রাজনীতির লড়াইতেও পাশেই আছেন রেবা।
কখনও ভোর সকালে উঠে তিনি বেরিয়ে পড়তেন দলের কাজে। ফিরতে ফিরতে অনেক রাত হত। পথ চেয়ে বসে থাকতাম। বাড়ি ফিরলে চাল ধুয়ো গরম ভাত করে দিতাম। এ ভাবেই দিন কেটেছে। প্রথম দিকে খুব মন খারাপ হতো। পরে বুঝলাম, মানুষটা রাজনীতি ছাড়া থাকতে পারবে না। বুঝলমা ও মানুষের সঙ্গে থাকতে, সমস্যা শুনতে সমাধান করার মধ্যেই ভাল থাকে। এটা বোঝার পর থেকেই মন খারাপ হয়নি, উল্টে ওঁর সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে কথা বলতাম। ওঁর কথা শুনতাম মনোযোগ দিয়ে। এবার ওঁর আরও বড় দায়িত্ব। কাজের পরিধি গোটা উত্তরবঙ্গে ছড়িয়ে। জেলায় জেলায় ঘুরতে হবে। ভেবে গর্বও হচ্ছে আবার শরীর-স্বাস্থ্য নিয়ে চিন্তাও হচ্ছে।
ওঁর সহকর্মীদের অনেকে গল্পে গল্পে আমাকে বলে থাকেন, ‘‘বৌদি তুমি কিন্তু দাদার সফলতার চাবিকাঠি।’’ আমি শুনে হাসি। এত বাড়াবাড়ি কিছু না। তবে ওর স্বাস্থ্যের ওপরে নজর রেখেছি নিয়মিত। যত সকালেই বাড়ি থেকে বের হোক না কেন, সেদ্ধ বাত খেয়ে তবে ছেড়েছি। তা সে আমাকে যত ভোরেই উঠতে হোক না কেন। আর কিছু না হোক, কোনরকমে চাল ফুঁটিয়ে তার সঙ্গে আলু-করলা সেদ্ধতো করে দিতে পেরেছি। আমার অবশ্য ভোরে ওঠাই অভ্যেস। যদি দেখেছি ও ঘুম ভেঙেই বের হওয়ার তোড়জোড় করছে ওমনি উনুনে ভাতের হাড়ি বসিয়ে দিয়েছি। কোনও কোনও দিন সারাদিনে যোগাযোগই হত না ওঁর সঙ্গে। ছেলেমেয়েদের স্কুল, বাড়ির অন্য কাজও সামলাতে হতো। কাজের মাঝেই ভাবতমা, মানুষটা দুপুরে কিছু খেল নাকি, একটু বিশ্রাম নিল তো, নাকি সারাদিন ছুটেই চলেছে।
বিয়ের সময়ই জানতাম তিনি রাজনীতি করেন। তাই বলে বাড়ি থেকে হুটহাট বেরিয়ে যাবেন তা ভাবতে পারিনি। ধীরে ধীরে সব বুঝতে পারি। রাজনীতিও তাঁর কাছে আর একটি সংসার। দলের ছেলেদের নিয়ে থাকতে তিনি খুব ভালবাসেন। তাঁরাও ওঁকে সমান ভালবাসে। একটা কথা না বলে পারছি না, জেলায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়, ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ হয়েছে। ও বলে থাকে, আমাদের সকলের চেষ্টায় এবং মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে এ সব হয়েছে। তখন ভাবতে ভাল লাগে যে এই ‘আমরা’র মধ্যে আমিও রয়েছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy