শ্রদ্ধা: আরফুনকে শেষ শ্রদ্ধায় তাঁর প্রতিবেশীরা। নিজস্ব চিত্র
বছর ঘোরেনি। গত এপ্রিলেই মালদহের মানিকচকের শেখপুরা গ্রাম দেখিয়েছিল সম্প্রীতির অনন্য ছবি। সে বার, বিশ্বজিত রজক নামে এক হিন্দু যুবকের মৃতদেহ রীতিমতো হরিবোল ধ্বনি দিয়ে প্রায় ৬ কিলোমিটার কাঁধে বয়ে শ্মশানে নিয়ে দাহ করেছিলেন হাজি মকলেসুদ্দিন, শেখ কায়সুল, আবুল কালাম আজাদদের মতো মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা।
মঙ্গলবার সেই সম্প্রীতিরই আর এক ছবি দেখা গেল মালদহেরই মালতীপুর গ্রামে। তবে উলটপুরাণ। বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত আরফুন বেওয়া নামে এক মুসলিম বৃদ্ধার মরদেহ কাঁধে করে কবরস্থানে নিয়ে গেলেন শুভাশিস চক্রবর্তী থেকে শুরু করে সুবোধ রাজবংশী, সায়ন চুনারিরা। কবরে মাটিও দিলেন তাঁরা। সম্প্রীতির এক অনন্য নজির গড়লেন চাঁচল ২ ব্লকের মালতীপুরের শুভাশিসবাবুরা।
শেখপুরা গ্রামের বছর তেত্রিশের বিশ্বজিত রজকের শেষকৃত্যে মুশকিল আসান করেছিলেন গ্রামেরই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা। বাড়িতে কীর্তনের আসর বসানো থেকে শুরু করে শ্রাদ্ধের খরচও দিয়েছিলেন তাঁরাই।
এ বার সেই একই ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখা গেল চাঁচল ২ ব্লকের মালতীপুরে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বার্ধক্যজনিত কারণে এদিন বাড়িতেই মারা যান আরফুন বেওয়া। খবর ছড়িয়ে পড়তে বাড়িতে সকাল থেকেই ভিড় জমে যায়। সমবেদনা জানাতে প্রতিবেশী হিন্দু পরিবারের অনেকেই যান।
বেলা ১০ টা নাগাদ মরদেহ কবর দেওয়ার জন্য খাটিয়ায় তুলতেই আরফুনের একমাত্র ছেলে নূরুল ইসলামের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মেলান প্রতিবেশী শুভাশিস চক্রবর্তী। সেই যাত্রায় ছিলেন আরেক প্রতিবেশী সুবোধ রাজবংশীও। পেশায় ব্যবসায়ী শুভাশিসবাবু বলেন, ‘‘মায়ের মৃত্যুর পর থেকে আরফুন বেওয়াই আমাকে মায়ের স্নেহ দিয়েছিল। ফলে তার মৃত্যুর পর শেষকৃত্যে অংশ নেব না এটা হয় না।’’ এলাকার সফিকুলও বলেন, ‘‘এখানে সবাই বন্ধু।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy