Advertisement
E-Paper

বড়দিনেই মাদ্রাসার বড় দিন

মঙ্গলবার বড়দিনের দিন বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়েই মাদ্রাসার সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ অনুষ্ঠানের সূচনা হল।

জয়ন্ত সেন

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:০৭
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

জমি দান তো করেইছিলেন। এমনকি নিজেদের বাঁশঝাড় থেকে বাঁশ কেটে, কাঁধে করে বালির বস্তা টেনে এনে তাঁরা তৈরি করেছিলেন টালির একটি ঘর, নিজেদের প্রচেষ্টাতেই। স্থানীয় শিক্ষানুরাগী মানুষদের সেই দান ও পরিশ্রমেই এলাকায় শিক্ষার প্রসারে ওই টালির ঘরেই ১৯৬৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর চালু হয়েছিল মাদ্রাসা। মাঝে পেরিয়েছে ৪৯ বছর। সেই টালির ঘর থেকে তৈরি মাদ্রাসা এখন মহীরুহ। তিনতলা ভবন মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে। মঙ্গলবার ২৫ ডিসেম্বর পঞ্চাশ বছরে পা দিল সেই মাদ্রাসা—মালদহের কালিয়াচক ২ ব্লকের অচিনতলা হাই মাদ্রাসা।

মঙ্গলবার বড়দিনের দিন বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়েই মাদ্রাসার সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ অনুষ্ঠানের সূচনা হল। আগামী বছরের ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে সেই অনুষ্ঠান, পর্যায়ক্রমে। কালিয়াচক ২ ব্লকের প্রাণকেন্দ্র মোথাবাড়ি থেকে কালিয়াচকের দিকে যেতে মাত্র তিন কিলোমিটার দূরেই রয়েছে অচিনতলা হাই মাদ্রাসা।

মাদ্রাসা সূত্রেই জানা গিয়েছে, এলাকার বাসিন্দা দানেশ আলি মণ্ডল, বুল মহম্মদ, আনসারুল হক, বর্তমানে মাদ্রাসার সম্পাদক সিরাজউদ্দিন খানদের মতো এলাকার শিক্ষানুরাগীদের প্রচেষ্টায় এলাকায় শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে ১৯৬৯ সালের ২৫ ডিসেম্বর পথ চলা শুরু হয়েছিল এই মাদ্রাসার। দানেশ, বুল, সিরাজউদ্দিনদের মতো মানুষরাই মাদ্রাসার জন্য জমি দান করেছিলেন।

কিন্তু জমি থাকলেই তো হবে না, মাদ্রাসার ক্লাস হবে কোথায়? উপায় বাতলে স্থানীয় বাসিন্দারা নিজেরাই নিজেদের বাঁশঝাড় থেকে বাঁশ কেটে এনে দিয়েছেন, কেউ ভিত তৈরির জন্য কাঁধে করে বালির বস্তা নিয়ে এসেছেন। বাসিন্দাদের কাছ থেকে অর্থ সাহায্য নিয়ে কেনা হয়েছে টালি। বাসিন্দাদের স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি সেই টালির ঘরেই প্রথমে শুরু হয়েছিল মাদ্রাসার ক্লাস।

প্রথমে অবস্থাটা এখনকার মতো ছিল না। প্রায় ১০০ জন ছাত্রছাত্রী নিয়ে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মাদ্রাসায় পঠন-পাঠন শুরু হয়েছিল। ধীরে ধীরে মাদ্রাসার বয়স বেড়েছে। ২০০০ সালে মাদ্রাসা মাধ্যমিকে উন্নীত হয়েছে, ২০০৭ সালে উচ্চমাধ্যমিকে। সেই টালির ঘরও বদলে গিয়েছে তিনতলা পাকা ভবনে। এখন মাদ্রাসার ছাত্রছাত্রী সংখ্যা প্রায় ২৬০০। শিক্ষক রয়েছেন ৩২ জন। মাদ্রাসায় প্রথাগত শিক্ষার পাশাপাশি কম্পিউটার শিক্ষা এবং সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলও গড়ে উঠেছে। শিক্ষকদের দাবি, এই মাদ্রাসার ছাত্রীদের নিয়ে গঠিত ‘মীনামঞ্চ’ বাল্যবিবাহ প্রতিরোধের সচেতনায় মালদহ জেলাতে একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকাও পালন করছে। মাদ্রাসার ফলও নজরকাড়া।

তবে সমস্যা যে একেবারেই নেই, তাও নয়। সমস্যাও রয়েছে। এখনও কিছু শিক্ষক পদ ফাঁকা রয়েছে, ল্যাবরেটরির পরিকাঠামো উন্নতমানের নয়। তবুও এগিয়ে চলেছে এই মাদ্রাসা, জানালেন শিক্ষকরা।

মঙ্গলবার এই মাদ্রাসা ৫০ বছরে পা দিল। সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষের সূচনায় এদিন মাদ্রাসা চত্বরে একটি বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানও হয়েছে। প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘সুবর্ণজয়ন্তী বর্ষ উপলক্ষে আগামী বছরের ২৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নানা অনুষ্ঠান চলবে মাদ্রাসায়।’’

Madrasa Kaliachak
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy