ধর্তিমোহন রায়।—নিজস্ব চিত্র।
প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন অনেকেই। কিন্তু সবাইকে টপকে এবার জলপাইগুড়ি বিধানসভা আসনে টিকিট পেলেন ধর্তিমোহন রায়।
ধর্তিমোহনবাবু জলপাইগুড়ি প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান। জলপাইগুড়ির খারিজা বেরুবাড়ি এক নম্বর এলাকার বাসিন্দা এবং আদি তৃণমূল করা একজনকে বিধানসভা আসনে প্রার্থী করে তালিকায় চমক আনলো তৃণমূল কংগ্রেস।
জলপাইগুড়ির এই আসনটির দাবিদার ছিলেন একজন আইনজীবী, একজন জনপ্রতিনিধির ছেলে, এবং জলপাইগুড়ি পুরসভার দুজন কাউন্সিলার। উচ্চশিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের স্নেহধন্য ধর্তিমোহনের সমর্থনে স্থানীয় নেতাদের মধ্যে ছিলেন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়। কিছুদিন আগেও জেলাপরিষদের প্রেক্ষাগৃহে কল্যাণ চক্রবর্তীর নেতৃত্বে আদি তৃণমূল কর্মীদের যে সন্মেলন হয় সেখানে উপস্থিত থেকে দলে নতুন ঢোকা তৃণমূল কর্মীদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন ধর্তিমোহন রায়। সেই ক্ষোভের বার্তা পৌঁছে গিয়েছিল কলকাতায় নেত্রীর কানে।
এবারেও যারা বিধানসভা আসনে সম্ভ্রাব্য প্রার্থী ছিলেন তাঁদের মধ্যে একজন মহিলা তৃণমূল কাউন্সিলার ছাড়া সকলেই নব্য তৃণমূল কংগ্রেস। জনপ্রতিনিধির ছেলে তো কোনওদিন রাজনীতির ধারে কাছেও ছিলেন না। পারিবারিক কর্তৃত্ব বজায় রাখতে ওই জনপ্রতিনিধি তাঁর ছেলেকে প্রার্থী করতে ছেয়েছিলেন বলে জানা গিয়েছে।। যদিও সেই জনপ্রতিনিধি বলেন, “আমি আমার ছেলেকে প্রার্থী করার জন্য কাউকে বলিনি। দলের লোকজনই তাঁর বায়োডাটা নিয়ে জমা দিয়েছিল।”
সন্ধ্যা সাড়ে ছ’টার সময় জলপাইগুড়ি মিউনিসিপ্যাল মার্কেটে তৃণমূলের প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের অফিসে ধর্তিমোহন রায়কে পাওয়া গেল। তাকে ঘিরে তখন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায় এবং জলপাইগুড়ি জেলার তৃণমূল যুব কংগ্রেস এবং ছাত্রপরিষদের নেতারা। এছাড়াও ছিলেন তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের নেতারা। ধর্তিমোহন রায় বলেন, “আমি দলের সবাইকে নিয়ে চলতে চাই। কংগ্রেস এবং বামেরা জোট করলেও জনসাধারণ মেনে নেবে না। স্বার্থের জন্যই জোট হচ্ছে। আমার জিততে কোনও অসুবিধা হবেনা।” ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য তিনি।
মাধ্যমিক পর্যন্ত মন্ডলঘাট হাইস্কুলে পড়েছেন। তারপর জলপাইগুড়ির সোনাউল্লা হাইস্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেছেন। স্নাতক হয়েছেন জলপাইগুড়ি আনন্দচন্দ্র কলেজ থেকে। ইতিহাসে স্নাতকোত্তর পাশ করার পর ধর্তিমোহন বার্ণেশ হাইস্কুলে ১৯৮১ সাল থেকে শিক্ষকতা করছেন। এখন জলপাইগুড়ি শহরের আনন্দপাড়ায় বাড়ি।
জলপাইগুড়ি থেকে ধর্তিমোহনের নামটা তৃণমূলের নির্বাচক মণ্ডলীর দুই সদস্য অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুব্রত বক্সির কাছে পৌঁছে দিয়েছিলেন জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সৈকত চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ওনার কর্মপদ্ধতির স্বচ্ছতা আছে। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে দলের সঙ্গে থাকা ওনাকে আমাদের যোগ্য মনে হয়েছে বলেই ওর নামটা আমরা প্রস্তাব করেছিলাম।”
এর আগে একবারই ভোটে দাঁড়িয়েছিল ধর্তিমোহন রায়। ২০০০ সালে পুরসভার নির্বাচনে ১৭ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের হয়ে দাঁড়িয়ে তিনি হেরে যান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy