অল্প ব্যবধানে হারিয়ে জয়ী হন সিপিএমের মহম্মদ সেলিম। এবার সেলিম ১৮১৬৫৩ ভোট পেয়ে তৃতীয় স্থানে এবং দীপা মাত্র ৮৩২৭৪ ভোট পেয়ে চতুর্থ স্থানে রয়েছেন।

এক সময় রায়গঞ্জকে প্রিয়রঞ্জন দাশমুন্সির খাসতালুক বলে রাজনীতির জগৎ চিনত। তিনি অসুস্থ হওয়ার পর ২০০৯ সালে এই আসনেই কংগ্রেসের হয়ে জিতে সংসদে গিয়েছিলেন প্রিয়র স্ত্রী দীপা। ২০১৪ সালে খুবই অল্প ভোটের ব্যবধানে দীপাকে হারিয়ে সাংসদ হন সেলিম। গত পাঁচ বছরে কংগ্রেসের সংগঠন একেবারেই তলানিতে এসে পৌঁছয়। বাম হাওয়াও রাজ্যে নেই। এই সুযোগকে কাজে লাগাতেই কানাইয়ালালকে প্রার্থী করে তৃণমূল। অন্যদিকে, এলাকায় একেবারেই অপরিচিত দেবশ্রীকে দাঁড় করায় বিজেপি। তবে প্রথম থেকেই তৃণমূল এই আসনে জিতবে বলে নিশ্চিত ছিল।

এ দিন সারাটা দিন ধরে বিজেপি ও তৃণমূলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়়াই হয়েছে। কানাইয়ালাল অবশ্য শুরুতে লড়াইয়ে ছিলেন। কখনও টেবিল গণনার ফল জানাজানি হতে দেখা যায়, তিনি এগিয়ে। ইসলামপুর মহকুমার ইসলামপুর, গোয়ালপোখর, চাকুলিয়া ব্লক তাঁকে লড়াইয়ে ফেরাচ্ছিল। তবে শেষরক্ষা হয়নি। রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ, হেমতাবাদ, করণদিঘি ব্লকে দেবশ্রী ব্যবধান বাড়িয়ে বাজিমাত করেন। বিশেষ করে রায়গঞ্জ, কালিয়াগঞ্জ ব্লকে বিজেপি প্রার্থী ৮০ হাজারেরও বেশি ভোটে এগিয়ে যায়। ভোট টানতে রায়গঞ্জ পুর এলাকাতেও দাপট দেখিয়েছে বিজেপি। কালিয়াগঞ্জ পুরসভা তৃণমূলের। সেখানেও গেরুয়ার উল্লাস। পঞ্চম রাউন্ডে খবর মেলে, দেবশ্রী ১৭৩৩৫ ভোটে ব্যবধানে এগিয়ে। তাতে গণনাকেন্দ্রের বাইরে গেরুয়া শিবির উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়ে। গণনা শেষ হতেই জয়ের সেই ব্যবধান বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে বেড়েছে উল্লাস।

দেবশ্রী বেলা ১২টা পর্যন্ত গণনাকেন্দ্রে থেকে বিশ্রাম নিতে যান। সেখান থেকেই খোঁজ নিচ্ছিলেন। রায়গঞ্জ পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের সন্দীপ বিশ্বাস সকাল থেকে গণনাকেন্দ্রের বাইরে দলের অন্য কাউন্সিলরদের নিয়ে বসেছিলেন। ওয়ার্ডগুলোতে দলের পিছিয়ে পড়ার খবর আসতে থাকায় ভেঙে পড়েন। তৃণমূলের জেলা সভাপতি অমল আচার্য বেলা ১১টা নাগাদ গণনাকেন্দ্রের বাইরে দলের লোকদের সঙ্গে বসেছিলেন। ফল অনুকূলে নয় বুঝে তিনিও চলে যান। মহম্মদ সেলিম সকালে রায়গঞ্জ পলিটেকনিক কলেজের গণনা কেন্দ্রে ঘুরে ইসলামপুর কলেজের গণনা কেন্দ্রে চলে যান। দিনভর ইসলামপুরেই ছিলেন। বিকেল পর্যন্ত হার নিয়ে কিছু বলতে চাননি। সকাল থেকে গণনাকেন্দ্রের ভিতরেই ছিলেন কানাইয়ালাল। বিকেলে বলেন, ‘‘হারজিত আছেই। কর্মী সমর্থকদের বলব ভেঙে না পড়তে।’’

জয়ী প্রার্থী দেবশ্রী বলেন, ‘‘মোদী সরকারের যে প্রতিশ্রুতিতে রায়গঞ্জের মানুষ যে আস্থা রেখেছেন, ভোটের ফলেই তা স্পষ্ট। স্বৈরাচারী এই রাজ্য সরকার, হার্মাদ বাহিনী, তোলাবাজ সরকারের বিরুদ্ধে মানুষ রায় দিয়েছে।’’ তিনি দাবি করেন, এ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্বৈরাচারী। আগামী কয়েক মাসে মানুষ দেখতে পাবেন এই রাজ্যে বিজেপি ছাড়া কেউ থাকবে না।

Election Results 2019 Lok Sabha Election 2019 লোকসভা ভোট ২০১৯ BJP Deboshree Chowdhury
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy