E-Paper

ছয় দিন ধরে মহড়া সেনা বাহিনী ও বায়ু সেনার, উড়ল রাফাল, নামল ডুবুরিও

একেবারে পুরোপুরি যুদ্ধের পরিস্থিতি আকাশ থেকে নদীপথে। তবে যুদ্ধ নয় বা রোহিত শেঠীর সিনেমা সিরিজের শুটিং নয়। পুরোটাই সেনা বাহিনীর অত্যন্ত বড় মাপের মহড়া।

কৌশিক চৌধুরী

শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:৩৯
উত্তরবঙ্গের আকাশ, নদী ও সমতলে সেনা এবং বায়ুসেনার বিশেষ যুদ্ধ মহড়া।

উত্তরবঙ্গের আকাশ, নদী ও সমতলে সেনা এবং বায়ুসেনার বিশেষ যুদ্ধ মহড়া। ছবি: সেনাবাহিনীর সৌজন্যে।

বাংলাদেশ থেকে চিন সীমান্ত অবধি উড়ল রাফাল ও সি-১৩০ হারকিউলিস। একাধিক যুদ্ধ বিমান থেকে ঝাঁপিয়ে পড়লেন ১ হাজার প্যারাড্রুপার। বিমান থেকে মাটি ছুঁল একাধিক আগ্নেয়াস্ত্র। খরস্রোতা তিস্তা নদীতে নামল ডুবুরি৷ তিস্তা ক্যানেল, ব্যারেজ এলাকার জলে স্পিডবোট চালিয়ে পারে সারি দিয়ে উঠে এলেন, কালো পোশাকে ঢাকা অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র সহ কমান্ডোরা। মাথার উপরে আকাশে তখন উড়ছে একের পর এক এএন-৩২ এবং এএলএইচ হেলিকপ্টার। কন্ট্রোল রুমের বড় বড় এলইডি পর্দায় টার্গেট নষ্ট করের ছবি ও তথ্য ফুটে উঠছে। অন্তত তিনটি রাফালের উড়ে লক্ষ্য নষ্টের ছবিও ভাসছে পর্দায়।

একেবারে পুরোপুরি যুদ্ধের পরিস্থিতি আকাশ থেকে নদীপথে। তবে যুদ্ধ নয় বা রোহিত শেঠীর সিনেমা সিরিজের শুটিং নয়। পুরোটাই সেনা বাহিনীর অত্যন্ত বড় মাপের মহড়া। গত ২২ জানুয়ারি থেকে ২৭ জানুয়ারি, ছয় দিন উত্তরবঙ্গের আকাশে, জলপথে চলল সেনা বাহিনী ও বায়ুসেনার বিশেষ মহড়া। পোশাকি নাম দেওয়া হয়েছিল-‘ডেভিল স্ট্রাইক’। কোচবিহারের বাংলাদেশ, আলিপুরদুয়ারের ভুটান সীমান্ত থেকে দার্জিলিঙের নেপাল থেকে সিকিম চিন সীমান্ত অবধি উড়ল রাফাল। সেনা বাহিনীর উত্তরবঙ্গ, সিকিমের দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩৩ কোরের অফিসারেরা সুকনা থেকে নজরদারি চালালেন গোটা প্রক্রিয়াটি। সেই সঙ্গে বাগডোগরা, বেংডুবি, হাঁসিমারা-সহ একাধিক সেনা ছাউনিকে জুড়ে রাখা হল পুরো প্রক্রিয়ায়। ওই ছয় দিন উত্তরের আকাশে একাধিক বিমানের গতিবিধি দেখেও সাধারণ বাসিন্দারা বিষয়টি বুঝতে পারেনি। ভোরবেলা থেকে সন্ধ্যায় বিশেষ এলাকা, বিশেষ সময় বাছাই করেই পুরো মহড়া চলেছে। চালানো হয়েছে আকাশ থেকে লেসার দিয়েও লক্ষ্য ধবংস করা হয়েছে।

সেনা বাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, দেশের সীমানার মধ্যে থেকেই সমস্ত আধুনিক অস্ত্র, বিমান, সরঞ্জামের ব্যবহার করা হয়েছে। সেনার ৩৩ কোরের অন্যতম মুখপাত্র কর্ণেল অঞ্জন কুমার বসুমাতারি বলেন, ‘‘আকাশকে ব্যবহার করে বিরাট মাপের মহড়া হয়েছে। বায়ু সেনাও সেনা বাহিনীর সঙ্গে অংশ নিয়েছে। বাহিনীর তৎপরতা, কৌশল, নিপুনতা ঠিকঠাক দেখতেই মহড়া। পুরো মহড়াই সফল হয়েছে।’’ তিনি জানান, আকাশ থেকে লক্ষ্য নষ্ট শুধু নয়, পরপর প্যারাশুটে সৈন্য, ভারী অস্ত্র-সহ নানা সরঞ্জাম নামিয়ে সমতলের বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রেখে নির্দিষ্ট কাজে গতি এবং সফলতা দেখা হয়েছে।

সেনা বাহিনী সূত্রের খবর, দুই বছর আগে পঞ্জাবের আম্বালা থেকে পাঁচটি রাফাল বিমান উত্তরবঙ্গে এসেছে। হাঁসিমারা বায়ু সেনা ছাউনিতে রাফালের আলাদা ছাউনি তৈরি হয়েছে। চিনের ডোকালাম-সহ একাধিক এলাকায় আগ্রাসি মনোভাবের পর নতুন যুদ্ধ বিমান হাঁসিমারার পর বাগডোগরাতেও এসেছে। গত বছর এক দফায় রাতের অন্ধকারে উত্তরবঙ্গের আকাশে বায়ুসেনা রাফাল সহ যুদ্ধ বিমানের মহড়া চালায়। সেভার সীমান্ত লঙ্ঘন করা হয়েছে না কি সেই প্রশ্নও উঠেছিল। যদিও সেনার তরফে স্পষ্ট বলা হয়, নিজের এলাকায় থেকে সীমান্তের ওপারে নজরদারি করা হয়েছে। সেনার দাবি, আক্ম নির্ভর ভারত অভিযানের আওতায় সমস্ত কিছু করা হয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Indian Navy Indian Air Force

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy