Advertisement
E-Paper

ঠিকানা হলেও আশ্রয়হীন ভবঘুরেরা

নমিতেশ ঘোষ

শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৮ ০৪:০৯
আশ্রয়: ভবঘুরেদের হোম।

আশ্রয়: ভবঘুরেদের হোম।

‘ঠিকানা’র উদ্বোধন হলেও ঠিকানা মেলেনি ভবঘুরেদের। কারও রাত কাটে মদনমোহন বাড়ির সামনে। কেউ স্টেশনেই শুয়ে থাকে গুটিসুটি হয়ে। কেউ বা কোনও কোনও দোকানের চালার নিচে নেয় আশ্রয়। রাত যত বাড়ে, বেড়ে যায় ঠাণ্ডা। কুয়াশার চাদরে ঢেকে যায় চারপাশ। ঘুম আর আসে না। জেগেই কাটে রাত। ব্রজেশ্বরী, জয়ন্তী, ছন্দাদের কথায়, “চারদিক থেকে হু হু করে হাওয়া আসতে থাকে। হালকা চাদর, কম্বল সব যেন ভিজে জল হয়ে যায়। এই শীতে কি আর ঘুম ধরে।” বলতে বলতে চোখে জল চলে আসে জয়ন্তী কলিতার।

মা-বাবার মৃত্যুর পরে বাড়ি ছাড়েন অসমের নলগ্রামের বাসিন্দা জয়ন্তী। তিনি বলেন, “ভাই মারধর করে। আমি বিয়ে করিনি। কোথায় যাই ভাবতে ভাবতেই কোচবিহারে চলে এসেছি। এখন রাতে থাকতে খুব কষ্ট হয়। শীতে হাত-পা অসাড় হয়ে আসে।” খাগরাবাড়ির বাসিন্দা ব্রজেশ্বরী বর্মন বলেন, “বৈরাগী দিঘির পাড়েই রাত কাটে আমাদের। মাথার উপরে ছাদ থাকলেও চারদিক থেকে হু হু করে হাওয়া আসে।’’

মাথার উপর ছাদ নেই যাদের, তাঁদের কথা ভেবে মাস খানেক আগে কোচবিহারের বিবেকানন্দ স্ট্রিটে ঘটা করে উদ্বোধন হয়েছিল তিনতলা বাড়ির। ‘ঠিকানা’ নামের সেই বাড়িতে পঞ্চাশ জনের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়। পুরসভা সূত্রের খবর, প্রায় দেড় কোটি টাকা খরচ করে ওই বাড়ি তৈরি করা হয়। সেখানে পুরুষ ও মহিলাদের আলাদা আলাদা ভাবে থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রান্না, ভবঘুরেদের দেখভাল সবের জন্য আলাদা ভাবে লোক নিয়োগ করার কথা। কিন্তু সেই বাড়িতে এখনও ঠাঁই হয়নি কারও। খোঁজ নিয়ে ফিরেও এসেছেন অনেকে। বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি নিখিলরঞ্জন দে বলেন, “এখন প্রচণ্ড শীত চলছে। অনেক মানুষ রাত কাটানোর জায়গা খুঁজে পাচ্ছেন না। অথচ এতগুলি সরকারি টাকা খরচ করে ওই বাড়ি বানানোর মানে কি?”

কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান ভূষণ সিংহ জানান, লেপ-তোষক, আসবাবপত্রের জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছে। ই-টেন্ডার একটা সময়ের ব্যাপার। তিনি বলেন,“ওই কাজ দ্রুততার সঙ্গে করা হচ্ছে। এই শীতেই ভবঘুরেদের রাখতে পারলে ভাল হত। কিন্তু সমস্ত কাজ সম্পূর্ণ না করে তাঁদের রাখা অসুবিধে।”

প্রশ্ন উঠেছে, প্রায় এক মাস আগে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ সহ কোচবিহারে সমস্ত বিধায়ক ও প্রশাসনিক আধিকারিকদের উপস্থিতিতে ওই বাড়ি উদ্বোধন হয়। তা হলে সেই সময় কেন প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো তৈরি করা হল না।

Home Homeless
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy