শুভদীপ দে
হার্নিয়ায় আক্রান্ত ছিল শুভদীপ। সেই সঙ্গে তার শরীরে আরও কিছু রোগ বাসা বেঁধেছিল বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। শুক্রবার ফালাকাটার ওই ছাত্রকে খুন করার অভিযোগ ওঠে। পুলিশ প্রতিবেশী বিকাশ দাসের অভিযোগের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতেই মৃতের বাবা প্রসেনজিৎ দে ও সৎমা অপর্ণা দে-কে গ্রেফতার করে।
পড়শিদের অভিযোগ, নিয়মিত মারধর করা হতো শুভদীপকে। শুক্রবার দুপুরে ফালাকাটার আশুতোষপল্লির বাড়ি থেকে একাদশ শ্রেণির ছাত্র সতেরো বছরের শুভদীপ দে-র দেহ যখন উদ্ধার করা হয়, তখন তার গায়ে কালশিটে দাগ দেখা গিয়েছিল বলে দাবি পড়শিদের। সৎমার মারধরেই তার গায়ে কালশিটে দাগ হয়েছে বলে অভিযোগ পড়শিদের। শনিবার আলিপুরদুয়ার হাসপাতালে ময়নাতদন্ত হয়েছে শুভদীপের। প্রাথমিক রিপোর্ট অনুযায়ী, শুভদীপের শরীরে গুরুতর জখমের কোনও চিহ্ন মেলেনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শুভদীপের বাবা ও সৎমার বিরুদ্ধে মারধর ও অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। আলিপুরদুয়ারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গণেশ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশে আমরা ধৃতদের তিনদিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়েছি।’’ অভিযুক্তদের আইনজীবী শ্রাবণী দে দাস বলেন, “পুলিশ সাতদিনের হেফাজত চেয়েছিল। আদালত তিনদিন মঞ্জুর করেছেন। সত্যাসত্য আদালতেই প্রমাণ হবে।”
ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টের পরে চিকিৎসকদের একাংশের ধারণা, দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার ওপরে ঠিকঠাক যত্ন না পাওয়ায় দুর্বল হয়ে গিয়েছিল শুভদীপের শরীর। হার্নিয়ার যন্ত্রণাও ছিল। পড়শিদের অভিযোগ, শারীরিক অত্যাচারে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েও তার মৃত্যু হতে পারে। তবে সবটাই ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এলে পরিষ্কার হবে বলে দাবি চিকিৎসকদের।
মেধাবী ছাত্র শুভদীপের অপমৃত্যুর পূর্ণাঙ্গ তদন্তের দাবিতে এ দিন সরব হন এলাকার বাসিন্দারা। এ দিন বিকেলে ফালাকাটার আশুতোষপল্লি থেকে মোমবাতি মিছিল করেন মৃতের বন্ধু, প্রতিবেশী, শিক্ষক-শিক্ষিকা-সহ এলাকার বহু বাসিন্দারা। সন্ধেয় আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের পুলিশ মর্গ থেকে শুভদীপের দেহ ফালাকাটা থানায় এসে পৌঁছয়। পুলিশের উপস্থিতিতে মৃতদেহ বন্ধু ও প্রতিবেশীরা নিয়ে আসেন ফালাকাটা হাইস্কুলে। এই স্কুল থেকেই মাধ্যমিকে স্টার নম্বর নিয়ে পাশ করেছিল শুভদীপ। এই স্কুলের একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান শাখার ছাত্র ছিল সে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy