উত্তরবঙ্গে ভেষজ উদ্ভিদ ও সুগন্ধি গাছের বাণিজ্যিক চাষে আগ্রহ বাড়াতে উদ্যোগী হয়েছে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই ব্যাপারে সেন্ট্রাল ইন্সস্টিটিউট অব মেডিসিনাল অ্যান্ড অ্যারোমেটিক প্ল্যান্ট (সিম্যাপ) -এর সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষরের পরিকল্পনাও চূড়ান্ত হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে পুজোর আগেই ওই কেন্দ্রীয় সংস্থার সঙ্গে মউ স্বাক্ষর করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষ।
শুক্রবার কোচবিহারের পুন্ডিবাড়িতে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে মশলা, ভেষজ উদ্ভিদ ও সুগন্ধি গাছের চাষ ও শিল্প সম্ভাবনা নিয়ে দু’দিনের আলোচনা চক্র শুরু হয়েছে। ওই আলোচনা চক্রে সিম্যাপ-এর প্রতিনিধিরাও যোগ দিয়েছেন। সেখানেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে মউ স্বাক্ষরের বিষয়টি চূড়ান্ত করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ওই অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, “বিকল্প চাষে উৎসাহ বাড়ানোর জন্য ওই উদ্যোগ প্রশংসনীয় ব্যাপার।’’ রাজ্য সরকার ওই বিষয়ে জোর দিচ্ছে বলেও জানান তিনি। এর মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ তৈরি হওয়ার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বলেও জানান তিনি। মন্ত্রী আরও বলেন, ‘‘কোচবিহার-সহ গোটা উত্তরবঙ্গেই ওই চাষের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি। ভেষজ ও সুগন্ধি গাছের জন্য প্রয়োজনীয় শিল্পস্থাপনের ব্যাপারেও চেষ্টা হচ্ছে।’’
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রেই জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গে বাণিজ্যিকভাবে ভেষজ ও সুগন্ধি গাছের চাষ সেভাবে শুরু হয়নি। মূলত বনাঞ্চল থেকেই ওই সব সামগ্রী সংগ্রহ করা হয়। অথচ উত্তরবঙ্গে সিট্রোনিলা, সর্পগন্ধা, লেমন গ্র্যাস, তুলসী, পিপুল, কালমেঘ, সিঙ্কোনা, নয়নতারা, পুদিনার মত ওষধি ও সুগন্ধি গাছ চাষের অনুকূল আবহাওয়া রয়েছে। এবার চাষিদের ওই চাষে আগ্রহ বাড়ানোর ব্যাপারে বাড়তি জোর দেওয়া হচ্ছে। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য চিরন্তন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “ভেষজ ও সুগন্ধি গাছের চাষ নিয়ে ওই সংস্থার কাজের খ্যাতি রয়েছে। তাদের সহযোগিতা নিয়ে আমরা এগোতে চাইছি।’’ সিম্যাপ-এর প্রতিনিধি বিজ্ঞানী সঞ্জয় কুমার বলেন, “মউ স্বাক্ষরের ব্যাপারে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে।’’ তা হলে চারা গাছ দেওয়া-সহ বিভিন্ন ব্যাপারে সহযোগিতা করা যাবে বলে জানান তিনি।
এ দিনের অনুষ্ঠানে আগ্রহী কৃষকদের পাশাপাশি শিল্পস্থাপনে আগ্রহী ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরাও উপস্থিত ছিলেন। শনিবার পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলবে। এ দিন অনুষ্ঠানেআলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন বিধায়ক দেবপ্রসাদ রায়। আলোচনা শিবিরে যোগদানকারী চাষিদের প্রত্যেককে বিনামূল্যে ১০টি করে গোলমরিচের চারা দেওয়া হবে।