অনীত থাপা। —ফাইল চিত্র।
পুজোর পরে, রাজ্য সরকারের কাছে ‘গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (জিটিএ)-র প্রাপ্য বকেয়া ২৮৩ কোটি আদায়ের জন্য কলকাতায় দরবারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত দু’বছর ধরে ২০০ কোটি টাকা বেশির বকেয়া থাকলেও, তা সরকার না ছাড়ায় এ বার রাজ্যকে চিঠি লেখা শুধু নয়, বিভিন্ন দফতরের সচিব এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নতুন করে আবেদন জানানোর কথা ঠিক হয়েছে। এ ব্যাপারে জিটিএ-র তৈরি বিশেষ প্রতিনিধি দল কলকাতায় যাবে বকেয়া টাকা এবং দফতর হস্তান্তর নিয়ে তাঁরা কাজ করবেন।
বকেয়া নিয়ে জিটিএ প্রধান অনীত থাপা মন্তব্য করেননি। তবে জিটিএ-র এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘২০২২ সাল থেকে বকেয়ার জন্য রাজ্যের কাছে বার বার বলা হচ্ছে। এ বার কলকাতায় প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে দেখা করার সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে, মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও যাওয়া হবে।’’ তিনি জানান, বৃহস্পতিবার জিটিএ-র পঞ্চম বোর্ড সভায় বিভিন্ন বিষয়ের সঙ্গে বকেয়া টাকা আদায় এবং প্রশাসনিক সুবিধার জন্য সার্বিক ভাবে দফতর হস্তান্তরে জোর দেওয়া হয়েছে।
জিটিএ সূত্রের খবর, দুই বছর আগে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে জিটিএ নিয়ে কলকাতায় বিশেষ বৈঠক হয়। সেখানে দার্জিলিং ও কালিম্পং পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য সরকারের বকেয়া ২৩২ কোটি টাকা চান জিটিএ প্রধান অনীত থাপা। সেই পর্যালোচনা বৈঠকে তৎকালীন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব ছাড়াও তৎকালীন অর্থ সচিব মনোজ পন্থ ছিলেন। তিনি বর্তমানে রাজ্যের মুখ্যসচিব। তাই জিটিএ-র সব বিষয়ই তাঁর নজরে রয়েছে। তাঁকেও জিটিএ নতুন করে বিষয়টি জানাচ্ছে।
২০১৪-১৮ সাল পর্যন্ত জিটিএ-র বরাদ্দ ‘যথাযথ’ ভাবে দেওয়া হয়নি। এর মাঝে পাহাড়ের পরিস্থিতিও ঠিক ছিল না। ২০২১-২২ অর্থ বছরে ১৭৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও পাহাড়ে পাঠানো হয়, ১৩৩.৭৫ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে গত কয়েক বছরে রাজ্যের ঘরে জিটিএ-র বকেয়ার পরিমাণ ২৩২ কোটি টাকা। ২০২৪ সালে এসে তা ২৮৩ কোটি টাকা দাঁডিয়েছে। এই টাকা না পাওয়ায় জিটিএ-র বিভিন্ন খাত মিলিয়ে দায়ের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩৫০ কোটি টাকা। এ বারের বাজেটে জিটিএ-র জন্য ২০৬ কোটি টাকার বরাদ্দের ঘোষণা হয়েছে। কিন্তু বকেয়া থেকেই গিয়েছে। প্রয়োজনে, বকেয়া টাকা কিস্তিতে দিতেও রাজ্যকে বলবে জিটিএ।
জিটিএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা গোর্খা নেতা বিনয় তামাং বলেন, ‘‘জিটিএ উন্নয়নের কাজের বকেয়া ওই টাকা। কিছু ক্ষেত্রে কাজ শেষের পরে চূড়ান্ত শংসাপত্র (ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট) দেওয়া নিয়ে সমস্যা থাকতে পারে। সব দেখেই রাজ্যকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’ বিনয়ের মতো আর এক জিটিএ সদস্য তথা হামরো পার্টির সভাপতি অজয় এডওয়ার্ডও জিটিএ দফতর হস্তান্তর থেকে বকেয়ার দাবিতে সার্বিক প্রচেষ্টার কথা বলেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy