রাজ্য পুলিশের ‘অ্যাডিশনাল ডিরেক্টর জেনারেল’ (এডিজি)কে জয়রামনের নির্দেশে বদলানো হল দম্পতিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা মামলার তদন্তকারী অফিসার। হাই কোর্টের নির্দেশে এই মামলার তদন্তের তত্ত্বাবধান করছেন জয়রামন। গোড়া থেকে এই তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানার সাব-ইনস্পেক্টর শিবু কর। গত বৃহস্পতিবার জয়রামনের পাঠানো এক ‘নোট’ মোতাবেক তদন্তভার জেলা পুলিশের ডিআইবি-র ইনস্পেক্টর নীতেশ লামাকে দেওয়া হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। তদন্তকারী অফিসার বদলের সঙ্গে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্কও।
এ দিন পুরসভা-পুলিশ যৌথ ভাবে হকার উচ্ছেদ অভিযান চালায়, যাতে এক সঙ্গে দেখা গিয়েছে আত্মহত্যায় প্ররোচনায় অভিযুক্ত উপ-পুরপ্রধান, কোতোয়ালি থানার আইসি অর্ঘ্য সরকার এবং ওসি ট্র্যাফিক বাপ্পা সাহাকে। সে ছবি সৈকত সমাজমাধ্যমে দিয়েছেন। দম্পতির মেয়ে তানিয়া ভট্টাচার্যের মন্তব্য, ‘‘প্রথম থেকেই বলছি, পুলিশ অভিযুক্তদের মাথায় তুলে রেখেছে। অভিযুক্তের সঙ্গে পুলিশকে দেখা গেল! কী করে পুলিশের থেকে সুবিচার আশা করব!’’
দম্পতিকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ায় অন্যতম অভিযুক্ত জেলা তৃণমূল যুব সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চে আগাম জামিনের যে আবেদন করেন, তার পরবর্তী শুনানি ১২ জুন। তত দিন পর্যন্ত সৈকতকে হাই কোর্টের অনুমতি ছাড়া, গ্রেফতার করা যাবে না। মামলাকারীদের অন্যতম আইনজীবী সৌজিত সিংহের প্রশ্ন, ‘‘হাই কোর্ট সাময়িক রক্ষাকবচ দিলেও মামলার তদন্তভার জেলা পুলিশের হাতেই রয়েছে। আগাম জামিনের আবেদন এখনও গ্রাহ্য হয়নি। কিন্তু যখন রক্ষাকবচ ছিল না, তখনও সৈকত চট্টোপাধ্যায় থানায়, পুলিশকর্তাদের অফিসে গিয়েছিলেন। আর এ দিন গোটা শহর দেখল, অভিযুক্ত এবং তদন্তকারীরা পাশাপাশি হাঁটছেন। এর পরেও কেন মামলার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে যাবে না?’’
সৈকত দাবি করেছেন, মামলার তদন্তভার কোতোয়ালি থানার হাতে নেই জানার পরেই তিনি অভিযানে যোগ দেন। সৈকত বলেন, ‘‘এ বার তদন্ত করবেন ডিআইবি-র ইনস্পেক্টর। তাই কোতোয়ালির আইসি-র সঙ্গে অভিযানে যেতে আইনি বাধা নেই।’’
জলপাইগুড়ির বিজেপি সাংসদ জয়ন্ত রায়ের মন্তব্য, ‘‘জেলা পুলিশ তদন্ত করছে আর জেলা পুলিশেরই অফিসারদের সঙ্গে হাঁটার ছবি অভিযুক্ত সমাজমাধ্যমে ছড়াচ্ছেন! কত বড় ঔদ্ধত্য!’’ এ বিষয়ে মন্তব্য করেননি জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ। জেলা পুলিশ সুপার উমেশ খাণ্ডবহালে বলেন, ‘‘উপ-পুরপ্রধান হিসেবেই সৈকত চট্টোপাধ্যায় অভিযানে ছিলেন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)