Advertisement
E-Paper

প্রযুক্তিই প্রচারের নয়া পথ সব দলের

এক মাসও বাকি নেই ভোট আসতে। পথেঘাটে প্রচারের ঝড় তুলেছে সব পক্ষই। তবে কেবল পথেই নয়, ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডেও চলছে জোর প্রচার। সেখানে পথ দেখাচ্ছে প্রযুক্তিই। সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচারের জন্য রীতিমতো আটঘাঁট বেঁধে নেমেছে রাজনৈতিক দলগুলি। ফেসবুক, ট্যুইটার, হোয়াটসঅ্যাপের মত মাধ্যমে একে অপরের দিকে সমালোচনার আঙুল তুলতে ব্যস্ত নেতা-কর্মীরা।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৫ ০২:৪০

এক মাসও বাকি নেই ভোট আসতে। পথেঘাটে প্রচারের ঝড় তুলেছে সব পক্ষই। তবে কেবল পথেই নয়, ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ডেও চলছে জোর প্রচার। সেখানে পথ দেখাচ্ছে প্রযুক্তিই। সোশ্যাল মিডিয়ার প্রচারের জন্য রীতিমতো আটঘাঁট বেঁধে নেমেছে রাজনৈতিক দলগুলি।

ফেসবুক, ট্যুইটার, হোয়াটসঅ্যাপের মত মাধ্যমে একে অপরের দিকে সমালোচনার আঙুল তুলতে ব্যস্ত নেতা-কর্মীরা। কেউ খুলেছেন আইটি সেল, কেউবা কমিউনিকেশন সেল বা আইটি রুম। মূলত দলের যুব এবং তরুণ নেতানেত্রীদেরই প্রচারের এই দিকটা দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় নানা দলের উপস্থিতিও নানা নামে।

ফেসবুকে কোথাও বামফ্রন্টের ‘সেভ শিলিগুড়ি, ইলেক্ট লেফ্টফ্রন্ট’, তৃণমূলের ‘শিলিগুড়ি কর্পোরেশন ভোট’, আবার কোথাও বিজেপির ‘শিলিগুড়ি মিশন ২৪+’ নাম দিয়ে চলছে অনলাইনে প্রচার। ওয়ার্ড ভিত্তিক রোজই অ্যাকাউন্ট খুলছে বিজেপি। আবার অনেক নেতারা নিজেদের ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট এবং প্রোফাইলেও ভোটের প্রচার শুরু করে দিয়েছেন। কংগ্রেসের তরফেও বিভিন্ন প্রার্থী, নেতারা তো বটেই, ‘দার্জিলিং জেলা কংগ্রেসে’র নাম দিয়ে ফেসবুকে শুরু হয়েছে পুরভোটের প্রচার। তেমনই প্রায় রোজ দিনই হোয়াটসঅ্যাপে খুলছে নতুন গ্রুপ। সেখানে শহরবাসীকে যতটা সম্ভব জুড়ে নিয়ে দলের প্রচারে ব্যস্ত নেতারা। প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের বক্তব্য, বতর্মান সময়ে তরুণ প্রজন্ম তো বটেই, প্রবীণরা, এবং মহিলারাও এখন সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে যুক্ত। সেখানে নিজেদের বক্তব্য ব্যখ্যা করে ভোটের প্রচার করার মত জায়গায় অন্যত্র আর নেই।

তাই তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহারের দিক থেকে প্রচারে দীর্ঘদিন অনেকটাই ‘রক্ষণশীল’ থাকার পর এ বারই প্রথম বামেরা পুরোদস্তুর নেমে পড়েছেন। প্রার্থীদের ছবি দিয়ে প্রচারের ছাড়পত্র দেওয়া ছাড়াও গত সপ্তাহেই শিলিগুড়ির অনিল বিশ্বাস ভবনকে পুরোপুরি ‘ওয়াই-ফাই জোনে’ পরিণত করে দিয়েছে সিপিএম। দলের ছাত্র নেতা থেকে শুরু করে প্রবীণ নেতারাও দলীয় দফতরে বসে যখন যেমন মনে করছেন, তেমনিই নানা স্টেটাস আপ়়ডেট ও ছবি দিয়ে ফ্রন্টের প্রচার করে চলেছেন।

দলের জেলা সম্পাদক জীবেশ সরকারের কথায়, ‘‘বর্তমান সময়ে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমকে অস্বীকার করার উপায় নেই। এর মাধ্যমে সহজেই বহু মানুষের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করা সম্ভব হয়। আমরা এবার ভোটে তাই অনলাইন প্রচারেও জোর দিয়েছি। হোয়াটসঅ্যাপ, ফেসবুক, ট্যুইটার কোনও কিছুই বাদ রাখা হচ্ছে না। আমাদের বক্তব্য শুধু পার্টির কর্মী বা সমর্থক নয়, সাধারণ মানুষের সামনে আসছে।’’

উল্লেখ্য, জীবেশবাবুও দীর্ঘদিন ধরেই ফেসবুকে সক্রিয়। তবে বামেদের এ বারের ভোটের মুখ, রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী অশোক ভট্টাচার্য অবশ্য এই মাধ্যমে ততটা সড়গড় নন। তাঁর কথায়, ‘‘আমি একটু এ সবে অনভ্যস্ত। ধীরে ধীরে শিখছি। আমার হয়ে দলের ছাত্র-যুবরাই আপাতত প্রচার সারছেন।’’ ফ্রন্ট সূত্রের খবর, আগামী দু-এক দিনের মধ্যেই অশোকবাবুর জন্য প্রতিটি মাধ্যমেই আলাদা করে অ্যাকাউন্ট খোলা হচ্ছে।

শাসক তৃণমূল জেলা সভাপতি তথা উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতমবাবু অবশ্য অনেকদিন ধরেই অনলাইন মাধ্যমে আছেন। নিজের ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ঘিরে গৌতমবাবু ইতিমধ্যে রোজই ভোটের প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, গত একমাসে কয়েক দফায় মন্ত্রী দলের বাছাই করা নেতা, কর্মীদের নিয়ে এ বিষয়ে বৈঠক করে প্রচারের দায়িত্বও তুলে দিয়েছেন। নেতাদের ফেসবুকে অ্যাকাউন্ট জোর কদমে প্রচারে ব্যবহার ছাড়াও অনলাইনে প্রচার করার নির্দেশও দিয়েছেন। গৌতমবাবু বলেন, ‘‘আমরা প্রচারে কোনও মাধ্যমকে ছাড়ব না। আমাদের সরকারের এবং বিভিন্ন দফতরের কাজ, সমস্তই প্রচার হচ্ছে। মানুষের খুব ভাল সাড়াও পাচ্ছি। নানা মতামত এবং বক্তব্যও জানতে পারছি।’’

প্রার্থী বাছাই এবং রাস্তার প্রচারে অনেকটা পিছিয়ে শুরু করলেও তথ্য প্রযুক্তিতে বিজেপি অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর, দলের আইটি সেল তৈরি করে এই দায়িত্ব দেওয়া হয় কয়েক মাস আগেই। সেই মতন কেন্দ্রীয়ভাবে অ্যাকাউন্ট তৈরি ছাড়াও ওয়ার্ড ভিত্তিক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট তৈরি হয়েছে। সেখানে প্রার্থীদের পরিচয় ছাড়াও এলাকা ভিত্তিক সমস্যা এবং দলের মতামত তাতে তুলে ধরা হচ্ছে। তেমনিই, হোয়াটসঅ্যাপে নিজেদের দলীয় মণ্ডল ধরে ধরে কর্মী, নেতাদের টেলিফোন নম্বর নিয়ে তথ্যভাণ্ডার গড়ে প্রচার চলছে। আবার জেলা সভাপতি রথীন বসু নিজেও ফেসবুকে দলের বক্তব্য তুলে ধরছেন। রথীনবাবু বলেন, ‘‘এটা খুবই জোরদার এবং সক্রিয় মাধ্যম। একে কী ভাবে ব্যবহার করতে দল তা বিজেপিই গত লোকসভায় ভোটে সকলকে শিখিয়েছে। এ বার শিলিগুড়িতেও চেষ্টা করছি। সমস্ত মাধ্যমই ব্যহার হচ্ছে।’’

এই তিন দলের থেকে অবশ্য এ ক্ষেত্রে পুরভোটের প্রচারে কিছুটা পিছিয়ে কংগ্রেস। তবে দলের জেলা কংগ্রেসের নাম দিয়ে তৈরি অ্যাকাউন্টে প্রচার ছাড়াও প্রার্থীরা নিজেরাই জুড়েছেন এ মাধ্যমে। জেলা কংগ্রেস সভাপতি শঙ্কর মালাকারও ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করছেন। জেলা কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা কমিউনিকেশন সেলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সুজয় ঘটক জানান, কংগ্রেসও সমস্ত মাধ্যকে ব্যবহার করবে। সোশ্যাল মিডিয়া ছাড়াও আমরা টেলিফোনিক মেসেজ, এসএমসও বাসিন্দাদের কাছে পাঠাচ্ছি।

hitech election campaign virtual world siliguri corporation election municipal election 2015 north bengal news kaushik chowdhuri
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy