প্রতীকী ছবি।
পাত্র নাকি মদ্যপ অবস্থায় বিয়ে করতে গিয়েছিলেন! এই অভিযোগে পিঁড়িতে বসার আগে পাত্রকে এবং বরযাত্রীর সদস্যদের মারধর করেন কনেপক্ষের লোকজন। মারের হাত থেকে বাদ যাননি মহিলা ও শিশুরাও। অভিযোগ, কনের বাড়িতে টানা দেড়দিন তাঁদের আটকে রাখা হয়। পরে বিয়ে ভেঙে যাওয়ার ক্ষতিপূরণ বাবদ সাড়ে তিন লক্ষ টাকা আদায় করে তাঁদের ছাড়া হয়েছে। গত শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে অসমের বঙ্গাইগাঁওয়ের চোঙাপোতা এলাকায়।
শেষে সোমবার সকালে বঙ্গাইগাঁও থেকে পাত্র ও বরযাত্রীরা বিধ্বস্ত অবস্থায় ধূপগুড়ি এসে পৌঁছন। যদিও ঘটনাটি নিয়ে পুলিশে কোনও অভিযোগ করেনি কনে বা পাত্রপক্ষ কেউই। জানা গিয়েছে, পাত্র ধূপগুড়ির ১২ নম্বর ওয়ার্ডের মাস্টার্স কোয়ার্টার পাড়ার বাসিন্দা। ফলাকাটায় একটি অর্থলগ্নি সংস্থায় চাকরি করেন। বৈশাখেই বঙ্গাইগাঁওয়ের চোঙাপোতায় এক অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মীর মেয়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ে স্থির হয়। শনিবার রাতে ছিল বিয়ের লগ্ন। মেয়ের এক দাদা বঙ্গাইগাঁও থেকে ফোনে বলেন, ‘‘কী বলব! ছেলেটি যে মদ্যপ তা আমরা জানতাম না। সব জেনেও কোচবিহারের এক ঘটক ছেলের পরিবার ও বাড়িঘর দেখিয়ে আমাদের ওই বিয়েতে রাজি করান। ছেলেটির পরিবারও কিছু বলেনি। বিয়ের দিন মদ খেয়ে এসেছিল পাত্র। বিয়েবাড়ি পৌঁছে গাড়ি থেকে নামার মতো হুঁশও ছিল না। পাত্রের ওই অবস্থা দেখেই আত্মীয়-প্রতিবেশীরা রেগে যান।’’ বিয়ে যাওয়ায় ক্ষতিপূরণ বাবদ পাত্রপক্ষের কাছে কিছু টাকা দাবি করা হয়েছে বলে তিনি জানান। তবে তাঁর দাবি, কাউকেই মারধর করা হয়নি।
পাত্রের দাদা ধূপগুড়ি পুরসভার কর্মী বলেন, ‘‘গাড়ি থেকে নামামাত্র ভাই-সহ আমাদের মারতে শুরু করে মেয়েপক্ষ। দু’টো গাড়ির কাচ ভেঙে ফেলে ওরা। রাতে আমাদের কাছে সাত লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করে ওরা। আমার পরিবারের বয়স্ক মানুষ, মহিলা-শিশুদের আটকে রেখে ওই টাকা আনতে আমাকে ধূপগুড়ি পাঠিয়ে দেয়। একদিনের মধ্যে কোনওরকমে টাকা জোগাড় করে কনেবাড়ি ফিরে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দেওয়ার পর রবিবার রাতে সবাই ছাড়া পান। টাকা পাওয়ার আগে পর্যন্ত কাউকে জলও খেতে দেয়নি ওরা।’’
পাত্রের প্রতিবেশী এবং বরযাত্রী দলের এক সদস্য বলেন, ‘‘প্রাণ হাতে নিয়ে বাড়ি ফিরেছি। টানা দেড়দিন আমাদের আটকে রেখে গালিগালাজ, মারধর করেছে কনেপক্ষ। তবে ছেলে যে বিয়ের আগের মুহূর্তে মদ্যপ ছিল তা আমরা মানছি। ওঁরাও পাত্র সম্পর্কে খোঁজখবর নেননি। ফল ভুগতে হল আমাদের।’’
এখন পাত্রপক্ষের চিন্তা, কী করে এই তিন লক্ষ টাকা শোধ করবেন। পাত্রের বউভাতে কেটারিংয়ের দায়িত্বে থাকা অসীম পাল বলেন, ‘‘ছেলের বাড়ি থেকে বউভাতের মেনু অনুযায়ী অগ্রিম টাকা দিয়ে মাছ, মাংসের বরাত দেওয়া হয়েছিল। এখন বরাতের কাঁচামাল নষ্ট হওয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা ক্ষতিপূরণ চাইছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy