শরীরে জ্বর, ব্যথা বোধ করছিলেন বলে সচিত পাল ওষুধের দোকানে বলে স্ত্রীকে ওষুধ এনে দেন। তাতে না-সারলে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে গিয়ে সে দিনই দেখিয়ে আনেন। গত শুক্রবারের ঘটনা। অথচ তাঁর তিন দিনের মাথায় স্ত্রীকে যে এ ভাবে হারাতে হবে তা যেন এখনও বিশ্বাসই করতে পারছেন না। মা নেই, বিশ্বাস করতে পারছে না কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্রী স্মিতা। সাত বছরের ছেলে সায়ন সকলের সঙ্গে কথা বলছে। দিদির সঙ্গে ঝগড়া করছে। আর মা কোথায়, কখন আসবে মাঝেমধ্যেই জানতে চাইছে।
হাকিমপাড়ার রজনীকান্ত সরণির বাসিন্দা সুস্মিতা দেবী নার্সিংহোমে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সেখানেই সোমবার মারা যান তিনি। তারপরই হাকিমপাড়ায় তাঁদের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। খবর পেয়ে এ দিন সকালে তাঁদের বাড়িতে যান মেয়র অশোক ভট্টাচার্য। স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, ডেঙ্গি শক সিনড্রমে আক্রান্ত হয়েই সুস্মিতাদেবীর মৃত্যু হয়েছে।
সচিতবাবু জানান, বৃহস্পতিবার স্ত্রী বলেছিলেন ঘাড়ে কী কামড়েছে। পরদিন জ্বর, গা ব্যথা হচ্ছে বলে জানান। দোকান থেকে বলে ওষুধ নিয়ে আসেন তিনি। সন্ধ্যায় চিকিৎসকের চেম্বারে নিয়ে যান। চিকিৎসক এক হাজার ডোজের প্যারাসিটামল ট্যাবলেট দেন। দিনে তিনটে করে। শুক্রবার, শনিবার এবং রবিবার বিকেল পর্যন্ত সেই ওষুধ খেয়েছেন। শনিবার জ্বর না-কমায় চিকিৎসক জানান, ডেঙ্গি হয়েছে। রক্ত পরীক্ষা করানো হয়েছি কি না? সচিতবাবু বলেন, ‘‘চিকিৎসক জানিয়েছিলেন জ্বর না-কমলে দুই একদিনের মধ্যে রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। সেই মতো শনিবার করা হয়নি দেখে রবিবারই পরীক্ষা করানোর কথা বলি।’’ রবিবার দুপুরে সেই পরীক্ষায় ডেঙ্গি এনএসওয়ান ধরা পড়ে। শক সিনড্রম বলেও উল্লেখ করা হয়। শরীরে ব্যাথার পাশাপাশি সুস্মিতাদেবীর পেট ফুলে উঠছিল। রবিবার বিকেলের পর শরীর একেবারেই ভাল লাগছে না বললে সচিতবাবু অন্য চিকিৎসকের খোঁজ করেন। পরিচিত এক ব্যক্তির কাছ থেকে খোঁজ পেয়ে খালপাড়ার একটি নার্সিংহোমে স্ত্রীকে ভর্তি করেন চিকিৎসক সৈকত দত্তের অধীনে। সৈকতবাবু বলেন, ‘‘যা বলার রোগীর পরিবারকে জানিয়েছি।’’
সচিতবাবু জানান, সোমবার সকালে চিকিৎসক জানিয়ে দেন পরিস্থিতি ভাল নয়। তাতে দিশেহারা হয়ে পড়েন সকলে। দুপুর গড়াতেই শোকের ছায়া নেমে আসে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy