পতি, পত্নী ও পোষ্য।
পঁচিশ বছর ধরে সংসার কিন্তু আমিই সামলাচ্ছি। বিয়ের পর দিন থেকেই গৌতমকে ব্যস্ত দেখেছি। সকাল থেকে গভীর রাত নানা প্রয়োজনে বাড়িতে লোকজনের আনাগোনা। কখনও কাউন্সিলর গৌতমের কাছে অনুরোধ-সমস্যা নিয়ে আসা লোকের ভিড়, কখনও দলের নেতা গৌতমের কাছে নানা আবদার নিয়ে আসা কর্মীদের ভিড়। এই ব্যস্ততা-ভিড়-ই গত পাঁচ বছরে কয়েকগুণ বেড়ে গিয়েছে। আমার তো মনে পড়ে না অনুষ্ঠান ছাড়া শিলিগুড়ির রাস্তা আমরা একসঙ্গে ঘুরেছি, বা কেনাকাটা করতে বেরিয়েছি। তবে এতে আক্ষেপ থাকলেও, আমার কোনও দুঃখ নেই। কারণ ওঁর কাজের গুরুত্বটা আমি বুঝেছি। তাই কোনদিন কোথাও যাওয়ার জন্য অথবা বাড়িতে দীর্ঘক্ষণ থাকার জন্য জোরাজুরি করিনি। মাছের ঝাল-সর্ষে খেতে ভালবাসে। ওঁর জন্য রেঁধে রাখতাম। একটা কথা বলতে হবে, গৌতমও কিন্তু আমার দিকটা বুঝেছে। সময় পেলেই পরিবারের জন্য রেখেছে।
ছেলের পড়াশোনার জন্য তিন বছর ধরে পাকাপাকি কলকাতায় এসে থাকছি। ছেলে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। মেয়ে ডাক্তারির চূড়ান্ত বর্ষে পড়ছে। ওদের দেখাশোনার জন্য কলকাতাতে থাকতেই হয়। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী থাকার ব্যস্ততা স্বত্তেও মাসে একবার দু’বার গৌতম শিলিগুড়ি ছেড়ে কলকাতায় এসেছে। ওই এক বা দু’দিন নিজে বাজার করেছে। আমাদের সকলকে নিয়ে ঘুরতে বেড়িয়েছে, আমাকে কেনাকাটা করতেও নিয়ে গিয়েছে। মনে আছে, এবার ভোটের আগে আগেই ছেলের জন্মদিন ছিল। প্রচারের ব্যস্ততার জন্য গৌতম সে দিন আসতে পারেনি। আমাদের একটু মন খারাপও হয়েছিল। সেটা টের পেয়ে দেখি দু’দিন পরে গৌতম কলকাতায় এসে হাজির। প্রচারের ফাঁকেই এক দিনের জন্য এসে আমাদের সকলকে একটি চিনা রেস্তোরায় খেতেও নিয়ে গিয়েছিল। এটাই গৌতমের বৈশিষ্ট্য। এই বোঝাপোড়াতেই দিব্যি কাটছে এতগুলি বছর।
তবে আমি শিলিগুড়ি না থাকায় গৌতমের স্বাস্থ্যের দিকটা উপেক্ষিতই থেকে গিয়েছে। প্রতিদিন অনিয়ম, হাবিজাবি খাওয়ায় শরীর খারাপ হয়েছে। বাইপাস করতে হয়েছে। তাই খুব চিন্তায় ছিলাম। তবে এবার ওর হাতে পর্যটন দফতর। দফতরের সদর দফতর কলকাতায়। তাই কলকাতাতেও এবার ওঁর মাসে অনেকদিনই থাকতে হবে। এটা আমার কাছে বিরাট প্রাপ্তি। যে ক’দিন হাতের কাছে পাব কড়া শাসনে রাখব।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy