Advertisement
E-Paper

শাড়ি না পেয়ে গলায় ফাঁস

খবর পেয়ে রাতেই ইংরেজবাজার থানার পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম হাসি মণ্ডল (১৫))। সে স্থানীয় জহরাতলা হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা নিরঞ্জন মণ্ডল ভিন রাজ্যের শ্রমিক।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৪:৩৭
শোক: হাসি মণ্ডল (বাঁ দিকে)। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন হাসির মা (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র

শোক: হাসি মণ্ডল (বাঁ দিকে)। কান্নায় ভেঙে পড়েছেন হাসির মা (ডান দিকে)। নিজস্ব চিত্র

মায়ের হলুদ রঙের একটি শাড়ি দুই বোনেরই পছন্দ। সরস্বতী পুজোয় সেই শাড়ি কে পরবে, তা নিয়ে দুই বোনের মধ্যে সামান্য ঝগড়া। শেষে হস্তক্ষেপ মায়ের। জানান, দু’দিনের পুজোয় শনিবার ছোটমেয়ে ও রবিবার বড়মেয়ে শাড়িটা পরবে। অভিযোগ, প্রথম দিন শাড়ি পরতে না পেরে অভিমানে আত্মঘাতী হল বড়মেয়ে। শোয়ার ঘরে গলায় পরনের ওড়না জড়িয়ে ফাঁস লাগানো দেহ উদ্ধার হয় শনিবার রাতে। ইংরেজবাজার এলাকার গোপালপুর গ্রামের এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

খবর পেয়ে রাতেই ইংরেজবাজার থানার পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম হাসি মণ্ডল (১৫))। সে স্থানীয় জহরাতলা হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোপালপুর গ্রামের বাসিন্দা নিরঞ্জন মণ্ডল ভিন রাজ্যের শ্রমিক। বর্তমানে মুম্বইয়ে কর্মরত। বাড়িতে স্ত্রী বাসন্তী মণ্ডল দুই মেয়ে হাসি ও খুশিকে নিয়ে থাকেন। ছোটমেয়ে খুশি সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। এবার সরস্বতী পুজোয় হাসি ও খুশি দুই বোনই শাড়ি পরার বায়না ধরেছিল। কিন্তু তাদের পছন্দ ছিল মায়েরই একটি হলুদ রঙের শাড়ি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, সেই শাড়ি কে পরবে তা নিয়ে শনিবার দুপুরে দুই বোনের মধ্যে তুমুল ঝগড়া হয়। বিকেলেও তাদের মধ্যে ঝগড়া চলে। শেষপর্যন্ত দুই বোনকেই খুশি রাখতে মা সিদ্ধান্ত নেন, এবারে সরস্বতী পুজো যেহেতু দু’দিন, তাই শনিবার ছোটমেয়ে খুশি ও রবিবার বড়মেয়ে হাসি সেই শাড়ি পরে প্রতিমা দেখতে বের হবে।

অভিযোগ, সেই সিদ্ধান্ত সম্ভবত মনের মতো না হওয়ায় অভিমানে শনিবার রাতেই নিজের ঘরে ঢুকে ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয় হাসি। মেয়েটির এক আত্মীয় নীলকান্ত মণ্ডল বলেন, ‘‘রাত ৯টার দিকে বাড়িতে কেউ ছিল না। ওর মা গিয়েছিলেন পাশের বাড়ি পুজোর ভোগ রান্না করতে। বোন খুশি গিয়েছিল সেই শাড়ি পরে পাড়ারই একটি পুজো মণ্ডপে। বাড়ি ফাঁকা পেয়ে অভিমানে নিজের পরনের ওড়না দিয়েই ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয় হাসি।’’ তিনি জানান, পরে রাত ১০টা নাগাদ মা বাসন্তী এসে দরজা ধাক্কাধাক্কি করে না খোলায় চিৎকার জুড়ে দেন। প্রতিবেশীরা এসে ঘরের ঘুলঘুলি দিয়ে হাসিকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে রাতেই মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মালদহ মেডিক্যাল কলেজে পাঠায়। মৃত ছাত্রীর মা বলেন, ‘‘সামান্য শাড়ি পরা নিয়ে অভিমানে মেয়ে এভাবে চলে যাবে তা ভাবতেই পারছি না।’’ বলেই তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন। পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার ময়নাতদন্তের পর বিকেলে হাসির মৃতদেহ বাড়িতে পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিবারের লোকজন। যে শাড়ি নিয়ে বিবাদ সেই শাড়ি মাথার কাছে রেখেই মৃতদেহ শ্মশানে নিয়ে যাওয়া হয়।

Death Suicide
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy