Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সংসদে চা বাগান নিয়ে সরব জন

ন্যূনতম মজুরির দাবিতে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন চা বাগানে দীর্ঘদিন থেকেই আন্দোলন চলছে। জনের ছোট্ট বক্তব্যে সেই প্রসঙ্গও ওঠে।

 জন বার্লা।

জন বার্লা।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আলিপুরদুয়ার শেষ আপডেট: ২০ জুলাই ২০১৯ ০৬:১৪
Share: Save:

সংসদে নিজের প্রথম বক্তব্যে চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি, জমির পাট্টা, বন্ধ বাগান খোলা ও অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের পিএফ-গ্র্যাচুইটির সমস্যা সমাধানের পক্ষে সওয়াল করলেন আলিপুরদুয়ারের বিজেপি সাংসদ জন বার্লা। চা বাগান অধ্যুষিত কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত দলের সাংসদের প্রথম এই সওয়ালে উচ্ছ্বসিত বিজেপির আলিপুরদুয়ারের নেতা-কর্মীরা। তবে রাজ্যকে এড়িয়ে সংসদে চা বাগান নিয়ে সওয়াল করে জন আসলে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকেই আঘাত করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছে তৃণমূল।

বৃহস্পতিবার সংসদে প্রথমবার নিজের বক্তব্য পেশের সুযোগ পান জন। নিজের বক্তব্যের শুরুতেই জন বলেন, ‘‘আমি চা বলয় অধ্যুষিত আলিপুরদুয়ার কেন্দ্র থেকে সংসদে এসেছি। আমাদের ওখানে ৩৭৩টি চা বাগানের মধ্যে অনেকগুলি বাগান এখনও বন্ধ। বেশ কিছু বাগানে অবসরপ্রাপ্ত শ্রমিকদের পিএফ বা গ্র্যাচুইটি দেওয়া হয় না।’’ এরপরই লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা জনকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘‘আপনি নিজেও চা শ্রমিক থেকে সাংসদ হয়েছেন।’’ তা শুনে অনেক সাংসদই টেবিল চাপড়ে জনকে অভিনন্দন জানান। স্পিকারের কথার উত্তরে জনকে বলতে শোনা যায়, ‘‘আমি লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানের একজন স্থায়ী শ্রমিক। আমি এখনও চা বাগানের কোয়ার্টারে থাকি। আমার নিজের এক ইঞ্চিও জমি নেই।’’ এরপর জন আরও ‘আক্রমণাত্মক’ হয়ে বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে রোহিঙ্গাদেরও জমির পাট্টা রয়েছে। কিন্তু আমাদের, অর্থাৎ চা শ্রমিকদের পাট্টা নেই।’’

ন্যূনতম মজুরির দাবিতে উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন চা বাগানে দীর্ঘদিন থেকেই আন্দোলন চলছে। জনের ছোট্ট বক্তব্যে সেই প্রসঙ্গও ওঠে। সংসদের দাঁড়িয়ে জন বলেন, ‘‘আমাদের মজুরি এখনও ১৭৬ টাকাতেই পড়ে রয়েছে। যে টাকায় একজন শ্রমিককে সংসার চালিয়ে ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা পর্যন্ত করাতে হয়।’’ জন অভিযোগ করেন, ‘‘এই সংসদেই টি প্ল্যান্টেশন অ্যাক্ট, ১৯৫১ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গে যে আইন কার্যকর করা হয়নি।’’ অবিলম্বে ওই আইন কার্যকর করে শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির ব্যবস্থার দাবিও তোলেন জন।

জনের এই বক্তব্যের কড়া প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা নেতারা। তৃণমূলের চা শ্রমিক নেতা তথা দলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি মোহন শর্মা বলেন, ‘‘যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় চা রাজ্যের বিষয়। কিন্তু রাজ্যকে এড়িয়ে বিজেপি সাংসদ এ ধরনের বক্তব্য পেশ করে যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত হানলেন, তা অত্যন্ত লজ্জাজনক। তবে বিজেপি নেতাদের থেকে এর চাইতে আর কীই বা আশা করা যায়?’’ এর উত্তরে জন অবশ্য বলেন, ‘‘সংসদে আইন চা বাগানের আইন গোটা ভারতের জন্য তৈরি হয়েছিল। সেটা যদি কোনও রাজ্য না মানে তাহলে তো সংসদেই তা তুলে ধরতে হবে। এতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাতের কী আছে?’’ বিজেপির জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘এর আগে তৃণমূলের সাংসদ একবারও চা বাগান প্রসঙ্গ সংসদে তোলেননি। জন বার্লার প্রথম বক্তব্যেই চা বাগানের সমস্যা উঠে আসায় আলিপুরদুয়ারবাসী গর্বিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Alipurduar John Barla Tea Workers Parliament
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE