Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

স্ত্রীকে কুপিয়ে খুন, আক্রান্ত দুই সন্তানও

বিবাহ বহির্ভূত সর্ম্পকের জেরে প্রথম স্ত্রীকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনায় মাকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে দম্পতির ছেলে-মেয়েও। শুক্রবার ভোর ৪টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের কালিয়াচক থানার কালিয়াচক ১ পঞ্চায়েতের রায়নগর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম জ্যোৎস্নারা বিবি (৩৪) আহত ছেলের নাম আলমগীর শেখ (১৩) ও মেয়ে আমিনা খাতুন (১১)। তারা দু’জনই কামবিটোলা হাই মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। অভিযুক্ত পলাতক।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৫ ০২:৫৩
Share: Save:

বিবাহ বহির্ভূত সর্ম্পকের জেরে প্রথম স্ত্রীকে হাঁসুয়া দিয়ে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে। ঘটনায় মাকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে দম্পতির ছেলে-মেয়েও। শুক্রবার ভোর ৪টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের কালিয়াচক থানার কালিয়াচক ১ পঞ্চায়েতের রায়নগর গ্রামে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতার নাম জ্যোৎস্নারা বিবি (৩৪) আহত ছেলের নাম আলমগীর শেখ (১৩) ও মেয়ে আমিনা খাতুন (১১)। তারা দু’জনই কামবিটোলা হাই মাদ্রাসার ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। অভিযুক্ত পলাতক।

পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পনেরো আগে ওই এলাকার আর্সেনিক বাঁধের বাসিন্দা জ্যোৎস্নারাকে বিয়ে করে আতাউর শেখ নামে এক ব্যক্তি। সে ভিন রাজ্যে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করে। বাঁধের উপরেই তারা ঝুপরি ঘর তৈরি করে সংসার বাঁধে। তাঁদের দুই ছেলে-মেয়ে রয়েছে। তবে বছর তিনেক ধরে আতাউর বাড়ি ছাড়া। পরিবারের লোকেদের দাবি, সে মানিকচকের গোপালপুরে আরও একটি বিয়ে করে থাকে। সেই সময়ে স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের কথা জানতে পেরে জ্যোৎস্নারা প্রতিবাদ করলে আতাউর হাঁসুয়া দিয়ে তাঁকে আঘাত করে। স্থানীয় হাসপাতালে মহিলা ভর্তিও ছিল।

তার পর থেকে বাড়িতে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে তিনি একাই থাকতেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভিক্ষাবৃত্তি করে কোনও রকমে সংসার চালাতেন তিনি। পাশেই তাঁর বাপের বাড়ি। তাঁদের আর্থিক অবস্থাও খুব খারাপ হওয়ায় সেখান থেকে তেমন সাহায্য পেতেন না। ফলে স্বামীর সঙ্গে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেন জ্যোৎস্নারা। এ দিন ভোরে রাধানগরের বাড়িতে আসে আতাউর। ঘরে ঢুকে স্ত্রীকে হাঁসুয়া দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে বলে অভিযোগ। মায়ের চিৎকার শুনে ঘুম থেকে উঠে পড়ে ছেলে-মেয়েরা। চিৎকার করলেও কেউ ছুটে না আসায় তারা নিজেরাই মাকে বাঁচাতে ছুটে যায়। সেই সময়ে আতাউর আলমগীরের ডান হাতে কোপ মারে। একই সঙ্গে আমিনাকেও হাঁসুয়া দিয়ে আঘাত করে সে। গুরুতর জখম অবস্থাতেও আলমগীর তার মামাদের খবর দেয়। জ্যোৎস্নারার পরিবারে লোকেরা ছুটে গেলে অভিযুক্ত পালায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান জ্যোৎস্নারা।

পরিবারের লোকেরা দুই ভাই-বোনকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে নিয়ে যান সিবামপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। আলমগীরের আঘাত গুরুতর হওয়ায় তাকে মালদহ মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করা হয়। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য মেডিক্যাল কলেজে পাঠায়। মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন আলমগীর বলে, “আমি চাই বাবাকে পুলিশ ধরে শাস্তি দিক।” তার মামা বাবলু শেখ বলেন, “আমি চায়ের দোকান করে সংসার চালাই। ফলে বোনেদের তেমন সাহায্য করতে পারতাম না। এ দিন শুনি বোনকে কুপিয়ে খুন করেছে আতাউর।” মালদহের পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পারিবারিক বিবাদে মহিলাকে কুপিয়ে খুনের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত ফেরার। তার খোঁজে তল্লাশি চালান হচ্ছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE