Advertisement
E-Paper

ভোটের প্রচারে আসুক চা নিলাম কেন্দ্র, চায় শহর

ক্ষমতায় এলে কে কী করবেন, তার ফিরিস্তি চলছে। চলছে কাদা ছোড়াছুড়ি। কিন্তু পুরভোটের প্রচারে নেই শুধু অস্তিত্ব সঙ্কটে ধুঁকতে থাকা জলপাইগুড়ির চা নিলাম কেন্দ্রকে রক্ষার জন্য লড়াইয়ের আশ্বাস। অথচ চলতি এপ্রিল মাসে নিলাম কেন্দ্রটি ফের খোলার উদ্যোগ নেওয়া হলেও কতজন ক্রেতা-বিক্রেতা এবং কত পরিমাণ চা আসবে সেই সংশয় কাটছে না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০১৫ ০৩:৫৭

ক্ষমতায় এলে কে কী করবেন, তার ফিরিস্তি চলছে। চলছে কাদা ছোড়াছুড়ি। কিন্তু পুরভোটের প্রচারে নেই শুধু অস্তিত্ব সঙ্কটে ধুঁকতে থাকা জলপাইগুড়ির চা নিলাম কেন্দ্রকে রক্ষার জন্য লড়াইয়ের আশ্বাস। অথচ চলতি এপ্রিল মাসে নিলাম কেন্দ্রটি ফের খোলার উদ্যোগ নেওয়া হলেও কতজন ক্রেতা-বিক্রেতা এবং কত পরিমাণ চা আসবে সেই সংশয় কাটছে না।

ভোটের প্রচার শুনে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, প্রতিদিন শহর কিছু না-কিছু হারাচ্ছে। পূর্ত দফতরের একটি গুরুত্বপূর্ণ কার্যালয় চলে গিয়েছে মালদহে। হাইকোর্টের সার্কিট বেঞ্চ অধরা। নিলাম কেন্দ্রের অকাল পতন হলে থাকবে কী থাকবে এই শহরে? কেন রাজনৈতিক দলগুলি গুরুত্বপূর্ণ ওই সংস্থাকে রক্ষার আন্দোলনে সামিল হওয়ার কথা ভোটের প্রচারে তুলে ধরবে না?

শহরের বাসিন্দা তথা আনন্দচন্দ্র কলেজের অর্থনীতি বিভাগের প্রধান সুদীপ চক্রবর্তী জানান, শহর উন্নয়নের লম্বা ফিরিস্তি দিয়ে লাভ নেই। শহরের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির প্রাণবায়ু যে সমস্ত সংস্থা সেগুলি রক্ষা করা না গেলে উন্নয়ন কিছু হবে না। তাঁর কথায়, “জলপাইগুড়ি শহর উন্নয়নের প্রাণ ভোমরা চা নিলাম কেন্দ্র। শুধুমাত্র ওই সংস্থার হাত ধরে শহরের আমূল পরিবর্তন সম্ভব। অথচ পুরসভা নির্বাচনের প্রচারে নিলাম কেন্দ্রকে রক্ষা করার বিষয়ে কোন কথা শুনছি না।”

নিলাম কেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থাকে বাঁচাতে বিক্রয় কর ছাড়ের মতো সুবিধা জরুরি হয়ে পড়েছে। রাজ্য সরকার এবং চা পর্ষদের কাছে এবার ফের আবেদন জানানো হয়েছে। কেন কর ছাড়ের ব্যবস্থা হচ্ছে না বুঝতে পারছেন না তৃণমূল নেতা কল্যাণ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “নিলাম কেন্দ্রকে রক্ষার জন্য জনমত সংগঠিত করার সময় এই পুর নির্বাচন। এই সুযোগ হাত ছাড়া হলে ভাষণ সোনা ছাড়া কাজের কাজ কিছু হবে না।”

শহরে প্রশ্ন উঠেছে, যে নেতা কর্মীরা উন্নয়নের আশ্বাসে কর্মিসভা, পথসভা মাতিয়ে চলেছেন তাঁদের মুখে নিলাম কেন্দ্রের মৌলিক সমস্যা সমাধানের কথা নেই কেন? জলপাইগুড়ি ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, “পুরসভা নির্বাচনের প্রচারে চা নিলাম কেন্দ্রকে রক্ষার জন্য এগিয়ে আসার মতো কোনও কথা খুঁজে পাচ্ছি না। অথচ এই শহরকে পাল্টে দিতে পারে ওই নিলাম কেন্দ্র।” যদিও জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষ দস্তিদার দাবি করেন, “চা নিলাম কেন্দ্র রক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কথা দলের নির্বাচনী প্রচারে থাকছে।”

তিস্তা উদ্যান সংলগ্ন জলপাইগুড়ি চা নিলাম কেন্দ্রটির অস্তিত্ব সঙ্কট আজকের নয়। ২০০৫ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠানটি চালু হওয়ার পর থেকে সমস্যা চলছেই। ২০০৯ সালে নিলাম কেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। অনেক আন্দোলনের পরে ২০১২ সালে ফের চালু হয়। কিন্তু দুর্যোগ কাটেনি। আগামী মরসুমে কী হবে, দুশ্চিন্তা রয়েই গিয়েছে।

তৃণমূল নেতা তথা চা বাগান মালিক কৃষ্ণকুমার কল্যাণী রাখঢাক না করে নিলাম কেন্দ্রের ওই পরিস্থিতির জন্য বিগত বামফ্রন্ট সরকার এবং বর্তমান সরকারের মনোভাবকে দুষেছেন। তাঁর কথায়, “জলপাইগুড়ি সব সময় রাজনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত। যে ক্ষমতায় এসেছে শহরকে নিয়ে ছিনিমিনি খেলেছে। নিলাম কেন্দ্র উদ্বোধনের সময় বামফ্রন্ট সরকার চা উৎপাদক এবং ক্রেতাদের দূরে রেখে রাজনীতিকে বড় করে দেখেছিল। নতুন শিশুকে লালন পালনের জন্য যে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরি সেটা নতুন সরকারও নেয়নি।”

Jalpaiguri wants tea auction centre jalpaiguri poll campaign north bengal election tea board
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy