অগ্নিগর্ভ: জ্বলছে বাইক। শালমারায়। নিজস্ব চিত্র।
বিধানসভা ভোটের আগে দলকে যখন সঙ্ঘবদ্ধ করে তোলার চেষ্টা করছেন রাজ্য নেতৃত্ব, ঠিক তখনই তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে দিনহাটার শালমারা উত্তপ্ত হয়ে উঠল বৃহস্পতিবার মধ্য রাত থেকে। মুহুর্মুহু গুলি-বোমা চলার অভিযোগও উঠেছে। দফায় দফায় এই সংঘর্ষ চলল শুক্রবর সকাল পর্যন্ত। বেশ কয়েকটি মোটরবাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হল। ভাঙচুর হল দোকানপাট। দু’পক্ষ মিলিয়ে অন্তত ৮ জনের জখম হওয়ার খবর মিলেছে। দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ ঘনিষ্ঠ তাসকির চৌধুরীকে রক্তাক্ত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
এই ঘটনায় মধ্য রাত থেকেই আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে দিনহাটার বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী এলাকা শালমারায়। দিনহাটা-২ নম্বর ব্লকের পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য তরণী বর্মণের সঙ্গে উদয়ন গুহের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষেই এই ধুন্ধুমার, অভিযোগ এলাকার সন্ত্রস্ত বাসিন্দাদের। এ দিনও দোকানবাজার সব বন্ধ ছিল দিনভর। দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক রানা গোস্বামী বলেন, “ব্যবসায় যাতে কোনও ভাবেই এমন সংঘর্ষের প্রভাব না পরে, পুলিশের তা দেখা উচিত। না হলে বড় ক্ষতি হবে।” এক তৃণমূল কর্মীর কথায়, “রাতে আতঙ্কে ছিলাম, কী জানি কেউ আবার আমার বাড়িতে না হামলা চালায়!” কোচবিহারের পুলিশ সুপার সানা আকতার বলেন, “কারও যাতে কোনও অসুবিধে না হয় সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে।”
পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নব্য তৃণমূল উদয়ন ও আদি তৃণমূল তরণীর মধ্যে এলাকা দখলের লড়াই থেকেই এ দিনের সংঘর্ষ। সম্প্রতি তৃণমূলের ব্লক ও জেলা কমিটি গঠন করা হয়। তা নিয়ে এই দুটি গোষ্ঠীর মধ্যে বিরোধ বাড়তে শুরু করে। উদয়ন বিরোধী বলে পরিচিত তৃণমূলের দিনহাটা-২ নম্বর ব্লকের প্রাক্তন সভাপরি মীর হুমায়ুন কবীর ও তরণী বর্মণের অনুগামীদের অভিযোগ, তাঁরা তৃণমূলের পুরনো কর্মী, অথচ সংগঠনে তাঁদের কোণঠাসা করে রাখা হয়েছে। উদয়ন অনুগামীদের পাল্টা অভিযোগ, ওই নেতাদের জন্য দলের ভাবমূর্তি খারাপ হচ্ছে।
উদয়ন বলেন, ‘‘এদিনের এই ঘটনায় দোষীরা যাতে উপযুক্ত শাস্তি পায়, তার জন্য পুলিশকে দেখতে বলা হয়েছে।” তাঁর ঘনিষ্ঠ তৃণমূলের দিনহাটা দুই ব্লক সভাপতি বিষ্ণু সরকার বলেন, ‘‘দলীয় কার্যালয় দখলকে কেন্দ্র করেই এ দিন এই গন্ডগোলের সূচনা হয়। বেশ কয়েক জনের মোটর বাইকে আগুন লাগিয়ে দেওয়া ছাড়াও কয়েক জনকে মারধর করা হয়।” তরণী বলেন, ‘‘এদিন বাইরে থেকে লোক নিয়ে এসে এলাকায় অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা হয়েছিল। এলাকার তৃণমূল সমর্থকরা তাদের প্রতিহত করে। কারও অঙ্গুলিহেলন ছাড়া এই ঘটনা সম্ভব নয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy