Advertisement
০৪ মে ২০২৪

বিক্ষুব্ধদের অন্তর্ঘাতের আশঙ্কা মন্ত্রীর

শিলিগুড়ি পুরভোটে বিক্ষুব্ধরা অন্তর্ঘাত ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন খোদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা দলের জেলা সভাপতি গৌতম দেব। শনিবার হিলকার্ট রোডের তৃণমূল পার্টি অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করে মন্ত্রী বলেন, ‘‘কোনও ওয়ার্ডে কোনও নেতা বা কর্মী অর্ন্তঘাত করার চেষ্টা করলে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০১৫ ০১:৫১
Share: Save:

শিলিগুড়ি পুরভোটে বিক্ষুব্ধরা অন্তর্ঘাত ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করলেন খোদ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী তথা দলের জেলা সভাপতি গৌতম দেব। শনিবার হিলকার্ট রোডের তৃণমূল পার্টি অফিসে সাংবাদিক বৈঠক করে মন্ত্রী বলেন, ‘‘কোনও ওয়ার্ডে কোনও নেতা বা কর্মী অর্ন্তঘাত করার চেষ্টা করলে চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে কড়া পদক্ষেপ করা হবে।’’

ঘটনাচক্রে, এ দিন শিলিগুড়িতেও দলের দুই নেতাকে ৬ বছরের জন্য বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেছে জেলা তৃণমূল। আরও দু’টি ওয়ার্ডের নির্দল প্রার্থীদের সঙ্গে দলের কোনও সংস্রব নেই বলেও জেলা সভাপতি দাবি করেছেন। বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীদের একাংশের কাজকর্মের উপরে দল নজর রাখছে বলেও এ দিন তৃণমূলের তরফে জানানো হয়েছে।

গৌতমবাবু বলেন, ‘‘দল বিরোধী কাজের জন্য দু’জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বিচ্ছিন্নভাবে কেউ যদি দল বিরোধী কাজ করে তবে পদক্ষেপ করা হবে। দলের প্রতীকে দাঁড়ানো প্রার্থীর বিরুদ্ধে কেউ যদি কাজ করে, তবে দল রেয়াত করবে না। এ বিষয়ে দল কঠোর এবং কঠিন।’’ বিক্ষুব্ধরা অন্তর্ঘাত চালাতে পারে এমন সুনির্দিষ্ট তথ্য দলের কাছে রয়েছে কিনা জানতে চাওয়া হলে মন্ত্রী বলেন, ‘‘এখনও স্পষ্ট নয়। আমরা বিচ্ছিন্ন ভাবে বেশ কিছু রিপোর্ট পেয়েছি। এমন কোথাও ঘটলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ এ দিনের ঘোষণার পরে দলের সাধারণ কর্মীদের একাংশ মনে করছেন, বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে জেলা নেতৃত্বের কাছে পৌঁছনো রিপোর্টে এমন বেশ কিছু তথ্য রয়েছে যাতে অর্ন্তঘাতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। শনিবার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের যুব নেতা রাজেশ রায় এবং ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডে দলের আহ্বায়ক দিলীপ বর্মনকে বহিষ্কার করেছে তৃণমূল।

৩ নম্বর ওয়ার্ডে কে প্রার্থী হবে তা নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষে রক্ত ঝরেছিল। দলের কর্মীদের একাংশ নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে পথ অবরোধ করেছিলেন। প্রার্থী তালিকা ঘোষণার দিন দলের জেলা অফিসেই বিভিন্ন ওয়ার্ডের কর্মীদের একাংশ বিক্ষোভ দেখায়। এমনকী দলের প্রার্থী পছন্দ না হওয়ায় মন্ত্রী গৌতমবাবুর বাড়ির দিকেই মিছিল নিয়ে ক্ষোভ জানাতে গিয়েছিলেন ৩৬ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কর্মীরা।

দলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ জানিয়ে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নেতা-কর্মীদের একাংশ হিলকার্ট রোডে মিছিল করে। দলের পতাকা নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল হয় চম্পাসারিতেও। এ ছাড়াও ৩১, ১১, ২৯ নম্বর সহ বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডে ক্ষোভ প্রকাশ্যে আসে। দল সূত্রে খবর, প্রকাশ্যে না এলেও একাধিক ওয়ার্ডে কর্মীরা মনের মধ্যে ক্ষোভ পুষে রেখেছেন। কেউ প্রচারে না নেমে পুরোপুরি ‘বসে’ পড়েছেন, কেউ বা নির্দল প্রার্থী অথবা বিরোধী শিবিরে ভিড়েছেন। আবার একাংশ নেতা-কর্মী দলের প্রার্থীর হয়ে মিছিলে হাঁটলেও, তলে তলে বিরোধীদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। ভোটে এদের সঠিক ভূমিকা কী হবে তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় তৃণমূল নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই বামেরা প্রাক্তন পুরমন্ত্রীকে মেয়র পদপ্রার্থী তুলে ধরে প্রচার শুরু করেছে। বামেদের দাবি, প্রচারে ভাল সাড়া মিলেছে। চলতি সপ্তাহে বামেদের প্রকাশ করা ইস্তেহারেও ঢালাও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে।

প্রচারে চমক দেওয়ার কৌশলে শহরে তারকা সমাবেশ ঘটাতে চাইছে বিজেপি। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের সাধারণ কর্মীদের একাংশের দাবি, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবু পুরভোটে প্রার্থী হিসেবে প্রচার শুরু করেও, দলের নির্দেশে সরে দাঁড়ানোয় জনমানসে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। নানা গোষ্ঠী সমীকরণে বিভক্ত তৃণমূল ভোটের আগে কাউকে মেয়র পদপ্রার্থী হিসেবেও তুলে ধরেনি। এর সঙ্গে অর্ন্তঘাতও যুক্ত হলে কী হবে তা নিয়ে নানা আশঙ্কা দানা বাঁধছে তৃণমূলের অন্দরেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE