কিছু দিন আগে রায়গঞ্জের বিজেপি সাংসদ কার্তিকচন্দ্র পাল উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনার কাছে লিখিত ভাবে রায়গঞ্জ শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে পাঁচটি পুকুর ভরাটের অভিযোগ জানান। রায়গঞ্জের প্রাক্তন কংগ্রেস বিধায়ক মোহিত সেনগুপ্তও পৃথক ভাবে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিতভাবে ওই অভিযোগ জানান।
জেলাশাসকের নির্দেশে সপ্তাহ দুয়েক আগে ওই ঘটনার তদন্তও শুরু করে প্রশাসন। এই আবহে এ বার শহরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে বিদ্রোহী মোড় সংলগ্ন এলাকার লাইন বাজারের পিছনে একটি পুকুর ভরাটের অভিযোগের ঘটনায় নাম জড়াল রায়গঞ্জ পুরসভার প্রশাসক বোর্ডের ভাইস চেয়ারপার্সন তথা জেলা তৃণমূলের সহ সভাপতি অরিন্দম সরকারের (গোরা)। রবিবার একটি ভিডিয়ো (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) সমাজমাধ্যমে ‘ভাইরাল’ হয়। সেই ভিডিয়োয় মাটি বহনকারী এক ডাম্পার চালক-সহ এক জনকে জিজ্ঞাসাবাদে মালিক প্রসঙ্গে অরিন্দমের ডাক নাম বলতে শোনা গিয়েছে। ওই ঘটনায় ফের রায়গঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক কৃষ্ণ কল্যাণীর সঙ্গে অরিন্দমের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এসেছে।
পুকুর ভরাটের অভিযোগ প্রসঙ্গে অরিন্দম নথি দেখিয়ে দাবি করেন, ওই পুকুরের মালিক তিনি নন। পুকুরটি বাণিজ্যিক বাস্তু জমি। অরিন্দম বলেন, “দিন কয়েক আগে শহরে জল জমা নিয়ে তৃণমূলের বিধায়ক কৃষ্ণবাবু তৃণমূলেরই পুরসভার বিরুদ্ধে কথা বলেন। আমি প্রতিবাদ করি। তাই, বিধায়ক এ বার কলকাঠি নেড়ে আমার চরিত্রে কালি লাগানোর চেষ্টা করছেন। ওঁনার সঙ্গে বিজেপির যোগ থাকতে পারে বলে সন্দেহ হচ্ছে।” অরিন্দমের আরও দাবি, ওই জমিতে মাটি ফেলার বিনিময়ে তোলাবাজি বন্ধ করায় তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। অরিন্দমের অভিযোগ, “অতীতে বিধায়ক তাঁর নিজের লেটার হেডে শহরের উকিলপাড়ায় একটি পুকুর ভরাটের পক্ষে এনওসি দিয়েছিলেন। পূর্ব অশোকপল্লিতে বিধায়কের অংশীদারিত্বে থাকা একটি বাণিজ্যিক ভবনের একাংশের জমি সরকারি নথিতে এখনও পুকুর বলে চিহ্নিত।” কৃষ্ণের দাবি, তিনি শহরে জল জমা নিয়ে যা বলেছেন, তা সমাজমাধ্যমে রয়েছে। তিনি অতীতে শহরের পুকুর ভরাট ভরাটের অভিযোগ প্রসঙ্গে ভূমি সংস্কার দফতরকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করেন। অরিন্দমের নাম না করে কৃষ্ণ বলেন, “আত্মশুদ্ধির জন্য ওঁনার আত্মচিন্তনের সময় এসেছে। পুরসভা রাজ্য সরকারের অধীনে। উনি সাত বছরে এক জনকেও তৃণমূলের পতাকা ধরাতে পারেননি। মানুষ আমাকে তৃণমূলের বিধায়ক করেছেন। অন্যায়ের প্রতিবাদ চলবে। তাই অবসাদ কাটাতে ওঁর এখন চিকিৎসককে দেখানো উচিত।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)